আজীবন শিল্পী সংগ্রামী কামরুল হাসান

বাংলাদেশের আধুনিক চারুশিল্পের প্রধান এক পুরোধা শিল্পী কামরুল হাসান। গত বছর তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। সমকালীন শিল্পের ইতিহাস পাঠে এ সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় পতাকার রূপকার, মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য দপ্তরের প্রধান শিল্পী, দেশ-দশের সংকটে সহমর্মি, দেশের প্রগতি ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সামনের কাতারের যোদ্ধা বরেণ্য গুণী এই মানুষটির জন্মশতবার্ষিকী জাতীয়ভাবে পালনের কর্মসূচি কেন নেওয়া হলো না, তা বোধগম্য নয়!

তবে চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ শিল্পী ও শিল্পানুরাগীদের সমাবেশে গত ২ ডিসেম্বর ২০২১, কামরুল হাসানের জন্মশতবর্ষের দিনটিকে উদযাপন করেছে। কলাকেন্দ্র আলোচনাসহ তাঁর চিত্রকর্মের বিশেষ একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে।

জীবদ্দশায় অসাধারণ কর্মঠ সৃজনশীল এই মানুষটির অংকনঋদ্ধ দুটি হাত আর বুদ্ধিবৃত্তিক মস্তিষ্ক সদা সচল ছিল। জীবনভর অসংখ্য ছবি এঁকেছেন- এত ছবি তাঁর সমসাময়িক তো বটেই, এখনো পর্যন্ত এদেশে কোনো শিল্পী এঁকেছেন কিনা সন্দেহ! স্বকীয়তায় অনন্য, ঐতিহ্যে অনুরাগী, আধুনিকতায় নিবেদিত, অংকনে শক্তিধর, বর্ণ প্রয়োগে স্বতঃস্ফূর্ত, গঠনে সাবলীল, বিন্যাসে অনন্য, প্রকাশরীতিতে স্বচ্ছন্দ- সব মিলিয়ে সৃজনের নানা ধাপে টইটম্বুর ছিল তাঁর চিত্রভাণ্ডার!

এ জন্য কামরুল হাসান আমাদের চারুশিল্পের প্রাণ-ভোমরা। ঐতিহ্যপ্রবণ ও শেকড়সন্ধানী মানুষ বলে নিজেকে তিনি পরিচয় দিতেন পটুয়া বলে। ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর তাঁর জন্ম কলকাতার শহরতলির তিলজলা গোরস্থানের এক ঘরে। তাঁর পিতার নাম মোহাম্মদ হাশেম এবং মায়ের নাম আলিয়া খাতুন। পৈতৃকনিবাস বর্ধমান জেলার কালনা থানার নরেঙ্গা গ্রাম। ১৯২১ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত প্রায় সাতাশ বছর তাঁর জীবনের প্রথম পর্যায়ের বেশিরভাগ সময় কেটেছে কলকাতায়।

১৯৩৮ সালের জুলাই মাসে তিনি কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। ৬ বছরের কোর্স ৯ বছরে পাস করতে হয়েছে। পরিবারের আর্থিক সংগতির অভাবে নিজের পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহের জন্য নানারকম কাজকর্ম করতে হয়েছিল তাঁকে। ১৯৪৭ সালে তিনি আর্ট স্কুল থেকে পাস করে বের হন। ভারতবিভক্তির পর তাঁর ঢাকায় আগমন ১৯৪৮ সালে।

ঢাকায় আসার পর একদিকে জীবন সংগ্রাম আর অন্যদিকে শিল্প আন্দোলনের ধারাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কামরুল হাসান অবদান রাখেন। ঢাকায় সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি এখানে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হন। সেকালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত গ্রন্থের অনেকগুলোর প্রচ্ছদ এঁকেছেন তিনি। পত্রিকার জন্য কার্টুন এঁকেছেন। অঙ্গসজ্জার কাজও করেছেন।

১৯৬০ সালে শিল্পী তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থায় যোগ দেন। প্রতিষ্ঠা করেন নকশাকেন্দ্র। বিসিকে কাজ করার ফলে কামরুল হাসান লোকশিল্প ও হস্তশিল্পের জগতে সরাসরি প্রবেশের সুযোগ পান। যুবক বয়সে ব্রতচারী আন্দোলনে দীর্ঘদিন সংযুক্ত থাকায় দেশের লোক-ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর যে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জন্মে, তাকে আরো সযত্নে লালন করার সুযোগ এলো নকশাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। এতে একদিকে বিসিকের নকশাকেন্দ্র সমৃদ্ধ হয় বাংলার লোকশিল্পের নানা বৈশিষ্ট্য দ্বারা, অন্যদিকে কামরুল হাসানের চিত্রপটে লোকশিল্পের নকশা নানাভাবে ফুটে ওঠে তাঁর কাজকে আরো মৃত্তিকাসংলগ্ন করে। আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটে।

আজীবন তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি সচেতন একজন মানুষ। দ্বি-জাতিতত্ত্বের মাধ্যমে পাকিস্তানের জন্ম হওয়ার শুরু থেকেই এ অঞ্চলে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চায় অনেক প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছিল। এমনকি সরকারি সমর্থনে ঢাকায় আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পরও এ নিয়ে প্রচুর বাধাবিপত্তি পোহাতে হয়েছে জয়নুল ও তাঁর সতীর্থ শিল্পীদের।

‘মাছধরা’ এঁকেছিলেন ১৯৫০ সালে।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্রে করে এ দেশের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনে নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিলেও এটি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রভরা রাজনীতি কবলিত হয়ে। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে কামরুল হাসানকে প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে জাতিগত নিপীড়ন ও পাকিস্তানি সামরিকচক্র, শোষকদের নির্মম অত্যাচার। একুশে ফেব্রুয়ারি স্মরণে তাঁর আঁকা অক্ষরবৃক্ষের পোস্টার একটি অসাধারণ কাজ। বাঙালির স্বকীয়তা উপলব্ধির ও স্বাজাত্যবোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলোয় কামরুল হাসান বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজের নেতৃস্থানীয় সদস্য হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭০ সালে গোর্কির আঘাতে ছিন্নভিন্ন দক্ষিণাঞ্চলে অসহায় মানুষের পাশে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের পঁচিশে মার্চের সন্ধ্যায় তাঁর আঁকা ইয়াহিয়া খানের পোস্টার শহীদ মিনারে টানিয়ে দেয়া হলে সামরিক জান্তার প্রতি মানুষের মনে প্রবল ঘৃণার উদ্রেক হয়। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে কামরুল হাসান হাতিরপুল এলাকায় প্রতিরোধ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণ ও নির্মমতায় আক্রান্ত হয়ে তাঁকে অনেকের সঙ্গে ঢাকা ত্যাগ করতে হয়।

১৯৭১ সালের বাংলাদেশের প্রথম সরকারের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের অধীনে তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ডিজাইন ও আর্ট ডিভিশন। শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী, প্রাণেশ মণ্ডল, নিতুন কুণ্ডু, বীরেন সোম, নাসির বিশ্বাস প্রমুখ শিল্পীদের নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণাদায়ী কয়েকটি পোস্টার আঁকলেন। তাঁর আঁকা ইয়াহিয়ার মুখ ঘৃণার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। শিল্পী বীরেন সোম বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শিল্পীসমাজ গ্রন্থে লিখেছেন- কামরুল হাসান তাঁর ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ শীর্ষক পোস্টারটি তিন চারবার পরিবর্তন করে চূড়ান্ত করেছিলেন। 

স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে কামরুল হাসান ঢাকায় ফিরে বিসিক নকশাকেন্দ্রে যোগ দেন এবং এ কেন্দ্রটিকে বাংলার লোকশিল্পের অন্যতম ধারক ও বাহক হিসেবে গড়ে তুলতে ব্রতী হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যকাণ্ডের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পালাবদল ঘটলে তাঁর সে প্রয়াস স্বভাবতই বাধাগ্রস্ত হয়। ১৯৮৮ সালে কামরুল হাসান বিসিক থেকে অবসর নেন।

কামরুল হাসান আমৃত্যু সংগ্রামী ছিলেন। মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল প্রেম। দেশের সব ক্রান্তিকালে, সংকটে তিনি বিবেকের মতো ছুটে আসতেন। অসহনীয়ের বিরুদ্ধে, অসহায়ের পক্ষ নিয়ে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতেন। ছবি এঁকে, পোস্টার এঁকে, তিনি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আবার প্রত্যক্ষ সংগ্রামে সশরীরে অংশ নিতেও তিনি কখনো পিছপা হতেন না। আশির দশকে এরশাদের সামরিক শাসনবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে সংস্কৃতিকর্মীদের সামনের কাতারে তিনি সক্রিয় ছিলেন।

বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, বন্যা-খরা এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় মাঝে-মধ্যেই আমাদের ভোগায়, সাধারণ মানুষের জন্য দুঃখ-কষ্ট বয়ে আনে।

১৯৮১ সালের শেষার্ধে বন্যায় দেশের মধ্যাঞ্চলের বেশ ক’টি জেলা ডুবে গিয়েছিল। বিপন্ন মানুষদের সহায়তায় অনেকেই এগিয়ে আসছিলেন। আমরা তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আমরা ঈষিকা শিল্পী সংগঠন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলাম চারুকলার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিকবোধ বির্নিমাণ ও মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার প্রয়াসে। তখন নিতান্তই শক্তি আমাদের সংগঠন ও উদ্যম।

সেই উদ্যমকে পুঁজি করে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম ছবি এঁকে, ছবি বেঁচে বন্যাত্রাণে সহযোগিতা করব। অগ্রজরা কেউ কেউ পরামর্শ দিলেন স্বনামধন্য ক’জন শিল্পীর কাছ থেকে তোমরা ছবি চেয়ে আনো। আমরা তখনকার নামজাদা কজন শিল্পীর চিত্রকর্ম জোগাড় করতে লেগে গেলাম। কামরুল হাসান আমাদের দুটি জলরং চিত্রকর্ম দিয়ে দিলেন। তাঁর এই উদারতায় আমরা মুগ্ধ, বিস্মিত।

কাইয়ুম চৌধুরী, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, হাশেম খান, রফিকুন নবী, আবুল বারক আলভী প্রমুখ শিক্ষক এবং শেখ আফজাল, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য,ওয়াকিলুর রহমান, মাসুদুল হাসানসহ বেশ ক’জন অগ্রজ ও সমবয়সী শিল্পী ও শিক্ষার্থীদের চিত্রকর্ম নিয়ে আমরা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে একটি বিশেষ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করি। শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও প্রাবন্ধিক, গবেষক মফিদুল হক আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছিলেন।

শিল্পাচার্য কামরুল হাসান বিশেষ এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছিলেন, যা আমাদের জন্য এক পরম প্রাপ্তি। প্রথম দিনেই তাঁর দুটি চিত্রকর্মসহ বেশ কিছু কাজ বিক্রি হয়ে যাওয়ায় আমাদের আয়োজনে সাফল্য নিশ্চিত হয়। শিল্পকর্ম বিক্রিলব্ধ পুরো টাকা আমরা তুলে দিই সাহিত্যিক-সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ ও সংস্কৃতিজন রামেন্দু মজুমদারের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কাছে। ওই অর্থ বন্যার্তদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যয় করা হয়।

কামরুলের উল্লেখযোগ্য কতিপয় চিত্রকর্ম : ১৯৫১ সালে আঁকা ‘উঁকি’ তাঁর তরুণ শিল্পী জীবনের এক নামী কাজ। জানালার ফাঁক দিয়ে গ্রামীণ এক তরুণীর নিবিষ্ট দৃষ্টিতে কিছু দেখার ভঙ্গির অসামান্য রূপায়ণ করেছেন শিল্পী। ‘তিন কন্যা’ কামরুল হাসানের গীতল আরেকটি চিত্রকর্ম। এতে আবহমান বাংলার নারীর তিনটি অস্তিত্ব যথাক্রমে কন্যা-জায়া-জননীর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন শিল্পী। ‘নাইয়র’ তাঁর আরেকটি উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম।

পরাধীন কিশোরীর গল্প বলছে ‘উকি’।

গরুর গাড়িতে সন্তান সন্ততি নিয়ে বধূর বাপের বাড়িতে যাওয়ার এ দৃশ্যে বাঙালির গ্রামীণ পারিবারিক সংস্কৃতির চিরন্তন চিত্র ফুটে উঠেছে। তাঁর খেরোখাতায় আঁকা ও লেখা দিনলিপি অনবদ্য সৃজন। কালি-তুলিতে বিপুল পরিমাণ অংকন করেছেন কামরুল। ভীমরুল নামে সমাজ সচেতনধর্মী ব্যঙ্গচিত্র এঁকেছেন। তাঁর অনেক চিত্রকর্ম ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে আছে। 

শিল্পী সমাজ ও সংস্কৃতিসেবীদের যে কোনো ভালো উদ্যোগ- আয়োজনের অগ্রভাগে থাকতেন তিনি। ১৯৮২ মালের ২৪ র্মাচ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারী করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নেন। তাঁর এই অবৈধ ক্ষমতাদখল অধিকাংশ রাজনীতিক বুদ্ধিজীবী সংস্কৃতিসেবীসহ ছাত্র জনতা সমর্থন করেনি একেবারে গোড়া থেকেই। আমরা শিল্প-শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম চারুকলা প্রাঙ্গণে একটি সভা করে করণীয় নির্ধারণ করতে। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সে সভায় যোগ দিতে কামরুল হাসান চলে এসেছিলেন।

সরকারি গোয়েন্দা ও পুলিশের কঠোর নজরদারি ও অনুপ্রবেশকারী সামরিক জান্তা সমর্থকদের বাধার ফলে আমাদের সে উদ্যোগ ফলপ্রসূ হতে পারেনি। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহকারী সংস্কৃতিসেবীদের সামনের কাতারে ছিলেন কামরুল হাসান। ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় কবিতা উৎসবের মঞ্চে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত স্বৈরাচারের এক প্রতীকী অবয়ব এঁকে নিচে লিখেছিলেন- দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে। দুঃখ এই- গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হবার আগেই তিনি চলে গেলেন চিরতরে।

কলকাতায় গোরস্থানের পাশে জন্ম নেওয়া শিশুটি দিনে দিনে বেড়ে ওঠে বাংলার গণমানুষের চিত্রকর পরিণত হয়েছেন। বাংলার সরলা বধূর সৌন্দর্যের কমনীয়তা, বঙ্গললনার মায়াবী কাব্যিক অবয়ব সৃজনের মুখ্যশিল্পী কামরুল হাসান।

তিনি শুয়ে আছেন প্রিয় চারুকলা চত্বরের পাশেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর প্রিয় মাস্টার মশাই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের কাছে। মৃত্যুর আগে তাঁর অনেক চিত্রকর্ম জাতীয় জাদুঘরের কাছে সমর্পণ করে গেছেন। তিনি নেই- তবে তিনি রেখে গেছেন অসামান্য সব শিল্পাকৃতি, সৃজন, তাঁর সংগ্রামী ও অনুকরণীয় জীবনাদর্শ। 

লেখাটি দেশকাল পত্রিকার (৫ম বর্ষ-১ম সংখ্যা ) জানুয়ারি-মার্চ ২০২২ থেকে সংগৃহীত

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //