অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল খুঁজছে সরকার, বললেন জাফরুল্লাহ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারি মোকাবেলায় সরকারের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, সরকার একটা অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে। করোনা সমস্যাটা কীভাবে সমাধান করবে, তা তাদের চিন্তার মধ্যে নাই।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী এমন মন্তব্য করেন। 

তার ধারণা, করোনার মূল প্রবাহ (পিক টাইম) তো আসবে এ মাসে বা তার পরের মাসে। কারণ এরই মধ্যে এটা গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে। সেজন্য একটা সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দরকার বলে মনে করেন তিনি। 

জাফরুল্লাহ বলেন, সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য জনগণকে দাবি ওঠানো ছাড়া, আওয়াজ ওঠানো ছাড়া, মান্নাদেরকে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া বাংলাদেশের গরিবের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তো নয়ই, কোনো ক্ষেত্রে কিছুই হবে না।

গত ২৫ মার্চ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটে তার করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে। সদ্য করোনা থেকে সেড়ে ওঠেন তিনি। সুস্থ হয়ে ওঠার পর ‘ধন্যবাদ’ জানাতে বৃহস্পতিবার এ অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ৭৯ বয়সী জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কেবিন থেকে হুইল চেয়ারে করে এসে তিনি মঞ্চে ওঠেন।

এসময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সম্ভবত আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে ভাগ্যবান করোনা রোগী। সবাইকে জানাই আমার এবং গণস্বাস্থ্য পরিবারের অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা আমার দ্রুত রোগ মুক্তিতে সহায়ক হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দেশ বিদেশের সবাইকে ধন্যবাদ জানানো শেষে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, “আপনারা সবাই জানেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যয় কেমন। মানুষ ফতুর হয়ে যায়। আমি চেষ্টা করেছি আমার চিকিৎসায় কতো টাকা খরচ হয়েছে কিছুটা হিসাব করতে। পুরোপুরি হিসাবটা এখনো করতে পারিনি সময় স্বল্পতার কারণে।”

সভায় ডা. জাফরুল্লাহর নিউমোনিয়ার বিভিন্ন জটিলতার কথা উল্লেখ করে তার চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে থাকা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক মামুন মোস্তাফী বলেন, “আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমি আমার বড় ভাইয়ের চিকিৎসা করার সুযোগ পেয়েছি। উনার করোনা ভালো হয়ে গেছে নানা মেডিকেশন দেয়ার পর। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটা হলো, উনার বুকের প্রায় ৮০ শতাংশ নিউমোনিয়ায় এফেক্টেড হয়ে গেছে, সেটার ফলে যতো কমপ্লিকেশন।

তিনি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, গ্রামের একটা মানুষ, ইন্ডাস্ট্রির একটা শ্রমিক যে ওষুধটা কিনতে পারবে না, যে পরীক্ষাটা করাতে পারবে না, উনি সেটা করবেন না।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এ পর্যন্ত যতোটুকু সাফল্য পেয়েছে, তার পেছনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নিবেদিতপ্রাণ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

এ আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের ভাইসপ্রিন্সিপাল অধ্যাপক মুহিব উল্লাহ্ খোন্দকার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য রাখেন। 

এছাড়া বিনায়ক সেন, অধ্যাপিকা দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সৈয়দা রিজাওয়ানা হাসান, জুনায়েদ সাকী, ভিপি নূর প্রমূখ অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন। 

এ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সাদেক খান, এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //