তিস্তা চুক্তি ও সীমান্তে হত্যা বন্ধের আশ্বাস

তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি করা এবং সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশকে ফের আশ্বাস দিয়েছে ভারত।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ আশ্বাস দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এবং বৈঠকের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, ২০১১ সালে দুইপক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে তিস্তার পানিবণ্টনে দ্রুত সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির বিষয়টি তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্ষেত্রে ভারত সরকারের আন্তরিক প্রতিশ্রুতি এবং অব্যাহত প্রচেষ্টার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

সীমান্ত হত্যার বিষয়ে যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, দুই নেতাই একমত হয়েছেন যে, সীমান্তে বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি একটি উদ্বেগের বিষয় এবং সংশ্লিষ্ট সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন, যেন এ ধরনের ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনা হয়। একইসঙ্গে বিজিবি এবং বিএসএফের সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপরও দুই প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন।

তিস্তা চুক্তি সম্পর্কে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এটা নিয়ে ভারত সরকার আগেই রাজি হয়ে গিয়েছে। সব কিছুই প্রস্তুত, কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। এটা আমরা আবার তুলেছি। বলেছি, আমরা এটা তুলে আপনাদের লজ্জিত করতে চাই না, তবে এটা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। একইসঙ্গে আমরা আরও ছয়টা নদীর কথা জিজ্ঞেস করেছি। তিস্তা নিয়ে তারা বলেছেন যে, সকল পক্ষকে সম্পৃক্ত করার জন্য তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রী তিস্তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দিক থেকে এ ইস্যু সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন। এই চুক্তির বিষয়ে আমরাও সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকি। দুই প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তাদের বোঝাপড়া তুলে ধরেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংবিধান অনুসারে সব পক্ষকে একসঙ্গে নিতে হয় আমাদের।

দোরাইস্বামী আরো বলেন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে ভারত ও বাংলাদেশের উভয়েরই একটি অভিন্ন দায়িত্ব বলে জোর দিয়ে উভয় নেতা আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনের জন্য সমন্বিত ও যৌথ টহলের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

এছাড়া ভারত, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের মধ্যে যে আঞ্চলিক সড়ক হচ্ছে, সেটাতে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত অতিক্রম করছে। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশ ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠারও ৫০তম বছরে পা রেখেছে বাংলাদেশ-ভারত।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুসম্পর্কের বিষয়ে ভারত সবসময়ই বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেয়। এ সময় করোনা মোকাবেলায় ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় দুই দেশ এক সাথে কাজ করবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকের অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষিসহ সাতটি খাতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //