কক্সবাজারের এসপির প্রত্যাহার চায় রাওয়া

পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেনের প্রত্যাহার দাবি করেছে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর খন্দকার নুরুল আফসার।

সোমবার (১০ আগস্ট) উত্তরায় নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির চেয়ারম্যান মেজর (অব) খন্দকার নুরুল আফসার। পাশাপাশি ঘটনার দিন সংশ্লিষ্ট অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের অস্ত্র কেড়ে নেয়ার দাবি জানান তিনি।

রাওয়ার চেয়ারম্যান মেজর (অব) খন্দকার নুরুল আফসার বলেন, এ ঘটনার সবকিছুর প্রমাণ আছে। তাই এটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। তিনি কক্সবাজারের এসপিকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

খন্দকার নুরুল আফসার বলেন, সিনহার ঘটনায় যারা কাস্টডিতে ছিলেন তাদের জামিন হয়েছে। আমরা অত্যন্ত খুশি, আলহামদুলিল্লাহ। সিনহা হত্যায় যে পুলিশ সদস্যরা জড়িত ছিলো তাদের অস্ত্রগুলো যেন জব্দ করা হয়। হয়তো তদন্তের খাতিরে এটা করতেই হবে। যাদের ওপর তদন্তভার অর্পণ করা হয়েছে তারা অত্যন্ত দক্ষ। আমরা আশা করব তারা ট্রান্সপারেন্সি (স্বচ্ছতা) রক্ষা করবেন। কোনো পক্ষাবলম্বন করবেন না।

তিনি বলেন, সিনহা হত্যার বিচার যদি দ্রুত নিষ্পত্তি হয় তাহলে হয়তো সিনহা বা সিনহার মতো ভুক্তভোগীর আত্মা শান্তি পাবে।

রাওয়া চেয়ারম্যান বলেন, ১৪০টা যে মার্ডার করেছে এই ওসি প্রদীপ। আজ দেখেন আমরা সিনহা হত্যার ব্যাপারে সোচ্চার হতে পেরেছি। কিন্তু ওই যে দেখেন ওই সেই লোকগুলোর পরিবার তো মুখ খুলতে পারছে না। তাদের সাথে কোনো সংস্থা নেই, অবসরপ্রাপ্ত কল্যাণ সংস্থা নেই। মিডিয়াই পাশে দাঁড়িয়েছে, লিখেছে। আমরা চাই একটা একটা করে সব ঘটনার বিচার করা হোক। এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং যে প্রদীপ করেছে সেগুলোর বিচার হোক।

তিনি বলেন, এটা তো বলার অপেক্ষায় রাখে না, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের কারণে যদি বাংলাদেশ ডিস্টার্ব হয়ে যায়! পুলিশ বাহিনী যাতে পুনর্গঠিত করে, পুলিশকে নিয়ন্ত্রণে যে সিস্টেম দেয়া আছে ডিসির আওতায় সেটা যেন থাকে এবং ডিসির ভিজিট করার কথা, দিকনির্দেশনা বিধিগুলো থাকার কথা সেটা যেন পালন করে। যদি সুপারভিশন ঠিক থাকে তাহলে তখন একটা পুলিশও উদ্ধত হতে পারে না। একটা রঙ কনফিডেন্স গ্রো করেছে, কারণ তার কোনো বিচার হয়নি।

গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনার বিচার চেয়ে গত বুধবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

এর আগে গত ২ আগস্ট বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সবাইকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। আর ওসি প্রদীপকে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

এরপর গত বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ সাত সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে বাদীপক্ষ তাঁদের আটক ও পরে রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলালকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন। আর বাকি চারজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //