‘ছেলেমেয়েরা পালিয়ে বিয়ে করে বলেই বাল্যবিবাহ বাড়ছে’

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ (চুমকি) বাল্যবিবাহ বন্ধ না হওয়ার বিষয়ে বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেমেয়েদেরই দোষ দিলেন। 

তিনি বলেন, এ বিষয়ে শুধু অভিভাবকেরা সচেতন হলে হবে না, এতে ছেলেমেয়েরাও যুক্ত। প্রকৃতিগতভাবেই বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েরা একজন আরেকজনের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। এ কারণেই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে। 

গতকাল বুধবার (১৭ নভেম্বর) বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয় কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, ছেলেমেয়েরা পালিয়ে বিয়ে করে বলেই বাল্যবিবাহ বাড়ছে।

মেহের আফরোজ বলেন, ‘এক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করলে হবে না। সেখানে এই বয়সী ছেলেমেয়েরা বিয়ের জন্য পাগল হয় না। ছেলেমেয়েদের এই বয়সের চাহিদা মেটাতে অভিভাবকেরাই সুযোগ করে দেন, বাংলাদেশে যা সম্ভব না।’

কমিটির সভাতেও করোনাকালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে উল্লেখ করে আলোচকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সভায় যেসব পুরুষ অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ে করছেন সামাজিকভাবে ওই পুরুষদের হেয় করা বা নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার সুপারিশ করে মেহের আফরোজ বলেন, দরিদ্র পরিবারে মেয়ের নিরাপত্তা, থাকার ঘরসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করার জন্য চিৎকার করলে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে অনেক পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। করোনার সময় প্রবাসীরা দেশে ফিরে এসেছেন। মা–বাবাও প্রবাসী ছেলে পেয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া কম বয়সী মেয়ের বিয়ে হলে যৌতুকও তুলনামূলক কম লাগে।

২০০৭ থেকে শুরু করে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাল্যবিবাহের হারের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাল্যবিবাহের হার কমছে। ২০০৭ সালে ১৮ বছরের আগে বাল্যবিবাহের হার ছিল ৭৪ শতাংশ, যা ২০১৭ সালে ৫২ শতাংশের নিচে নেমে আসে। 

তবে ২০১৭ সালের পরের তথ্য তিনি উল্লেখ করেননি।

সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব নারায়ণ চন্দ্র সরকার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বক্তব্য দেন।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয় কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা দেওয়া ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জেলা কমিটির তদারকি ও সমন্বয় করা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করা ও তা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //