রোগীর কিডনি গায়েব: চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

এক কিডনির পরিবর্তে দুই কিডনি অপসারণে রোগীর মৃত্যুর ঘটনার দুই বছর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইউরোলোজি বিভাগের চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ইউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলালকে। অন্য আসামিরা হলেন- একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারুখ হোসেন, ডা. মোস্তফা কামাল ও ডা. আল মামুন।

দুই বছর পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগ থানায় এই মামলা করেন ভুক্তভোগী রওশন আরার ছেলে চলচ্চিত্র পরিচালক রফিক শিকদার।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে রওশন আরার ময়নাতদন্ত করা হয়। ঢামেক থেকে সম্প্রতি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী রওশন আরার ছেলে রফিক শিকদার জানান, একটি কিডনিতে সংক্রমণ নিয়ে ২০১৮ সালের ১ জুলাই মা রওশন আরাকে ভর্তি করান বিএসএমএমইউতে। চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানোর কিছুদিন পর ফের হাসপাতালে ডেকে জানানো হয় মায়ের বাম কিডনি ফেলে দিতে হবে। পরে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের পর কিডনিটি ফেলে দেয়া হয়। পরে অন্য একটি হাসপাতালে পরীক্ষা করে জানতে পারেন রোগীর ডানপাশের কিডনিও ফেলে দেয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

রফিক শিকদার বলেন, চিকিৎসক হাবিবুর রহমান লিখিতভাবে অপরাধ স্বীকার করে তাদের সঙ্গে চুক্তি করেন নিজ খরচে তিনি কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেবেন। কিন্তু তিনি কালক্ষেপণ করেছেন। অন্যদিকে, বিএসএমএমইউ হাসপাতালের আইসিইউয়ের লাইফ সাপোর্টে কোমায় ফেলে রাখেন মাকে। সেখানে গত ৩১ অক্টোবর রাতে মায়ের মৃত্যু হয়।

রফিক শিকদার আরো বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেতে বিলম্ব হচ্ছিল। চিকিৎসকরা হয়তো সেটি কোনোভাবে প্রভাবিত করছিলেন। এ কারণে এতদিন থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব হয়নি।

রওশন আরার পরিবারের অভিযোগ, বিএসএমএমইউ’র ইউরোলজি বিভাগের কয়েকজন চিকিৎসক রওশন আরার দুটি কিডনি কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। এখানেই একটি ১২ বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যাকে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ কিডনি দিয়েছিল, কিন্তু প্রতিস্থাপনের পর ডাক্তাররা বলেছে ওই কিডনিও নষ্ট হয়ে গেছে। রওশন আরাকে যখন ভর্তি করা হয়েছিল তখন সেখানে ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক ডা. মামুনের মাকে ভর্তি করা হয়। তারও দুটি কিডনিই নষ্ট ছিল। চিকিৎসার পরে তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ হন। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //