মালয়েশিয়ায় বিধিনিষেধ অমান্য করে ঈদের নামাজ, ৪৮ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

মালয়েশিয়ায় করোনার বিধিনিষেধ অমান্য করে নির্ধারিত স্থানের বাইরে ঈদের নামাজ আদায় করায় ৪৮ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সেদেশের সংবাদমাধ্যম জানায়, জোহর রাজ্যের তামান পেলাঙ্গি এলাকার একটি সুরাউয়ের (নামাজ আদায়ের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে নির্মিত স্থান) বাইরে নামাজের জন্য জমায়েত হয়ে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত মানসম্মত কার্যপ্রণালীবিধি (এসওপি) ভঙ্গ করার অভিযোগে মালয়েশিয়ার পুলিশ ৪৯ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের ৪৮ জনই বাংলাদেশি।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে শত শত বিদেশি সুরাউয়ের বাইরে নামাজ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পেনাং পুলিশের চিফ কমান্ডার মোহাম্মদ শুহাইলি মোহাম্মদ জেইন জানান, হাজতে পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৮ জন বাংলাদেশ থেকে আসা এবং একজন স্থানীয়।

পেনাং বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারি থেকে উত্তরণের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনার আওতায় রয়েছে। এ সময়ে অভিযোগ পাওয়া গেল গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা সুরাউয়ের বাইরে খোলা জায়গায় ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করছিলেন।

শুহাইলি’র ভাষ্য অনুযায়ী, সুরাউতে ১০০ মানুষের প্রবেশাধিকারের কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তারা সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সুরাউতে গিয়েছিলেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, এরপর তারা সুরাউ’র সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে শুরু করেন। সুরাউটি জোহর রাজ্যের অটো সিটির তামান পেলাঙ্গি ফ্ল্যাটসের কাছাকাছি জায়গায় অবস্থিত।

শুহাইলি বলেন, ‘সুরাউর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা তাদেরকে সরে যেতে বলেন এবং আর কেউ যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য গেটে তালা লাগিয়ে দেন।’

তিনি বলেন, ‘যারা নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন, তাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সুরাউ শ্রদ্ধাশীল থাকায় তারা এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ জানাননি।’

শুহাইলি আরও জানান, যদিও তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করেছেন, তারপরেও পুলিশ তাদেরকে খুঁজে বের করে ফৌজদারি দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযুক্ত করবে।

মালয়েশিয়ার ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারাটি বিনা অনুমতিতে চলাফেরা এবং অবহেলার মাধ্যমে সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানোতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা এবং ২৭০ ধারাটি ক্ষতিকর সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানো সংক্রান্ত। এ ছাড়াও, ১৯৮৮ সালের সংক্রামক ব্যাধি প্রতিহত ও নিয়ন্ত্রণ আইন (৩৪২ ধারা) এবং ২০২০ সালের সংক্রমণপ্রবণ এলাকার উদ্যোগ আইনের আওতায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হতে পারে।

তিনি জানান, সুরাউ’র পরিচালকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হবে না, কারণ তারা এসওপি মেনে চলেছেন।

শুহাইলি আরও জানান, সুরাউয়ের নিকটবর্তী এলাকার ২৩টি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে প্রায় আট হাজার মানুষ বসবাস করেন, যাদের প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশি। তারা মূলত বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এলাকাটি তামান নাগাসারি থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে, যেখানে ১৭ জুলাই ১৪ দিনব্যাপী কঠোর যাতায়াত নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //