হারিয়ে যাওয়া বইপত্র

মানুষের অবহেলা আর নানা দুর্বিপাকে অনেক বিখ্যাত লেখকের সাহিত্যকর্ম হারিয়ে গেছে কিংবা নষ্ট হয়ে গেছে সময়ের স্রোতে। আবার কিছু বই লেখক নিজেই শেষ করে যেতে পারেননি। এমন হারিয়ে যাওয়া কিংবা অসম্পূর্ণ কিছু সাহিত্যকর্মের কথা জানাচ্ছেন- শোয়াইব আহম্মেদ। 

লাভ’স লেবার’স ওয়ন, উইলিয়ম শেক্সপিয়ার

অনেকদিন আগে থেকে ধারণা করা হতে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের দ্য টেইমং অব দ্য শ্রু’র আরেক নামই লাভ’স লেবার’স ওয়ন; কিন্ত ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত নাটকের একটি তালিকার মধ্যে দুটো বইয়ের নামই আলাদাভাবে পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হয়ে যায় দুটোই ছিল শেক্সপিয়ারের সম্পূর্ণ আলাদা-সাহিত্যকর্ম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ দ্বিতীয়টির কোনো নমুনা আবিষ্কার করতে পারেননি।

মোয়ারস, লর্ড বায়রন

বায়রনের একজন প্রকাশক বন্ধু ছিলেন জন মুরে। বায়রন তার আত্মজীবনীর একটি পাণ্ডুলিপি মুরেকে দেন প্রকাশের জন্য। বায়রনের মৃত্যুর পর জন মুরে ১৮২৪ সালের ১৭ মে পাঁচ বন্ধুর সাথে যুক্তি করে এটাকে নষ্ট ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ মুরের ভয় ছিল, বইটিতে বায়রনের জীবনের যেসব কাহিনি উঠে এসেছে তা ক্ষুণ্ণ করবে কবির ভাবমূর্তি। শেষ পর্যন্ত মুর বাড়ির ফায়ার প্রেসের আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে অমূল্য এই পাণ্ডুলিপি। 

দ্য ম্যাজিক হার্প, ওয়লফগাং ভন গ্যেটে

১৭৯৪-৯৬ সাল পর্যন্ত মোজার্টের অপেরা ‘দ্য ম্যাজিক ফুটের’ সিক্যুয়াল হিসেবে এটা লেখা শুরু করেন গ্যেটে। তারপরই লেখা বন্ধ করে দেন। অজানা কোনো কারণে আর লেখা শেষ করেননি ভন গ্যেটে। 

স্যান্ডিটন, জেন অস্টিন

স্যান্ডিটন বইয়ের পাণ্ডুলিপির প্রথম শিরোনাম ছিল ‘দ্য ব্রাদারস’। লেখাটির মাধ্যমে একটি শহর আর কতকগুলো পরিবারের মাধ্যমে সমাজ গঠনের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন অস্টিন। ধারণা করা হয় কাহিনির পারকার ভাইদের নামেই এ নামকরণ। উপন্যাসটি শেষ করার আগেই ১৮১৭ সালে মারা যান অস্টিন। মৃত্যুর পর তার পরিবার বইয়ের নাম পাল্টে রাখেন স্যান্ডিটন। 

দ্য মিস্ট্রি অব এডউইন ড্রুড, চার্লস ডিকেন্সের থ্রিলার

মৃত্যুর কিছুদিন আগে লিখতে শুরু করেন হত্যা, রহস্য, আর ভয়ঙ্কর সব চরিত্রে ভরপুর বইটি। ১৯৭০ সালে মৃত্যুর আগে শেষ করে যেতে পারেননি বইটি। 

দ্য মিস্ট্রিয়াস স্ট্রেঞ্জার, মার্ক টোয়েন

বইটির তিনটি খণ্ড নিয়ে কাজ শুরু করেন মার্ক টোয়েন, একটিও শেষ করেননি তিনি। বলা হয়ে থাকে, তিনটি বইয়েরই কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিল শয়তান। প্রথমটি পরিচিত, ‘দ্য ক্রনিকলস অব ইয়াং স্যাটান’ নামে। আর এতে বর্ণনাকরা হয়েছে শয়তানের অভিযানের কথা। ভারতবর্ষের এক প্রিন্সের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত এক শয়তানের কাহিনি নিয়ে লেখা শুরু করলেও মধ্যপথেই থেমে যায় লেখা, আর এগোয়নি।

আর্নেস্ট হেমিংওয়ের স্যুটকেস

১৯২২ সালে তার প্রথম স্ত্রী হেডলি ইউরোপ ভ্রমণ করছিলেন। হেডলির সঙ্গে একটা স্যুটকেস ছিল, যাতে হেমিংওয়ের তখন পর্যন্ত লেখা বেশিরভাগ সাহিত্যকর্মের পাণ্ডুলিপি ছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্যুটকেসটি হারিয়ে ফেলেন হেডলি। এর মধ্যে একটি উপন্যাস ছিল যাতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন হেমিংওয়ে। তারপর ১৯২৬ সালের আগে খুব কম বই-ই প্রকাশ করেছেন লেখক।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //