পল্লীকবি জসিম উদ্‌দীনের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আবহমান গ্রাম বাংলার কবি পল্লীকবি জসিম উদ্‌দীনের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৪ মার্চ (রবিবার)। তিনি ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে কবর দেয়া হয়েছে ফরিদপুরে প্রিয় ‘দাদির’ কবরের পাশে।

১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি কবি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। আর ফরিদপুর জেলা শহরে অনুতিদূর কবির নিজ গ্রাম গোবিন্দপুর। ওই গ্রামই কবির বাপ দাদার ভিটেমাটি। 

গোবিন্দপুর হালে অম্বিকাপুর গ্রামের কুমার নদীর তীরে কবির ছেলেবেলা অতিবাহিত করেন। কবি জসীমউদ্দীনের তিন পুরুষ এই ভিটেমাটিতেই জীবন পাড় করেছেন। কবির পিতার নাম মৌলভী আনছার উদ্দিন মোল্লা। মাতার নাম আমেনা খাতুন। দাদা ছমিরউদ্দীন মোল্লা। কবিরা ছিলেন মোট চার ভাই। 

১৯৩৯ সালে তিনি মমতাজ বেগমকে বিয়ে করেন। কবির চার ছেলে- কামাল আনোয়ার, ড. জামাল আনোয়ার, ফিরোজ আনোয়ার ও খুরশীদ আনোয়ার। দুই মেয়ে- হাসনা মওদুদ ও আসমা এলাহী। 

কবির শিক্ষাজীবন শুরু ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিক শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে এসএসসি, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি ও একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেন। 

জসীম উদ্‌দীন বাল্যবয়স থেকেই কাব্য চর্চা শুরু করেন। ১৪ বছর বয়সে নবম শ্রেণিতে থাকাবস্থায় তৎকালীন কল্লোল পত্রিকায় তার একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ রাখালী। এরপর তার ৪৫টি বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

কবি ১৯৭৬ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি, ১৯৭৬ সালে ২১শে পদকে ভূষিত হন। 

তার অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে, নকঁশী কাথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, এক পয়সার বাশিঁ, রাখালি, বালুচর ইত্যাদি। তিনি আবহমান বাংলাকে তিনি তার কবিতায় তুলে এনেছেন। এজন্যই তিনি পল্লীকবি উপাধিতে ভূষিত হন। তার ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ ১৯৪০ সালের মধ্যেই একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়ে বিশ্ববিখ্যাত হয়।  ১৯৬৯ সালে ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ ইউনেস্কোর অনুবাদ প্রকল্পের গ্রন্থ হিসেবে অনূদিত হয়।

১৯৭৬ বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদকে পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কার পেয়েও তা প্রত্যাখ্যান করেন। 

তিনি যৌবনের সেহাতে যখন বহমান ছিলেন তখন কবি লিখেছিলেন- ‘মসজিদ হইতে আজান হাঁকিতেছে বড় সকরুণ সুর, মোর জীবনের রোজ কিয়ামত ভাবিতেছি কত দূর’। মৃত্যুর পর কবি দাদির কবরের পাশে চিরদিনের জন্য ঘুমাতে চেয়েছেন। ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কবির অস্তিম ইচ্ছানুযায়ী গ্রামের বাড়ি গোবিন্দপুর পারিবারিক কবর স্থানে দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয়।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //