রক্তে লেখা কুরআনের শিল্পী: আব্বাস আল-বাগদাদি

গেল শতকে শিল্পের ইতিহাসে এক তাজ্জব ঘটনা ঘটিয়েছিলেন শিল্পী আব্বাস আল-বাগদাদি। ইরাকের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেনের রক্ত দিয়ে লিখেছিলেন পবিত্র কুরআন শরিফ। সাদ্দামের ইচ্ছের প্রতিফলন ছিল সেটি। এই শিল্পীকে চলতি বছরের মে মাসে চিরতরে হারিয়েছে আরব দুনিয়া। মাসটি ক্যালিগ্রাফি শিল্পীদের জন্য অনেক দুঃখের। বিশ্বের ক্যালিগ্রাফিপ্রেমিক, গবেষক ও ছাত্ররা হারিয়েছেন তাদের প্রাণাধিকপ্রিয় কালিগ্রাফার আল-বাগদাদিকে। 

ইবন মুকলা, ইবন আল বাওয়াব, হাশিম আল বাগদাদী, মুহাম্মদ সাঈদ আল সাকারের পরে যে নামটি আরব লিপিকলার ধ্রুপদীধারার ইতিহাসে উজ্জ্বল নক্ষত্রে রূপ নিয়েছে তিনি এই আব্বাস শাকির জুদি আল-বাগদাদি।

তার মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা একটি স্টোরি করে। যার শিরোনাম দেয় ‘আব্বাস আল-বাগদাদি... ইরাকি অক্ষরের স্থপতি ও আরবি ক্যালিগ্রাফির শেষ সুলতান।’

ইরাকি ক্যালিগ্রাফার আব্বাস আধুনিক যুগে আরবি হরফের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও দক্ষ ক্যালিগ্রাফারদের একজন। তাকে সমসাময়িক আরবি ক্যালিগ্রাফির একজন মাস্টার ও আধুনিক ইরাকি স্কুলের পথপ্রদর্শক হিসেবে বর্ণনা করা হয়। আরবি ক্যালিগ্রাফির বিকাশ ও শিক্ষায় তার অনেক প্রভাব ছিল। 

বেড়ে ওঠা ও শৈল্পিক দক্ষতা: আব্বাস শাকির জুদি আল-বাগদাদি ১৯৪৯ সালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই ক্যালিগ্রাফি ও অঙ্কন শিল্পে পারদর্শী ছিলেন। আর এটা তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আয়ত্ত করেছিলেন।

আল-বাগদাদি একটি সূক্ষ্ণ শৈল্পিক ও জ্যামিতিক অনুভ‚তি উপভোগ করেছিলেন, যা অক্ষরগুলোর সামঞ্জস্য ও তাদের সোনালি অনুপাতের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছিল। তিনি তার ক্যালিগ্রাফিক ক্ষমতাগুলোকে নিজের হাতে বিকাশ করতে সফল হন। অসামান্য প্রতিভার কারণে তাকে ‘অক্ষরের স্থপতি’ খেতাব দেওয়া হয়। 

তিনি তার বৈষয়িক জীবন পেশাদার আঁকিয়ে হিসেবে শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে আঁকাআঁকি ছেড়ে দিয়ে তিনি আরবি ক্যালিগ্রাফিতে নিজেকে নিবেদন করেন। কারণ এটির প্রতি তার অনুরাগ ছিল। তিনি তার সৃজনশীল ধারণার সঙ্গে অলঙ্করণ, নকশা ও মুদ্রণশিল্পেও দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।

যদিও তিনি তার সময়ে কোনো শৈল্পিক রেফারেন্স থেকে আরবি ক্যালিগ্রাফিতে ডিগ্রি অর্জন করেননি, তথাপি স্বীয় প্রতিভা ও অধ্যবসায়ের জন্য তিনি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আরবি ক্যালিগ্রাফি রেফারেন্সে পরিণত হন।

আল-বাগদাদির প্রচুর পেইন্টিং তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া আরবি ক্যালিগ্রাফির বিভিন্ন উপায় শেখানোর নীতিগুলো উপস্থাপন করে ব্যাপক লেখালেখি ও বক্তৃতা দিতে থাকেন। পরে তার লেখাগুলো নিয়ে তিনটি আকরগ্রন্থে রূপ দেন। তার অর্জিত জ্ঞান মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে এ কাজটি করেন।

‘মিজান আল-খাত আল-আরাবি’ (আরবি ক্যালিগ্রাফির পরিমাপ), যা তিনি ১৯৮৬ সালে শেষ করেছিলেন, এটি তার প্রথম প্রযোজনা, এর আগে তিনি ‘আল-নাসখ আল-মুসহাফি’ নামক পুস্তিকাটি শারীরবৃত্তি ও বিস্তারিতভাবে নসখ ক্যালিগ্রাফিতে বিশেষায়িত করেছিলেন। আর তৃতীয়টি হলো ‘তুহফাত আল মিজান’ পুস্তিকা। এটি তিনি আরবি ক্যালিগ্রাফিগুলোর একটি গ্রুপের জন্য নতুন উপায়ে তৈরি করেছিলেন-যা ১৯৯০ সালের আগের পুস্তিকাগুলোর মতো নয়।

প্রয়াত ক্যালিগ্রাফার আরব বিশ্বে ও বিশ্বব্যাপী ইরাকি ক্যালিগ্রাফি স্কুলের মর্যাদা; অবস্থান পুনরুদ্ধার করেছিলেন। আরবি ক্যালিগ্রাফি শিল্পে তাদের দক্ষতা ও এর স্বীকৃতিস্বরূপ ইরাকের ভিতরে-বাইরে থেকে আসা প্রচুর সংখ্যক ক্যালিগ্রাফারকে ইজাজাহ বা সনদ প্রদান করেছিলেন।

গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়: তার কর্মজীবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও উল্লেখযোগ্য সাফল্যের সাক্ষী ছিল-যা তিনি গত কয়েক দশকে অর্জন করেছিলেন। বিশেষ করে ইরাকের ভিতরে ও বাইরে আরবি ক্যালিগ্রাফি শিল্পে এটা হয়েছিল।

শিল্পী জীবনের প্রথমদিনগুলোতে কৃতিত্বের জন্য তিনি ১৯৬৯ সালে সেরা তরুণ চিত্রশিল্পী হিসেবে পুরস্কার জিতেছিলেন। এর কয়েক বছর পর তিনি ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে বাগদাদে মুদ্রণ ও প্রকাশনার জন্য আরব হাউস ‘দার আল-হুরিয়াতে’ ক্যালিগ্রাফি করার কাজ পেয়েছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ইরাকের প্রধান ক্যালিগ্রাফার হয়েছিলেন।

আল-বাগদাদি ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত বাগদাদে ইরাকি ক্যালিগ্রাফার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন। তিনি এই অ্যাসোসিয়েশনের জন্য আরবি ক্যালিগ্রাফির একজন মাস্টার ছিলেন ও বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বইয়ের অনেক প্রচ্ছদ করেন।

১৯৯৮ সালে তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদ, ইরাকি পাসপোর্ট, ইরাকি মুদ্রা, ইরাকি রাষ্ট্রের প্রতীক ও ইরাকি রাষ্ট্রের কুরআন ডিজাইন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

আল-বাগদাদি ইরাকের অভ্যন্তরে ও আরব বিশ্বের কিছু দেশে মসজিদের দেওয়ালে আরবি ক্যালিগ্রাফির বিপুল সংখ্যক পেইন্টিং করেছিলেন। এছাড়া তিনি অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে আরবি ক্যালিগ্রাফির উৎস ও নিয়মগুলোও শিখিয়েছিলেন।

সাদ্দামের রক্তে লিখিত কুরআন: ১৯৯৮ সালে ইরাকের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন তার ছেলে উদে হত্যাচেষ্টা থেকে রক্ষা পেলে তাকে বাগদাদের ইবনে সিনা হাসপাতালে দেখতে যান। এ সময় তিনি আব্বাস আল-বাগদাদিকে হাসপাতালে তলব করেন। তাকে সে সময় অনুরোধ করেন রাষ্ট্রপতির রক্ত দিয়ে একটি মুসহাফে সাদ্দাম বা কুরআন লিখতে।

আল-বাগদাদি প্রয়াত রাষ্ট্রপতির রক্ত দিয়ে কুরআন লিখতে দুই বছর সময় নিয়েছিলেন। তিনি লেখার সুবিধার্থে বিশেষ রাসায়নিকের সঙ্গে রক্ত মিশ্রিত করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে অক্ষুণœ থাকে সে কারণেও এই কাজটি করেন। কুরআন লিখিত হওয়ার পরে এটি প্রদর্শিত হয়েছিল বাগদাদের উম্মু আল-মারিক জাদুঘরে।

একবার আব্বাস আল-বাগদাদি তার একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন তাকে জরুরিভাবে ডেকেছিলেন। তার নিজের রক্তকে কালি হিসেবে ব্যবহার করে তার জন্য সম্পূর্ণ কুরআন লিখতে বলেছিলেন।

কাজের অসুবিধার কারণে আল-বাগদাদি প্রায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন, তাই তার পক্ষে কাজ করা এবং অক্ষর লেখা সহজ করার জন্য তাকে একটি রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে রক্ত মেশাতে হয়েছিল।

লেখালেখিতে সব ধরনের কালি ব্যবহার করা স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি কি কখনো মানুষের রক্ত থেকে লেখা কুরআনের কথা শুনেছেন?

প্রকৃতপক্ষে ইরাকের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে একজন নার্স ও আব্বাস আল-বাগদাদির সহায়তায় দুই বছরের ব্যবধানে নিজের রক্তে এই কুরআন লিখেছিলেন।

কথিত আছে কুরআনটি লিখতে সাদ্দামের ২৭ লিটার রক্ত লেগেছিল। এই অনুলিপিটি গত তিন বছর ধরে ইরাকের বাগদাদের একটি বিশাল মসজিদের বেসমেন্টে ৩টি দরজার পিছনে তালাবদ্ধ। এটি সাধারণ মানুষের দৃষ্টির বাইরে রাখা হয়েছে।

এক সময় ইরাকি সুন্নি ফাউন্ডেশনের প্রধান শেখ আহমাদ আল-সামারাই বাগদাদের পশ্চিমে একটি মসজিদের সুউচ্চ মিনারের দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘রক্তে লেখা এই কুরআনে যা আছে তা অমূল্য। এর মূল্য লাখ লাখ ডলার।’

আল-সামারাই বলেন, ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আক্রমণের পর বিশৃঙ্খলার সময় নথির রক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার বাড়িতে পাতাগুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী নুর আল-মালিকির মুখপাত্র আলী আল-মুসাভি বলেছিলেন, ‘আমাদের এটিকে সাদ্দামের বর্বরতার দলিল হিসেবে রাখা উচিত, কারণ তার এটি করা উচিত হয়নি।’

তিনি আরও যুক্ত করেন, ‘এটি তার সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। এটি কখনোই জাদুঘরে রাখা উচিত নয়, কারণ কোনো ইরাকি এটি দেখতে চায় না। সম্ভবত ভবিষ্যতে এটি হিটলার ও স্ট্যালিন সরকারের স্মৃতিচিহ্নের মতো একটি ব্যক্তিগত জাদুঘরে পাঠানো যেতে পারে।’

তার নিজের রক্ত ৬০০ পৃষ্ঠা কুরআন লিখতে ব্যবহৃত হয়েছিল। নির্দিষ্ট অনুমোদন না থাকলে কেউ এটি দেখতে পারে না। সাদ্দামের সে সময় বক্তব্য ছিল তিনি আল্লাহর প্রতি তার ভক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছেন। 

আল-বাগদাদি অভিযোগ করেছিলেন, তার বেতন তখন প্রায় প্রতিদিন ২৪ ডলার ছিল। তিনি কুরআন সম্পূর্ণ করার বিনিময়ে ৩,০০০ ডলারের কম পেয়েছিলেন। এটি কুরআন লেখা পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়োজিত কমিটির প্রতিটি সদস্যের সমান। 

আল-বাগদাদি ২০০৪ সালে আল-জাজিরা নেটে একটি বিবৃতিতে দেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা বলতেন আমি দেশের জন্য একটি সম্পদ। তারা আমাকে সব ধরনের পাণ্ডুলিপি, মন্ত্রণালয় ও আদালতের সমস্ত সরকারি নথি ও অন্যান্য নথিপত্র লিখতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে অলঙ্করণও করতে বলেন। কিন্তু আমি ন্যায্য পুরস্কার পাইনি কখনো।’

স্বদেশ ত্যাগ : ২০০৩ সালের পর আল-বাগদাদির জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে। তাই তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তিন সন্তানের সঙ্গে জর্ডানে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তবে তার প্রথম স্ত্রী ও তাদের চার সন্তান সেই সময়ে ইরাকে ছিলেন।

জর্ডানে বসতি স্থাপনের পর আল-বাগদাদি রাজধানী আম্মানে আরবি ক্যালিগ্রাফি অধ্যয়ন করেন ও জর্ডানের রাজপরিবারের জন্য কিছু আরবি ক্যালিগ্রাফির কাজ ডিজাইন করেন। ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি এ কাজ চালিয়ে যান।

২০০৬ সালে আল-বাগদাদি মক্কা আল-মুকাররামায় পবিত্র কিসওয়ার ওপর লিখিত বইয়ের শিরোনাম লিখেছিলেন। তিনি ২০০৭ সালে আমিরাতের শারজাহতে আরবি ক্যালিগ্রাফির বিশেষ প্রদর্শনীতেও অংশ নিয়েছিলেন। একই বছর আবুধাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য মুদ্রা ডিজাইন করেছিলেন। 

২০০৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার সবচেয়ে বিশিষ্ট কর্মকান্ডের মধ্যে ছিল আরবি ক্যালিগ্রাফি শেখানো ও একটি কর্মশালা। এটা তিনি ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট ‘হেরন্ডন ভার্জিনিয়া’-এর উদ্যোগে করেছিলেন। এছাড়া তিনি ভার্জিনিয়ার রিগমন্ড জাদুঘর ও জর্জিয়ার ইসলামিক জাদুঘরে একটি কর্মশালার আয়োজন করেন।

তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে কেনেডি সেন্টারে আরবি ও ইসলামিক পাণ্ডুলিপির জাদুঘর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করেন ও আরব ও ইসলামিক শিল্পের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন।

তার মৃত্যু : দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগার পর আরবি ক্যালিগ্রাফির এই শেষ সুলতান ২ মে তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান। পরে তাকে ভার্জিনিয়ায় অ্যাডাম ইসলামিক সেন্টারে সমাহিত করা হয়।

ক্যালিগ্রাফার কাসেম হায়দার বলেছেন, আল-বাগদাদি তার জীবনের শেষ বছরগুলোতে ক্যান্সারে ভুগেছিলেন। একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় মারা যান। সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়েছিল যেখানে তিনি তার জীবনের শেষ বছরগুলোতে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তিনি ভার্জিনিয়ায় একটি মসজিদের জন্য ক্যালিগ্রাফি করেছিলেন।

ছাত্রদের মূল্যায়ন: আল-বাগদাদি এমন পেইন্টিং তৈরি করেছিলেন যা তার আগে কোনো ক্যালিগ্রাফার তৈরি করেননি, না আরবদের কাছ থেকে আর না তুর্কিদের কাছ থেকে।

ক্যালিগ্রাফার মোর্তাদা আল-জাসানি বিশ্বাস করেন, একটি পদ্ধতি ও একটি বিদ্যালয়ের প্রয়াত মালিক তার স্তম্ভগুলো স্থাপন করতে আর এর নিয়মগুলো সেট করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। তিনি তার বেশিরভাগ সময় অক্ষরগুলো পরিমার্জন, ছাঁটাই, অঙ্কন ও খোদাই করতে ব্যয় করেছিলেন। অক্ষরের ওস্তাদ হয়ে উঠেছেন।

আল-জাসানি বলেছেন, আল-বাগদাদি কোনো শিক্ষানবিশকে উপযোগী মনে হলে তথ্য বা বিশদ বিবরণ দিতে বাদ দেননি । 

আল-জাসানি বলেন, প্রয়াতের সমস্ত কাজ গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেরণাদায়ক। কারণ তিনি প্রতিটি অক্ষর লেখার সময় আধ্যাত্মিকতার মধ্যে থাকেন। অক্ষরগুলোকে তাদের জায়গায় রাখার চেষ্টা করেন। তার পেইন্টিংগুলোকে মূল্যবান শিল্পকর্ম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারণ সেগুলো করতে তিনি অনেক প্রচেষ্টা, চিন্তাভাবনা ও গবেষণার জন্য ব্যয় করেছেন। 

ক্যালিগ্রাফার হাসান আল-বাকোলি প্রয়াতের সবচেয়ে বিখ্যাত ছাত্র। তার ফেসবুক পেজে আব্বাসকে আরব ও ইসলামিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে দক্ষ ক্যালিগ্রাফার এবং আরবি ক্যালিগ্রাফির ইতিহাস বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি তার চলে যাওয়াকে বিরাট ক্ষতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ক্যালিগ্রাফি ও নান্দনিক পাণ্ডুলিপির অধ্যাপক আদম মুহাম্মদ হানাশ বিশ্বাস করেন আব্বাস আল-বাগদাদি একটি অনন্য ও আকর্ষণীয় নান্দনিকতায় নাসখ আর সুলুসলিপির ফর্মগুলোর জন্য শৈল্পিকতায় আলাদা ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //