অপরাধ দমনে বিজিবিকে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সৈনিকের মূল পরিচিতি হচ্ছে শৃঙ্খলা। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক।

এছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) আরো শক্তিশালী করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

তিনি সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করতে বিজিবিকে সীমান্তে অপরাধ দমনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ শনিবার (৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীরউত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবির ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করে কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদানের মধ্য দিয়ে নবীন সৈনিককদের শপথগ্রহণ ও কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীন সৈনিকদের মধ্যে এসব গুণাবলির প্রতিফলন সকলকে অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ করেছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হতে ও বিজিবির মূলনীতির প্রতি নবীন সৈনিকদের গুরুত্ব আরোপের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আজকের দিনটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৪৬ বছর আগে জাতির পিতা বিডিআরের তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ ও অভিবাধন গ্রহণ করেছিলেন। কালের পরিক্রমায় মুজিব জন্মশতবর্ষে একইদিন ও ক্ষণে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত ও ধন্য মনে করছি।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ইপিআরের (বর্তমানে বিজিবি) প্রায় ১২ হাজার সদস্য অংশগ্রহণ করেন এবং সেখানে ৮১৭ জন সদস্য শহীদ হন। সবচেয়ে বেশি খেতাবপ্রাপ্ত বোধ হয় এখানেই। তাদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সাথে আমি স্মরণ করছি।

প্রধানমন্ত্রী লেন, ৭৫-এর পর যে সরকারগুলো ক্ষমতায় এসেছিল- জিয়াউর রহমান, এরশাদ বা খালেদা জিয়া কেউ কিন্তু আমাদের বর্ডার গার্ডের সাথে ভারতের সমস্যাটা মেটানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমি সরকারে আসার পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং সেটা আমরা সমাধান করি। 

তিনি বলেন, তাছাড়া আমাদের বর্ডার গার্ডের যেসব এলাকা উন্মুক্ত ছিল, প্রত্যেকটাতে আমরা বর্ডার পোস্ট নির্মাণ করে দিচ্ছি। বিজিবিকেও শক্তিশালী করা ও প্রতিটি জায়গায় তাদের যে অবস্থানটা, সেটা যেন নিশ্চিত হয়, তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, বিজিবিকে শক্তিশালী ও আধুনিক করতে কাজ করছে সরকার। স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্টের অংশ হিসেবে সীমান্তে নতুন নতুন বিওপি, বিএসপি নির্মাণসহ অত্যাধুনিক সার্ভেইলেন্স ইকুইপমেন্ট স্থাপন, এটিভি ও অত্যাধুনিক এপিসি, ভেহিক্যাল স্ক্যানার ও দ্রুতগামী জলযান সংযোজন করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, দেশের সীমান্তে চোরাচালান রোধে বিজিবি সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেইসাথে সীমান্তে নারী পাচার, শিশু পাচার, মাদক চোরাচালান দূর করতে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম, বিজিবিএম (বার), এনডিসি, পিএসসি স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

গত ১৪ জুন বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। বিজিটিসিঅ্যান্ডসিতে প্রশিক্ষণ নেয়া মোট ৭৯১ জন রিক্রুটের মধ্যে ৫৯০ জন পুরুষ ও ২০১ জন নারী। বিজিটিসিঅ্যান্ডসি ছাড়াও আরও ছয়টি প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৯৫তম রিক্রুট ব্যাচের এক হাজার ৭৩৩ জন রিক্রুটসহ সর্বমোট দুই হাজার ৫২৪ জন রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //