নিরস্ত্রীকরণে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার দৃঢ় অঙ্গীকার

জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক পদক্ষেপসমূহ আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।

জাতিসংঘ সদরদফতরে চলমান ৭৫তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রথম কমিটির (নিরস্ত্রীকরণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক) সাধারণ বিতর্কে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে গতকাল বুধবার (১৪ অক্টেবর) এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

রাবাব ফাতিমা পারমাণবিক প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদাত্ত আহবানকে পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বিদ্যুৎ ও চিকিৎসা খাতে পারমাণবিক শক্তির নিরাপদ ব্যবহার করছে বাংলাদেশ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদাহরণ টেনে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের সুবিধাকেই কাজে লাগিয়েছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সর্বোচ্চ মান মেনে চলার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

পারমাণবিকসহ পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের প্রতি বাংলাদেশের সূদৃঢ় প্রতিশ্রুতি ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এই নীতি-আদর্শ উৎসাহিত হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ থেকে। যে ভাষণে জাতির পিতা ‘বিশ্বে উত্তেজনা হ্রাস করা, অস্ত্র প্রতিযোগিতা সীমিত করা ও পৃথিবীর প্রত্যেকটি স্থানে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতি জোরদার করার’ -বিষয়ে সকলকে সমবেত হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি, পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তি, রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ক সমঝোতা, জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক সমঝোতা, রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংস্থা, ব্যাপকভিত্তিক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি, অস্ত্র-বাণিজ্য চুক্তিসহ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সকল প্রধান নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক চুক্তি ও পদক্ষেপের সাথে যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশ। 

আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এসব চুক্তি ও পদক্ষেপ রক্ষার ও অনুমোদনের জন্য সকল দেশের প্রতি আহবান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

রাষ্ট্রীয় ও অ-রাষ্ট্রীয় পক্ষের দ্বারা হিংসাত্মক কাজে তথ্য-প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের বিষয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করে তিনি বলেন, এর ফলে উন্নত এই ডিজিটাল পৃথিবীর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিপন্ন হচ্ছে।

তিনি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহবান জানান।

যোগাযোগ ও গবেষণার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু সাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, মহাকাশে এখন বাংলাদেশ আরো বেশি অংশীদারিত্ব নিয়ে প্রবেশ করেছে। তিনি মহাকাশকে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, টেকসই, উন্মুক্ত, প্রবেশযোগ্য ও অস্ত্রমুক্ত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক পদক্ষেপসমূহ আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করবে।

কভিড-১৯ জনিত কারণে সামাজিক দূরত্ব মেনে সদস্য দেশসমূহের সর্বনিম্ন উপস্থিতির মাধ্যমে স্বল্প-পরিসরে এবারের সাধারণ পরিষদের কমিটিসমূহের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। -বাসস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //