রাখাইনে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার সুচির

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) তার দেশের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে বুধবার তিনি বলেন, জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার করা অভিযোগ ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর’।

এই আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে চালানো এক সেনা অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয় এবং সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করেই সুচি বলেন, রাখাইনে সেনা অভিযানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ হয়ত উড়িয়ে দেয়া যায় না, তবে তার পেছনে গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল- এমন ধরে নেয়াটাও মিয়ানমারের জটিল বাস্তবতায় ‘ঠিক হবে না’।      

তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি উপলব্ধি করা সহজ নয় এবং ২০১৭ সালের আগস্টের ঘটনাবলী শুরু হয়েছিল যখন স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পুলিশ ফাঁড়ির ওপর আক্রমণ চালায়। মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনী হয়তো মাত্রাতিরিক্ত রকমের শক্তি প্রয়োগ করে থাকতে পারে। যদি মিয়ানমারের সৈন্যরা যুদ্ধাপরাধ করে থাকে তাহলে তাদের বিচার করা হবে।

তিনি আরো বলেন, তার সরকার রাখাইনের সব পক্ষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর। মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের বাস্তুচ্যুত মানুষদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক কোনো হস্তক্ষেপ হলে তা মিয়ানমারে শান্তি ও বাস্তুচুতদের ফেরার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে বলেও সতর্ক করেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর।

সুচি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রধান বাসভূমি রাখাইন প্রদেশে গোলযোগের ইতিহাস কয়েক শতাব্দীর এবং এ সংঘাতকে আরো গভীর করতে পারে এমন কিছু না করতে আইসিজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র গাম্বিয়ার করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সেদেশের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের কারণে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া সুচি, এক সময় ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে নন্দিত ব্যক্তিত্ব। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার ভূমিকার কারণে সেই তিনিই বিশ্বের বহু দেশের নিন্দা ও ধিক্কারের পাত্র হন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সুচিকে দেয়া সম্মাননা প্রত্যাহার করে নেয়। গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে সুচির হাজিরাকে তাই এক নাটকীয় ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। -বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //