যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে: স্বীকার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর

নাগরনো-কারাবাখের দখলকে কেন্দ্র করে আজারবাইজানের সাথে যুদ্ধে আর্মেনিয়ার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনইয়ান।

এছাড়া সেনাবাহিনীর অনেকে হতাহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার (১৪ অক্টোবর) টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। 

তবে পাশিনইয়ান দাবি করেছেন, আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী এখনো ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।

এদিকে চলমান এই যুদ্ধ বন্ধ করতে তুরস্ক ও রাশিয়ার নেতারা দুই দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে গত চার দশক ধরে এই দুই দেশ দ্বন্দ্বে লিপ্ত। এ অঞ্চল আজারবাইজানের বলেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণ করে জাতিগত আর্মেনিয়ানরা।

বর্তমানে ওই অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যে সহিংসতা চলছে তার শুরু ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে। গত কয়েক দশকের মধ্যে ওই অঞ্চলকে ঘিরে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত এটি। দুই পক্ষেরই শত শত মানুষ এরই মধ্যে মারা গেছে। গত সপ্তাহে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতি চুক্তি করলেও তা খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

৮০’র দশকের শেষে ও ৯০’এর দশকের শুরুতে এই অঞ্চলের দখলকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে দুই দেশ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও তারা কখনোই স্থায়ীভাবে শান্তি চুক্তি করতে পারেনি।

ভাষণে পাশিনিয়ান বলেন, আমি আমাদের সকল ভুক্তভোগী, শহীদ, তাদের পরিবার, অভিভাবক, বিশেষ করে শহীদদের মায়েদের উদ্দেশ্যে নতজানু হয়ে সম্মান জানাই। তাদের এই ক্ষতিকে আমি আমার ও আমার পরিবারের ব্যক্তিগত ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করছি। আমাদের সবার জানা প্রয়োজন যে আমরা একটা কঠিন পরিস্থিতি পার করছি।

তবে তিনি বলেন, জনশক্তি ও উপকরণের ক্ষয়ক্ষতি হলেও আর্মেনিয়ার সেনারা এখনো নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে এবং প্রতিপক্ষের জনশক্তি ও উপকরণের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের জয়ী হতেই হবে, আমাদের বেঁচে থাকতেই হবে। আমাদের নিজেদের ইতিহাস তৈরি করতে হবে। আর আমরা এরই মধ্যে ইতিহাস তৈরি করছি। তৈরি করছি আমাদের বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের গল্প, আমাদের মহাকাব্য।

এদিকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ অভিযোগ তুলেছেন, আর্মেনিয়া তাদের গ্যাস ও তেলের পাইপ লাইনের ওপর হামলা করেছে।

তুরস্কের প্রচার মাধ্যম হেবারতুর্ককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আর্মেনিয়া আমাদের পাইপলাইনে আক্রমণ করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে। তারা যদি সেখানকার পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আমি বলতে পারি যে এর পরিণতি গুরুতর হবে।

অপরদিকে এই দুইদেশের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বুধবার নিজেদের মধ্যে ফোনে আলোচনা করেছেন। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সহিংসতা বন্ধ করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত যৌথ উদ্যোগ নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নাগরনো-কারাবাখ দ্বন্দ্বের সমাধান করার ব্যাপারে আলোচনা করেছেন তারা। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //