৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোই দুর্নীতির বীজ বপন করেছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির বীজ বপন করে গেছে পঁচাত্তর পরবর্তী অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলো।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা লুটপাটের সুযোগ করে দিয়ে এমন একটি শ্রেণি তৈরি করে যাতে তাদের ওপর নির্ভর করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে।

আজ রবিবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) রজতজয়ন্তীর উদ্বোধনের সময় একথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতির বীজ বপন করে গেছে পঁচাত্তর পরবর্তী অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলো। প্রথমে জিয়াউর রহমান, এরপরে এরশাদ, এরপর খালেদা জিয়া। তারা দুর্নীতিকে শুধু প্রশ্রয় দেননি, নিজেরাই দুর্নীতি করে গেছেন ও দুর্নীতিকে লালন-পালন করেছেন।

তিনি বলেন, যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে, মার্শাল ল’ জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা একটি এলিট শ্রেণি তৈরি করেছিল। দুর্নীতির দরজা খুলে দিয়েছিল ...লুটপাটের সুযোগ অবাধে করে দিয়ে এমন একটি শ্রেণি তারা তৈরি করে দিয়ে যায়, যাতে তাদের ওপর নির্ভর করে তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে। আমাদের অনেকে তাদের সাথে হাতও মিলিয়েছিল ও তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। 

তিনি আরো বলেন, একটা সময় আমাদের দেশে ছিল কী? যতই দুর্নীতি, অনিয়ম হোক, সেগুলো ধামাচাপা দেয়া হতো। আর সমস্যাগুলো ওই যে কথায় বলে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা। আমাদের সরকার কিন্তু তা করছে না। কোথাও কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হলে পরে আমরা কিন্তু এটা চিন্তা করি না যে এটার সঙ্গে আবার দল জড়িত কি না। সরকারের বদনাম হবে কি না- আমরা কিন্তু সেই চিন্তা কখনো করি না। আমি চিন্তা করি, সেখানে অন্যায় হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা নিতে গিয়ে হয় এমন অনেক সময় দোষটা আমাদের ওপর চলে আসে।

২১ বছর দেশের মানুষ অন্ধকারে ছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষদের অসহায় করে রাখা, দরিদ্র করে রাখা ও দরিদ্র হাড্ডিসার মানুষকে দেখিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে সাহায্যের নামে টাকা এনে তা পকেটস্থ করাকে তারা নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলো।

এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আসলে সংবাদপত্র তো সমাজের দর্পণ। সমাজের দর্পণ যেটা হবে সেটা যেন অন্তত মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করে, তারা যেন মানুষের কল্যাণে উদ্বুদ্ধ হয়। তারা যেন মানুষের কল্যাণে কাজ করে।

তিনি বলেন, যে যেভাবে পারেন, আপনারা রিপোর্ট করতে পারেন আমরা বাধা দিইনি। স্বাধীনতার পর জাতির পিতাও আপনাদের সে সুযোগটা দিয়েছিল। তিনিও সাংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন। ইত্তেহাদ নামে একটি পত্রিকা বের হয়, সে পত্রিকার সাথে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, সংবিধানের দেয়া মৌলিক অধিকার চিন্তা, বিবেক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করতে গেলে অপরের প্রতি যে দায়িত্ববোধ, দেশের প্রতি যে দায়িত্ববোধ ও রাষ্ট্রের প্রতি যে দায়িত্ববোধ, সেই দায়িত্ববোধটাও থাকতে হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আপনারা যেমন অনেক ধন্যবাদযোগ্যও কাজও করেন, আবার এমন রিপোর্ট করবেন না যাতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, বিপথে যায়।

অন্যদিকে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী, সহ-সভাপতি নুরুল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান ও সাবেক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //