সন্ধ্যার পর কিশোররা বাইরে থাকবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সন্ধ্যার পর কোনো কিশোর বাড়ির বাইরে থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর কিশোররা বাড়ির বাইরে থাকবে না। তারা থাকবে পড়ার টেবিলে না হয় বাড়িতে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যথেষ্ট সজাগ ও সতর্ক রয়েছে। অপরাধী যেই হোক, তার বয়স যাই হোক, তাদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা আছে।

আজ শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) মিরপুরে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘মাদক, সন্ত্রাস, শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, ইন্টারনেটের অপব্যবহার প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অভিভাবকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, সন্ধ্যার পর যেন কিশোররা বাড়ির বাইরে না থাকে। আপনারা লক্ষ্য রাখুন, সবাই সচেতন থাকুন, আপনার ছেলে কি করছে, কাদের সঙ্গে মিশছে। অপরাধ করে ফেললে কেউ পার পাবে না।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের উত্থান দেখেছি। একটি মহল ঘাপটি মেরে বসে থাকে, দেশকে অকার্যকর করার জন্য। তারা একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের বিপদের সম্মুখীন করেছে। সেই জায়গা থেকে আজ আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় বলি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতায় আমরা এর সমাধান পেয়েছি। কিন্তু শুধুই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী না। আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মূলমন্ত্র ছিল জনগণ।

তিনি বলেন, সম্প্রতি দু'একটি ঘটনা ঘটিয়ে জঙ্গিরা তাদের অস্তিত্বের জানান দিতে চাচ্ছে। কিন্তু সেটা আর এই দেশে সম্ভব নয়, পুলিশ বাহিনী সতর্ক আছে। ১০ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশের মধ্যে অনেক পার্থক্য। এরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত।

ইভটিজি বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইভটিজিং নিয়ে কাজ করছে এই সরকার। আমরা ইভটিজিং অনেকটাই কমাতে পেরেছি, তবে আরও কমাতে হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, অভিভাবকরা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির এ বিষয় আরও কাজ করা উচি।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘শিশুদের মানুষ হওয়ার জন্য ‘আমরা নিজেরাই কিছু বলছি না। আমরা শুধু বলছি, জিপিএ-৫ পাও। কাজেই শিশুরাও তাই ধারণা করে, যে জিপিএ-৫ পেলে জীবনে সব অর্জন হয়ে যাবে।’

অনুষ্ঠানে নতুন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সন্তানরা আজকাল অভিভাবক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষকদের কাজের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল খুঁজে পান না। অভিভাবকরা এখন রাত জেগে ইন্টারনেটে পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্ন খোঁজেন। সেই প্রশ্ন দিয়ে পরদিন তার সন্তান পরীক্ষা দেবেন। সেই পরীক্ষায় সন্তান জিপিএ-৫ পাবে। শিক্ষার্থীরা যখন দেখে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি টাকা খেয়ে একজন অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে। তাহলে তারা কী নৈতিকতা শিখবে। সন্তান দেখছে, তার বাবার বেতনের সঙ্গে সম্পদের পার্থক্য। তার বাবা যে বেতন পায়, তাতে এত সম্পদ হওয়ার কথা না। কিন্তু তার বেতনের তুলনায় সম্পদ বেশি। তাহলে এই সন্তান তার বাবার কাছ থেকে কী শিখবে? এসব কারণেই অভিভাবক অনৈতিক হলে সন্তানের কাছে নৈতিকতা আশা করতে পারি না।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //