‘সবার আগে দেশের ইমেজ’

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, সবার আগে দেশের ইমেজ। লিখুন, কিন্তু এ রকমভাবে কিছু করবেন না, যা একজন শিক্ষিত মানুষের জন্য শোভা পায় না। আমেরিকায়ও স্যাটায়ার (ব্যঙ্গাত্মক রচনা) লেখা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মতো এতো নগ্নভাবে করা হয় না। আমাদের এখানে যেসব ভাষা ব্যবহার করা হয়, তা কীভাবে একজন শিক্ষিত লোক লিখে থাকেন? তাহলে শিক্ষার মর্যাদা কোথায় রইল!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ লেখার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আসামি সিলেটের গোলাম সারোয়ারের জামিন আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের শুনানিতে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

রবিবার (৭ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ শুনানি হয়।

আদালত ওই আসামির জামিন বহাল রেখে আদেশ দেন। ভবিষ্যতে আর যাতে এ ধরনের মন্তব্য না করেন সেজন্য আইনজীবীর মাধ্যমে তাকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ। শুনানিতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. আসাদুজ্জামান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, আসামি এক বছর ধরে কারাগারে আছেন। এখনো অভিযোগপত্র হয়নি। হার্টে চারটি স্ট্রেন্টিং রয়েছে। অসুস্থ মানুষ বিনাবিচারে কারাগারে। এ কারণে জামিন বহাল রাখা প্রয়োজন। জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চাচ্ছি।

এসময় আদালত আসামিকে উদ্দেশ করে আইনজীবীকে বলেন, হার্টে চারটি স্ট্রেন্টিং নিয়ে এসব কুরুচিপূর্ণ লেখা লিখে বেড়ান?

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ বলেন, মাই লর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে দেয়া পোস্টে যেসব ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো আমি প্রকাশ্যে আদালতে পাঠ করে শোনাতে চাচ্ছি না। আপনারা দয়া করে একটু মামলার (এফআইআর) এজাহারটা দেখুন।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, স্যাটায়ার করুন, কিন্তু সেটার ভাষা পরিশীলিত হতে হবে। যেসব ভাষা ব্যবহার করেছে তাতে শিক্ষিত লোকের সাথে যায় না। তিনি আসামির আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আপনার আসামিকে সতর্ক করে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে এরকম করলে জামিন হবে না।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে কটূক্তি করে বিভিন্ন নেতিবাচক পোস্ট, ছবি বিকৃত করে পোস্ট ও ব্যঙ্গাত্মক লেখা লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার অভিযোগে ২০২০ সালের ১৪ মার্চ গোলাম সারোয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পরদিন ১৫ মার্চ সিলেটের শাহপরান থানায় গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। এ মামলায় ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। এ জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতির আদালতে আবেদন করলে গত বছর ১৮ অক্টোবর হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করে দেয়া হয়। এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পাশাপাশি আসামির জামিন বহাল রাখার আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।

রবিবার (৭ মার্চ) এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। আপিল বিভাগ চেম্বারজজ বিচারপতির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে জামিন বহাল রাখেন।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //