ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। দেশে দুজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় র কয়েক ঘণ্টা পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ রোগ নিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত না হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের যে সংক্রমণ হচ্ছে, বাংলাদেশেও এটি শনাক্ত হয়েছে। আমাদের আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আতঙ্কের কিছু নেই।’

মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে উপহার হিসেবে পাওেয়া চীনের টিকা প্রয়োগ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় বারের এই লকডাউনের পর করোনার দ্বিতীয়য় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের যে সংক্রমণ হচ্ছে, বাংলাদেশেও এটি শনাক্ত হয়েছে। আমাদের আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আতঙ্কের কিছু নেই। ইতোমধ্যেই ওষুধ কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— এর চিকিৎসায় যেসব ওষুধ প্রয়োজন হয় তারা যেন তৈরি করে রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে আর ভ্যাকসিন আনা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অন্য দেশগুলো থেকে ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা শুরু করেছি। চীনের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে, রাশিয়া, আমেরিকা, ইংল্যান্ডের সঙ্গেও ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করছি। চীনের উপহারের পাঁচ লাখ ভ্যাকসিনগুলো আমরা ফ্রন্ট লাইনারদের দেবো।’

এর আগে, আজ ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত একজন রোগী বারডেম হাসপাতালে ভর্তি আছে এবং আরেকজন 'সাসপেক্টেড' রোগী পাওয়া গেছে বলে জানান বারডেম হাসপাতালের পরিচালক ডা. নাজমুল ইসলাম। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের বিষয়টি বারডেম কতৃর্পক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।    

ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, 'সাসপেক্টেড' রোগীর বাড়ি সাতক্ষীরায়। ঐ ব্যক্তি এর আগে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কি না তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি আরও জানান, সাসপেক্টেড রোগী ৫৩ বছর বয়সী একজন পুরুষ। জ্বর-কাশির মতো করোনা পরবর্তী উপসর্গ নিয়ে এ মাসের ১৭ তারিখে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নতুন কোনো রোগ নয়। ডায়বেটিক, নন-ডায়বেটিক রোগী যাদের ইমিউনিটি বা প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। কোভিড রোগীদের ইমিউনিটি কম, তাই তাদের মধ্যে এ রোগ পাওয়া যাচ্ছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকেই ভারতের চিকিৎসকরা 'মিউকরমাইকোসিস' নামক এক বিরল ও বিপজ্জনক ছত্রাক সংক্রমণের অস্তিত্ব খুঁজে পান, যা 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস' নামেও পরিচিত।  

এই  মুহূর্তে যারা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের অনেকেই হয়তো কভিড রোগী ছিলেন কিংবা মাত্রই কভিড থেকে সুস্থ হয়েছেন। কভিড-১৯ এর প্রভাবে যাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়েছে অথবা শারীরিক নানা সমস্যা, বিশেষত ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারাই এবার এই নতুন রোগের শিকার হচ্ছেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতজুড়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হাজার হাজার রোগী পাওয়া গেছে। ভারতের দুটি রাজ্য ইতোমধ্যেই একে মহামারি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার এটিকে 'গুরুতর রোগ' হিসেবে অভিহিত করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //