ডা. জাহাঙ্গীর কবির এখন শুধু এমবিবিএস, ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়

নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ডা. জাহাঙ্গীর কবির। শনিবার (৭ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি তার নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান।

ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এফডিএসআর এর চিঠিটা মিডিয়াতে যাওয়ার ফলে আমি ব্যক্তিগতভাবে, আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি আসলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি পারিবারিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমার বাবা-মা কান্নাকাটি করেছে। বিভিন্ন মিডিয়াতে যখন এই খবরগুলো এসেছে তারা অনেক কষ্ট পেয়েছে।

এর আগে, রবিবার (১ আগস্ট) জাহাঙ্গীর কবিরের কর্মকাণ্ডকে অবৈজ্ঞানিক, অসত্য, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছে চিকিৎসকদের একটি সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি অ্যান্ড রাইটস (এফডিএসআর)।

ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের ঠিকানায় কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠানো এই চিঠিতে সংস্থাটির পক্ষে বলা হয়, ডা. জাহাঙ্গীর কবির কিটো ডায়েট নিয়ে ভুল এবং অসত্য তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এই ডায়েটের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনো লিখিত বা মৌখিক কাউন্সেলিং করেন না। বরং ডায়াবেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন রোগীদের ব্যাপকভাবে কিটো ডায়েটের পরামর্শ দিয়ে ক্ষতি করছেন। তিনি বিভিন্ন চিকিৎসকের দেওয়া প্রেসক্রিপশনকে হেয় করে মন্তব্য করেছেন। করোনার টিকা নিয়ে ইম্যুনোলজি বিষয়ক ভুল বক্তব্য দিয়েছেন।

চিকিৎসকদের এই সংগঠন জাহাঙ্গীর কবিরের এসব কার্যক্রমকে ম্যালপ্র্যাকটিস বা অপচিকিৎসা বলে আখ্যা দিয়েছে ও তা চিকিৎসাবিজ্ঞানের নীতিবিরোধী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলেছে।

এরপর মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে তার নিজস্ব ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।

ডা. জাহাঙ্গীর এখন শুধু এমবিবিএস
এমবিবিএস ছাড়া অনুমোদনহীন বাকি ডিগ্রিগুলো প্রেসক্রিপশন বা ভিজিটিং কার্ডে আর ব্যবহার করবেন না ডা. জাহাঙ্গীর কবির। বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) থেকে চিঠি হাতে পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত জানালেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া এ চিকিৎসক।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে এ ঘোষণা দেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রেসক্রিপশন বা ভিজিটিং কার্ডে যে চারটি ডিগ্রির কথা উল্লেখ করে আসছিলেন, সেগুলো অনুমোদনহীন ছিল।

সাম্প্রতিক সময়ে টিকা নিয়ে বিতর্কিত ভিডিও পোস্ট করার পর ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে ‘অপচিকিৎসার’ অভিযোগ তোলে চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিজ (এফডিএসআর)। এ অভিযোগের পর দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়ে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে বিতর্কিত ভিডিওসহ মোট তিনটি পোস্ট সরিয়ে নিয়েছেন বলে জানান ডা. জাহাঙ্গীর।

এরপরই আলোচনায় আসে তার অনুমোহীন ডিগ্রির প্রসঙ্গ। এসব ডিগ্রি ব্যবহারের বিষয়ে কারণ জানতে চায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিল।

ওই দুটি চিঠি পাওয়ার পর ডা. জাহাঙ্গীর তার ফেসবুক পেজে এই ভিডিও আপলোড দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘এফডিএসআরের কাছ থেকে আমার কাছে একটি চিঠি আসছে। এই চিঠি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে দেয়ার কথা ছিল। তবে আমি জানি না কীভাবে এই চিঠি মিডিয়ায় চলে আসছে। এটার কারণে আমার ব্যক্তিগত লাইফ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ৪ আগস্ট আমি এই চিঠি হাতে পেয়েছি। এটা চিঠির জবাব আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের জানাবো।’

বিএমডিসির চিঠি হাতে পাওয়ার খবর জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মৌলিক ডিগ্রি হচ্ছে এমবিবিএস। যেটা আমি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যাল থেকে শেষ করেছি। এ ছাড়া চারটি ট্রেইনিং (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) ডিগ্রি ব্যবহার করছি। এটা মূলত ডিগ্রি নয়। ট্রেইনিং (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত), তবে এই ডিগ্রিগুলো আমি সত্যি সত্যিই করেছি।’

প্রমাণ হিসেবে ডা. জাহাঙ্গীর ফেসবুক ভিভিওতে তার সব একাডেমিক সদন এক এক করে দেখান। তবে এমবিসিএস ছাড়া বাকিগুলোর স্বীকৃতি দেয়নি বিএমডিসি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //