এই হতভাগা দৌড়ে বেড়াচ্ছিস যে পড়া হয়েছে?

কুদরাত-এ-খুদা গত শতকের প্রতিভাবান বাঙালি বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি অসংখ্য আবিষ্কার করেছেন। দেশভাগের পূর্বে কলকাতা ইসলামীয়া কলেজ ও প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।

তিনি সে সময়ে এত বেশি প্রভাববিস্তার বিজ্ঞানী, গবেষক এবং শিক্ষক  ছিলেন যে চারদিকে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল।

কিংবদন্তিতুল্য এই বিজ্ঞানীকে নিয়ে লিখেছেন- শোয়াইব আহম্মেদ

পরিবারের সবাই চাইত কুদরাত-এ-খুদা কোরআনের হাফেজ হোক। এ জন্য তাঁকে ছোটবেলায় হাফেজি মাদ্রাসায় ভর্তিও করা হয়েছিল; তাঁর এক চাচাতো ভাই কুদরাত-এ-খুদার জন্য উপহার এনেছিলেন বর্ণবোধ নামে একখানা আদর্শলিপির বই। এক পয়সা মোটে দাম ছিল সেই বইটির। একদিন সকালে সেই চাচাতো ভাই কুদরাত-এ-খুদাকে কাছে ডাকলেন।

বইটি মেলে ধরে কিছু পড়া দেখিয়ে দিলেন। বললেন, পড়াগুলো যেন ঠিক ঠিকভাবে করা হয়; কিন্তু দুপুর না হতেই দেখলেন কুদরাত-এ-খুদা পড়া বাদ দিয়ে খেলা করে বেড়াচ্ছেন। চাচাতো ভাই হেঁকে বললেন- ‘এই হতভাগা দৌড়ে বেড়াচ্ছিস যে পড়া হয়েছে?’ জবাবে কুদরাত-এ-খুদা বললেন, ‘হয়েছে’।

ভাই ছোট্ট খুদা’র কথা বিশ্বাস করলেন না। যাচাই করার জন্য তাঁকে বইটা আনতে বললেন; কিন্তু পড়া ধরার পর প্রমাণ হলো কুদরাত-এ-খুদা মিথ্যে বলেননি। ঠিক-ঠিকই পড়াগুলো করে ফেলেছেন! চাচাতো ভাই তাঁর মেধার পরিচয় পেয়ে অবাক হলেন। তিনি চাচা-চাচিকে অনুরোধ করলেন খুদাকে যেন স্কুলে ভর্তি করানো হয়।

সেই অনুরোধে কুদরাত-এ-খুদাকে স্কুলে ভর্তি করানো হলো। ড. মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা জন্মেছিলেন অবিভক্ত বাংলার বীরভূম জেলার মাড়গ্রামে। ১৯০০ সালের ১ ডিসেম্বর। বাবা খোন্দকার আবদুল মুকিত। তিনিও উচ্চশিক্ষিত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেছিলেন আবদুল মুকিত; কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের গোলামি করতে রাজি ছিলেন না।

তাই চাকরি করেননি কখনো। আবদুল মুকিত খুব ধর্মভীরু ছিলেন। তিনি কলকাতার তালতলার এক পীরের মুরিদ ছিলেন। কুদরাত-এ-খুদা যেদিন জন্মালেন, সেদিন তিনি ওই পীরের দরগায় ছিলেন। সেই পীর সাহেবই ছেলের নাম রাখলেন মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //