এ হৃদয়ে যেমন বৃষ্টি ঝরে

অপূর্ব সুন্দরী বর্ষা। ধরণীর বুকে ঢেলে দিয়ে যাচ্ছে অমৃত জল। ঝরঝর ঝমঝম করে ঝরিয়ে জল তার প্রেমতলে ডুবিয়ে রেখেছে এই দেহ-মন! প্রাণ উজাড় করে বহুবারই দিয়েছে প্রেম-ভালোবাসা অনিঃশেষ। বর্ষা যে আমার প্রাণের গান, দুর্নিবার টান হৃদয়ের। বর্ষা আমার হৃদয়ের শীতল জল; যেমন করে নবজীবন লাভ করে পল্লবপুঞ্জ। মরা নদী ভরা হয়, খরাকে জলধারায় ডুবিয়ে দিয়ে প্রকৃতিকে করে তোলে প্রাণবন্ত, সতেজ। তারই সজীবতায় বাতাসে ভাসে জুঁই, কামিনী, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা-আরও কত ফুলের সুবাস।

‘বর্ষা সোনালি রেণুর মতো ঝরিছে কান্না আহা, মিশরে’ যেমন করে জীবনানন্দের হৃদয় খুঁচিয়ে করেছে ক্ষত-বিক্ষত-‘কেমন বৃষ্টি ঝরে-মধুর বৃষ্টি ঝরে-ঘাসে যে বৃষ্টি ঝরে-রোদে যে বৃষ্টি ঝরে আজ।’

বর্ষায় মজেনি কে? কবি কালিদাস থেকে বিদ্যাপতি, মধ্যযুগের চণ্ডদাস থেকে সাম্প্রতিককালের লেখক পর্যন্ত প্রায় সবাই। বর্ষাকে নানা সময়ে, নানাভাবে, নানা আঙ্গিক ও অনুষঙ্গে যেমন তুলে এনেছেন রবীন্দ্রনাথ, তেমনি মাইকেল মধুসূদন, কাজী নজরুল, জীবনানন্দ দাশ, জসীম উদ্দীন কিংবা শামসুর রাহমান, আল মাহমুদের কবিতায় বর্ষা ধরা দিয়েছে ভিন্ন ব্যঞ্জনায়, সুরের মূর্ছনায়। প্রত্যেক কবিই বর্ষার রূপে উদাস হয়েছেন, ব্যাকুল হয়েছেন, আনন্দিত হয়েছেন। কারণ বর্ষা প্রমথ চৌধুরীর ভাষায়-‘আমাদের এই চোখ-পোড়ানো আলোর দেশে বর্ষার আকাশ আমাদের চোখে কী যে অপূর্ব স্নিগ্ধ প্রলেপ মাখিয়ে দেয় তা বাঙালি মাত্রেই জানে। আজকের আকাশ দেখে মনে হয়, ছায়ার রঙের কোনো পাখির পালক দিয়ে বর্ষা তাকে আগাগোড়া মুড়িয়ে দিয়েছে, তাই তার স্পর্শ আমাদের চোখের কাছে এত নরম, এত মোলায়েম।’


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //