উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজের পায়ে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস বিশ্বে অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। করোনায় আমাদের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। তবে এর মধ্যেই আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। 

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের নিজের পায়ে চলতে হবে। নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করলাম।

আজ সোমবার (১৫ মার্চ) ‘বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলে’র উদ্বোধন ও পায়রা বন্দরসংলগ্ন রামনাবাদ চ্যানেলের খনন প্রকল্পের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদেরকে নিজের পায়ে চলতে হবে, নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের দেশকে উন্নত করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কাজ করার দরকার আছে।

তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকাকে দেশের উন্নয়নের কাজে আমরা নিজেরা কীভাবে ব্যয় করতে পারি, সেটাই আমরা চিন্তা করেছি। বারবার শুধু অন্যের কাছে হাত পাতা বা কারও কাছে ধার না করে আমরা আমাদের নিজেদের অর্থ দিয়েই নিজেদের অবকাঠামো উন্নয়ন বা এখানে যারা ইনভেস্টমেন্ট করতে আসবে, বিনিয়োগ করতে আসবে বা দেশি-বিদেশি যারাই আসুক, তাদের ঋণ নেয়ার যে প্রচেষ্টা, সেটা আমরা নিজেরা নিজেদের অর্থ থেকেই ব্যয় করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। অনেককে আমরা হারিয়েছি। সাথে সাথে এই কারোনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি- আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে, রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে। এই রিজার্ভের টাকা কিভাবে উন্নয়নে ব্যয় করতে পারি, সেটাই চিন্তা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, সেই চিন্তা থেকেই ছয়মাসের আমদানি খরচের টাকা রিজার্ভে রেখে বাকি টাকা কীভাবে বিনিয়োগ করা যায়, সেই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর সেই চিন্তা থেকে নিজস্ব একটা তহবিল গঠন… যে তহবিল থেকে বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিতে পারবে। এছাড়া আমাদের দেশের অবকাঠামোগুলোর যাতে উন্নয়ন হয়, তার প্রচেষ্টা আমরা করব।

এ তহবিল থেকে পায়রা বন্দরে অর্থায়নের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের গভীর সমুদ্রবন্দরটাও করতে হবে। ইতিমধ্যে মোংলা বন্দরও আমরা চালু করেছি, যেটা বিএনপি সরকারের আমলে বন্ধ ছিল। তাছাড়া আমাদের আরেকটা বন্দর কিন্তু তৈরি হয়ে গেছে, যা ভবিষ্যতে আরো উন্নত হবে, সেটা হচ্ছে মহেশখালীর মাতারবাড়ি, সেখানেও কিন্তু একটা সমুদ্রবন্দর হচ্ছে। আর পায়রা বন্দরটা আমরা নিজের উদ্যোগেই করি।

তিনি আরো বলেন, পায়রা বন্দর যখন পুরোপুরি চালু হবে, তখন একে কেন্দ্র করে গভীর সমুদ্রবন্দরও নির্মাণ করা হবে।

দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এই তহবিলে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। এই তহবিল থেকে রামনাবাদ চ্যানেলের খনন কাজের জন্য প্রথম অর্থ বরাদ্দ করা হলো। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ, অর্থ বিভাগ ও সোনালী ব্যাংকের মধ্যে এ সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এসময় আরো বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এর আগে পায়রা বন্দরের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়। 

পাশাপাশি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের নানা পদক্ষেপ ও উদ্যোগ তুলে ধরেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //