চীন-তাইওয়ান পুনরেকত্রীকরণ হতেই হবে : শি জিনপিং

চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকার মধ্যেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, মূলভূমির সাথে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। এই পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবেই অর্জিত হওয়া উচিত।

তবে তিনি একইসাথে হুঁশিয়ার করে দেন যে, বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরোধিতার ক্ষেত্রে চীনের ‘গৌরবময় ঐতিহ্য’ রয়েছে।

১৯১১ সালে যে বিপ্লবে চীনের শেষ রাজপরিবারের উচ্ছেদ ঘটেছিল, তার বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার (৯ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

তার এ মন্তব্যের জবাবে তাইওয়ান বলেছে, দেশের ভবিষ্যৎ তার জনগণের হাতেই থাকবে।

তাইওয়ান নিজেকে একটি স্বাধীন দেশ বলে মনে করে, কিন্তু চীন তাদের দেখে একটি বিদ্রোহী প্রদেশ হিসেবে। তাইওয়ানকে চীনের মূলভূমির সাথে আবার যুক্ত করতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং। চীনে কমিউনিস্টরা ১৯৪৯ সালে ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান মূলভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এমন এক সময় জিনপিং এ কথা বললেন, যার আগের কিছুদিন ধরে রেকর্ড সংখ্যায় চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা এলাকার মধ্যে ঢুকেছে।

কিছু কিছু বিশ্লেষক বলেছেন, চীনা যুদ্ধবিমানের এই উড্ডয়নগুলোকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের প্রতি এক সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা যেতে পারে।

আজ রবিবার (১০ অক্টোবর) তাইওয়ান তাদের জাতীয় দিবস পালন করছে এবং তার পটভূমিতেই চীনা যুদ্ধবিমানের এই কর্মকাণ্ডকে দেখা হচ্ছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা এখন গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে রয়েছে।

এদিকে জিনপিং বলেন, তাইওয়ানের সাথে চীনের পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবে হওয়াটাই সার্বিকভাবে চীনের স্বার্থের অনুকুল হবে। হংকংয়ের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছে, সেভাবেই তাইওয়ানের ক্ষেত্রেও ‘এক দেশ দুই পদ্ধতি’ ভিত্তিতে এই একত্রীকরণ হোক- এমনটাই তিনি চান।

তিনি বলেন, আমাদের মাতৃভূমির পুনরেকত্রীকরণের ঐতিহাসিক কাজ সম্পন্ন করতেই হবে এবং তা সম্পন্ন হবেই।

তাইওয়ানে স্বাধীনতা আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নতাবাদ বলে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, এটি পুনরেত্রীকরণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা এবং পুনঃশক্তিসঞ্চারের পথে লুকিয়ে থাকা একটি মহাবিপদ।

চীনা প্রেসিডেন্টের মতে, শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণ হলেই তাইওয়ানের জনগণের সব ধরনের চাওয়া-পাওয়া পূরণ হবে। জাতীয় নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীনের জনগনের যে দৃঢ় সংকল্প, তীব্র ইচ্ছা ও সামর্থ্য রয়েছে তাকে খাটো করে দেখা উচিত নয়। মাতৃভূমির পুনরেত্রীকরণের যে ঐতিহাসিক প্রচেষ্টা তা অবশ্যই পূরণ হবে এবং এটি হতেই হবে।

শি জিনপিংয়ের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে বলা হয়, এই ভূখণ্ডের ভবিষ্যত এখানকার জনগণ নির্ধারণ করবে।  চীনের ‘এক দেশ দুই নীতি’ মডেল প্রত্যাখান করে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, এটি পরিষ্কার যে এখানকার জনগণ এই মডেল গ্রহণ করছে না।

এদিকে তাইওয়ানের মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল আলাদা এক বিবৃতিতে চীনের প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যকে ‘অনুপ্রবেশকারী উত্তেজনামূলক পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে চীনকে ‘হয়রানি ও ধ্বংসাত্মক’ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। -বিবিসি ও ডয়চে ভেলে 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //