আরেকটি বাংলাদেশি দলকে ফেরত পাঠাল জার্মানি

আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়া বাংলাদেশি অভিবাসীদের একটি দলকে ঢাকায় ফেরত পাঠিয়েছে জার্মানি। গত মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) তাদের ফেরত পাঠানো হয়। গত আড়াই মাসের মধ্যে এটি এমন দ্বিতীয় ঘটনা। 

তিনটি সূত্র ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

তাদের বহনকারী ফ্লাইটটি বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় অবতরণ করে৷ একটি সূত্র জানিয়েছে, ৩৩ জনের এই দলে জার্মানি ছাড়াও অস্ট্রিয়া থেকে ফেরত পাঠানো চারজন ও রোমানিয়া থেকে পাঠানো তিনজন ছিলেন।

ঢাকার একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবং অভিবাসীদের যথাযথভাবে ঢাকায় পৌঁছে দিতে প্রায় ১০০ জার্মান পুলিশ সদস্য ফ্লাইটটিতে ছিলেন।

এদিকে আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া ৫০ থেকে ৬০ জন বাংলাদেশিকে সম্প্রতি ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করার কথা জানিয়েছেন বার্লিনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। 

ইনফোমাইগ্রেন্টসকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ক্লিয়ারেন্স প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আমরা তাদের ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করেছি। তাদের মধ্যে কতজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এই দলটিকে বাংলাদেশে পৌঁছে দিতে শতাধিক জার্মান নিরাপত্তা কর্মকর্তারও ভিসা ইস্যু করেছিল দূতাবাস। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রত্যেক যাত্রীর সঙ্গে দুইজন বা তিনজন নিরাপত্তাকর্মী উপস্থিত থাকেন।

এর আগে আশ্রয় আবেদন বাতিল হয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের আরেকটি দলকে গত অক্টোবরে ফেরত পাঠিয়েছে বার্লিন। সেখানে মোট ৩২ জন ছিলেন বলে জানান মোশাররফ।

তিনি ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বসবাসের অনুমতি নেই এমন বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠাতে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ও ইইউ এর মধ্যে ২০১৭ সালে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস (এসওপি)’ স্বাক্ষরিত হয়। আমরা সেই চুক্তি অনুসরণ না করলে আমাদের উপর ভিসা কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে ইইউ।

অক্টোবরে ইনফোমাইগ্রেন্টসকে রাষ্ট্রদূত জানান, ২০১৭ সাল থেকে তখন পর্যন্ত ৮১৬ জনের জন্য ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করতে বাংলাদেশের প্রতি জার্মানি অনুরোধ জানিয়েছিল।

তবে তিনি বলেন, এদের মধ্যে অনেকে ইতোমধ্যে জার্মানি ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে জার্মানি এখন আটশ'র বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে এটা বলা ঠিক নয়। বর্তমানের সংখ্যাটি অনেক কম।

ইউরোপীয় কমিশন সম্প্রতি বাংলাদেশ, ইরাক ও গাম্বিয়ার নাগরিকদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের সুপারিশ করেছে, যদি তারা ইউরোপে অবস্থানরত বৈধ বসবাসের অধিকার নেই এমন দেশগুলোর নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সহায়তা না করে।

১৫ জুলাই ইউরোপীয় কাউন্সিলের কাছে পাঠানো এই প্রস্তাবে বাংলাদেশ ছাড়াও ইরাক ও গাম্বিয়াকেও যুক্ত করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈধ কাগজবিহীন অভিবাসীদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে দেশগুলোর সহাযোগিতা আরো জোরদার করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা।

বাংলাদেশ সরকার এরকম নিষেধাজ্ঞা এড়াতে দূতাবাসগুলোর প্রতি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তার নির্দেশনা দিয়েছে। গত মাসে ঢাকার সহায়তায় ১৯ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে গ্রিস। ২০১৬ সালের পর গ্রিস থেকে প্রথমবারের মতো অনিয়মিত বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা এটি। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //