করোনা আমাকে বন্দি করে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় বীমা দিবসে সম্মাননাপ্রাপ্ত ও শিক্ষা বিমাপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজে গিয়ে সম্মাননা দিতে পারলে ভালো লাগত। কিন্তু করোনাভাইরাস আমাকে একরকম বন্দি করে দিয়েছে। 

তিনি বলেন, কারণ আমি বের হলে হাজারখানেক লোকের কাজে সম্পৃক্ততা হয়। এতে ঝুঁকি তৈরি হয়। নিজের জন্য তো অন্যের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। তবে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আমরা টিকা নিয়ে আসছি। টিকা গ্রহণের পরও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, এগুলোর মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

পাশাপাশি বীমা খাতকে জনপ্রিয় করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বীমাকে জনপ্রিয়, এর প্রসার ও এ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বীমা সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।

আজ সোমবার (১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বীমা দিবস-২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। এসময় ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’ও উদ্বোধন করে তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা বীমার টাকা তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবন বীমা, সাধারণ বীমা ও ইনসুরেন্স ইনস্টিটিউটকে অটোমেশনের আওতায় আনতে ৬৩২ কোটি টাকার কাজ চলছে।

বীমা খাতে দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে বীমা করে কৃত্রিমভাবে নিজের প্রতিষ্ঠান বা পণ্যের ক্ষতি করে বিশাল অংকের ক্ষতিপূরণ দাবি করে। এ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যারা তদন্ত করবে তারা যেন প্রশিক্ষিত ও দক্ষ হয় এবং কোনোভাবে প্রভাবিত না হয়ে সিঠিত তদন্ত করে। কেননা অনেক সময় এরা অল্প ক্ষতিকে বেশি করে দেখায়।

বীমার প্রিমিয়াম জমা দেয়া ও ক্ষতি নিরূপণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা চাই, মানুষ বীমা সম্পর্কে আরো আস্থাশীল হোক। এতে তারা যেন সুফলটা ভোগ করতে পারে। সেজন্য বীমা পদ্ধতির আধুনিকায়ন ও যাবতীয় আইন করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীমা খাতে কাজ করতেন। তিনি বীমা নিয়ে মানুষকে সচেতন করেছিলেন এবং এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রসার ঘটিয়েছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় বীমা খাতে নানা সংস্কারমূলক কাজ করছি। ২০০৯ সালে বীমা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। 

বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা চালু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বার্ষিক ৮৫ টাকা দিয়ে একটা পলিসি করতে পারবে। এক্ষেত্রে নতুন বিবাহিত কাপল বীমা করলে সন্তান শিক্ষা সমাপনী পর্যন্ত আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না, এরকম ব্যবস্থা করতে হবে। বার্ষিক ২৮৫ টাকা দিয়ে একজন খেলোয়াড়ও নিজের জীবন সুরক্ষিত রাখতে পারবে। প্রবাসীদের জন্যও বীমার সুযোগ রাখা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমার আওতায় শিক্ষার্থীদের বিদেশে পাঠানো হবে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, যারা এ সুযোগ নেবেন তাদের শিক্ষা শেষে দেশে ফিরে আসতে হবে। বীমায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে এদেশের বীমা খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন ও আর্থিক বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম। এবারের বীমা দিবসের স্লোগান- ‌‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, বীমা হোক সবার।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //