কুয়েতে পাপুলের সাজা বেড়ে ৭ বছর

অর্থ ও মানবপাচারের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলের কারাদণ্ড তিন বছর বাড়িয়ে সাত বছর করেছে কুয়েতের আপিল আদালত। সোমবার (২৬ এপ্রিল) কুয়েতের আরবি ভাষার দৈনিক আল কাবাসের এ খবর জানায়।

ফৌজদারি আদালতে খালাস পাওয়া কুয়েতের একজন সংসদ সদস্যকেও সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আপিল আদালত।

সোমবার আপিল আদালত সালাহ খুরশিদকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে এবং আল-ওতাইবির খালাসের আদেশ বহাল রেখেছে।

অন্যদিকে, পাপুলের কাজে সহায়তাকারী হিসাবে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা মাজেন আল জারাহ এবং কুয়েতি দুই কর্মকর্তার সাজাও চার বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করেছে আপিল আদালত।

অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ দেয়ার অভিযোগে গত বছর জুনে কুয়েতে গ্রেফতার হন পাপুল। ওই মামলার বিচার শেষে গত ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের একটি আদালত।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, ঘুষের বিনিময়ে দেশটিতে নাগরিকত্ব, পাসপোর্ট ও রেসিডেন্ট পারমিট বা বসবাসের অনুমতিসহ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজে পাপুলকে সহায়তা করতেন মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ।

মামলার তদন্তকালে পাপুলের সহযোগী হিসাবে কুয়েতের দুই পার্লামেন্ট সদস্য সাদুন হাম্মাদ আল-ওতাইবি এবং সালাহ আবদুলরেদা খুরশিদের নাম এসেছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে বিচারিক আদালতে তার দুজন খালাস পেয়েছিলেন।

পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেষ মুহূর্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালে ‘বিএনপি ঠেকানোর’ কথা বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পাপুলের পক্ষে কাজ করে বলে দলটির নেতাদের ভাষ্য।

পাপুল নিজে এমপি হওয়ার পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কোটায় পাওয়া সংরক্ষিত একটি আসনে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামকে এমপি করে আনেন।

প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন পাপুল।

পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশি কমিউনিটির ধারণা।

পাপুলের পাশাপাশি তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানও অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থপাচার মামলার আসামি।

দুর্নীতি দমন কমিশন গত ১১ নভেম্বর মামলাটি করে। এই মামলায় সেলিনা এবং ওয়াফা গত ২৭ ডিসেম্বর জামিন পান। পরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে স্থায়ী জামিন দেয়া হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, জেসমিন প্রধান ২ কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

‘কাগুজে প্রতিষ্ঠান’ করে তিনি ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করেছেন বলেও বলা হয় মামলায়। এসব কাজে পাপুল, তার স্ত্রী ও মেয়ে সহযোগিতা করেছেন।

পাপুল কুয়েতে গ্রেফতারের পর গত বছরের ২২ জুলাই সেলিনা ইসলাম ও জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

ইতোমধ্যে সেলিনা ইসলাম এবং মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের আট ব্যাংকের ৬১৩টি হিসাব জব্দ করেছে দুদক।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //