ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দিতে বললেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ নেতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা নানান অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেছেন। 

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের শনিবার অনুষ্ঠিত যৌথসভায় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উপস্থিত নেতাদের সমালোচনার একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দিতে বলেন শেখ হাসিনা। সে সময় ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে বিরক্তিও প্রকাশ করেন তিনি। 

তবে দু-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা নাও আসতে পারে। গণভবনের ওই সভায় উপস্থিত থাকা একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে এমন কথা বলেছেন। এমন কথা বাস্তবে প্রতিফলিত না-ও হতে পারে। তবে এটি স্পষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কর্মকাণ্ডে বেশ ক্ষুব্ধ।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে নানা অভিযোগ তোলেন উপস্থিত নেতারা। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- বিতর্কিতদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া, দুপুরের আগে ঘুম থেকে না ওঠা, অনৈতিক আর্থিক লেনদেন ইত্যাদি।

জানা গেছে, ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেও দেখা দেননি তিনি। উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তখন দুজনকে গণভবন থেকে চলে যেতে বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সামনে পেয়ে সবার সামনেই ‘বকাঝকা’ করেন। তিনি বলেন, ‘চলে যাও এখান থেকে।’ পরে ছাত্রলীগের দুই নেতাই বেরিয়ে যান।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, শেখ হাসিনা বৈঠক শেষে ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে ১০ মিনিট কথা বলেন।

গত বছর ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার পর ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। সেদিন রাতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদের নাম ঘোষণা করেন। একই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগরীর দুটি ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।

তারপর দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও প্রায় ১০ মাস পর চলতি বছরের ১৩ মে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। দুই বছর মেয়াদি নতুন এই কমিটি ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে অসন্তোষ জানান পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতারা। পরে বিক্ষোভও করেন তারা। একই সময়ে আনন্দ মিছিল করেন নতুন নেতা ও তাদের সমর্থকরা। এ নিয়ে তখন ক্যাম্পাসে উত্তেজনা, এমনকি সংঘাতও সৃষ্টি হয়।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //