অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদারে কূটনীতিকদের রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতি অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, কূটনৈতিক মিশনগুলোর দায়িত্ব আজকের বিশ্বে পরিবর্তিত হয়েছে। এখন রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতি সামনে উঠে এসেছে। আমাদের এমনভাবে কূটনীতি অবলম্বন করতে হবে যাতে আমরা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করতে পারি এবং বিশ্বের সকলের সঙ্গে একত্র হয়ে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারি।

একইসঙ্গে তিনি বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম বাংলায় ভাষণদানের ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে ফরেন সার্ভিস একাডেমি ভবন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা এন্ড দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস : বাংলাদেশ এট দ্য ওয়াল্ড স্টেজ’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু, দ্য পিপলস হিরো’ এই দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এই বৈঠকে যোগ দেন অন্যদিকে এখানে সুগন্ধা চত্বরে ফরেন সার্ভিস একাডেমি থেকে কূটনৈতিক কোরের প্রধানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ যোগ দেন।

বিশ্বে সকলেই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সবার কাছ থেকে সহায়তা আশা করি। তেমনিভাবে কোনও দেশের যদি আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আমরা তা দিতে প্রস্তুত।

কভিড-১৯ মহামারি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, বিশ্ব করোনাভাইরাস মহামারি থেকে মুক্তি পাবে এবং অর্থনীতির চাকা আবার ঘুরতে শুরু করবে এবং এভাবে সবাই তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে এবং এজন্যই গোটা বিশ্বকে একত্রে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন মূল বক্তব্য পাঠ করেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার নবনির্মিত ভবন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম বাংলায় ভাষণ এবং সুগন্ধায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম কার্যালয়ের দুটি অডিও-ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশন প্রদর্শিত হয়। এতে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম দিকের চিত্র তুলে ধরা হয়।

বঙ্গবন্ধু হলেন প্রথম বাঙালি যিনি ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএতে প্রথম বাংলায় ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বর্তমান বিশ্বকে একটি ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং বলেন, উন্নয়নের জন্য সকলের সহযোগিতা সমানভাবে দরকার।

সরকার প্রধান ভাষণে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যার প্রসঙ্গ টেনে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অসহযোগিতারও ইঙ্গিত দেন।

তিনি বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আমাদের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন প্রতিনিয়ত মোকাবেলা করতে হয় তেমনি মাঝে মাঝে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগও আসে।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট যে ঘাতকেরা জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল, তার দোসর যারা, তারা এদেশে কোনো স্থিতিশীল সরকার থাকুক তা কখনোই চায়নি, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, এই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা যখন চালানো হয় তখন আমরা দেখেছি মানুষকে খুন করা বা পুড়িয়ে হত্যার মত ঘটনা।

আওয়ামী লীগ সরকার সকল ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে একাধিক বার দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব পাওয়ার এবং দেশকে বর্তমান পর্যায়ে তুলে আনতে পারার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা এটা পেরেছি একটাই কারণে যেহেতু জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস আমরা অর্জন করতে পেরেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওপর এদেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে বলেই বার বার আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করায় আমরা সরকার গঠন করে তাঁদের সেবা করতে পেরেছি। আজকে উন্নয়নগুলোও যেমন দৃশ্যমান হচ্ছে এবং এর সুফলও ভোগ করছে দেশের জনগণ।





সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //