গোডাউনের অনুমোদন ছিলো না মুসা ম্যানসনের

আরমানিটোলায় হাজী মুসা ম্যানসনে থাকা কেমিক্যাল গোডাউনের লাইসেন্স দেয়নি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। তবে সিটি করপোরেশন তাদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে কি না তা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছে না ফায়ার সার্ভিস।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ শেষে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হাজী মুসা ম্যানসনে প্রচুর পরিমাণে কেমিক্যাল রয়েছে। এগুলো অবৈধ কেমিক্যালের দোকান। আমার জানা মতে ফায়ার সার্ভিস এদের কোনো ধরনের লাইসেন্স দেয়নি। তবে আমি জানি না সিটি করপোরেশন তাদের ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে কি না। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এ কেমিক্যাল গোডাউন গড়ে উঠেছে। নিচ তলায় কেমিক্যাল গোডাউন আর উপরে মানুষের বসবাস, এর মানে অগ্নিকুণ্ডে বসবাস করা ছাড়া আর কিছুই না। এজন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

কেমিক্যালগুলো কী ধরনের? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে এগুলো হ্যাজার্ডিয়াস কেমিক্যাল। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে এখানে। এগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে কঠিন হ্যাজার্ডিয়াস কেমিক্যাল।‌ আমরা যখন ঘটনাস্থলে প্রথম আগুন নেভাতে আসি কেমিক্যালগুলোর জন্য অনেক সমস্যা হয়েছে। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কেমিক্যাল খোলা রাখা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি। যারা কেমিক্যালগুলো এখানে রেখেছেন, এই মৃত্যুর জন্য তারা দায়ী।

আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে জানতে চাইলে দেবাশীষ বর্ধন বলেন, এটা তদন্তের পর জানা যাবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির তদন্ত করে বলতে পারবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে।

আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস কিছু জানতে পেরেছে কি না এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের কারণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।‌ তাৎক্ষণিক আমরা কিছুই বলতে পারছি না। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলা যাবে। ‌অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ে যাবে।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আগুন এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে‌‌। আমরা ফাইনাল সার্চ করে ফেলেছি।  আমাদের উদ্ধার কর্মীরা ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে সার্চ করেছে, ভেতরে আর কোনো লোকজন নেই। এখন পর্যন্ত ১৫ জন ভিকটিমকে আমরা বের করেছি।‌ তাদের তাৎক্ষণিকভাবে বের করতে পারায় মোটামুটি সবাই বেঁচে গিয়েছেন। 

তিনি বলেন, আমরা এইমাত্র একটা ম্যাসেজ পেয়েছি যে একজন নারীকে (নিলুফা) অজ্ঞান অবস্থায় আমরা উদ্ধার করেছিলাম। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ পর্যন্ত দুজন ভিকটিম অর্থাৎ একজন পুরুষ ও একজন নারী এ ঘটনায় মারা গেছেন। এছাড়া আমাদের তিনজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিত্সা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজে আর দুজন পঙ্গু হাসপাতাল। সর্বমোট আহত রয়েছে ১৭ জন।

ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বাবুবাজার ব্রিজের পাশের ছয়তলা ভবনটির কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //