বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় চুরি করেছিলেন

বাংলার বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ধাঁচটাও ছিল অস্কার ওয়াইল্ডের মতো। তবে বঙ্কিম চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পরও বেপরোয়া। স্বীকারই করেননি। বঙ্কিমের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করেন প্রখ্যাত সাহিত্য সমালোচক তারকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান বঙ্কিম ‘দুর্গেশনন্দিনী’তে ওয়াল্টার স্কটের ‘আইভ্যানহো’র বহু অনুচ্ছেদ সরাসরি টুকেছেন।

দুর্গেশনন্দিনীর আয়েষা চরিত্রটি নাকি হুবহু ‘রেবেকা’র নকল; কিন্তু বঙ্কিম তাঁর সুহৃদ-ত্রয়ী চন্দ্রনাথ বসু-শ্রীশচন্দ্র মজুমদার-কালীনাথ দত্তকে বলেছিলেন, ‘আইভ্যানহো’ জীবনে কোনোদিন উল্টেও দেখেননি এবং আমলা বলেই মামলা করে দিয়েছিলেন তারকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। পরে তারকানাথ জেল খাটবেন না মাফ চাইবেন এরকম ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় পড়েছিলেন।

তবে বঙ্কিমবন্ধু কালীনাথ দত্ত পরে স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি দুই বই-ই পড়ে বলেছেন বঙ্কিম লাইনের পর লাইন চুরি করেছেন। বঙ্কিমের জীবদ্দশাতেই দুর্গেশনন্দিনীর ১৩টি সংস্করণ শেষ হয়। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরও অভিযোগ করেছিলেন, বঙ্কিমের ‘বিষবৃক্ষ’ নাকি তাঁর ‘স্বপ্নপ্রয়াণ’ উপন্যাসের অক্ষম অনুকরণ। দ্বিজেন্দ্রনাথ তাঁর ‘স্বপ্নপ্রয়াণে’র পাণ্ডুলিপি ‘বঙ্গদর্শনে’ ছাপানোর জন্য পাঠিয়েছিলেন।

তাঁর ভাষায়, ‘তিনি সবগুলি ছাপান নাই; কিন্তু তাঁহার বিষবৃক্ষের মধ্যে ঠিক সেইরকম ছবির অবতারণা করিয়া বসিলেন।... বাড়ির মধ্যে গৃহস্থ বধূ গাড়ি হাঁকাইলেন, এ চিত্র একেবারে সুশোভন হইল না; কিন্তু এইরকম চিত্র সমাবেশের আইডিয়াটা যে তিনি আমার রচনা হইতে পাইয়াছিলেন, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ নাই।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //