সারের ভর্তুকি নিয়ে উভয় সংকটে সরকার : কৃষিমন্ত্রী

বিশাল ভর্তুকির চাপ সামাল দিতে সারের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বিষয়ে সরকার উভয় সংকটে আছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। 

তিনি বলেন, একদিকে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সারের জন্য বিপুল ভর্তুকি দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে ভর্তুকি কমালে পণ্যের মূল্য বেড়ে যাবে। ফলে সারের ভর্তুকি নিয়ে সরকার উভয় সংকটে পড়েছে।

আজ সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সারের মজুত, দাম, ভর্তুকিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সারের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে পর্যাপ্ত সারের মজুত আছে। কোনও সংকট হবে না। সারের দাম এখনও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়নি। দাম বাড়ানোর কোনও উদ্দেশ্যও নেই। তবে আমরা যেকোনভাবে ভর্তুকি দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের ইনটেনশন দাম বাড়ানো না, কমিয়ে আনা। কিন্তু পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে চিন্তা করতে হচ্ছে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি, আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী চিন্তিত। এটা নিয়ে কী করা যায় সেটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। এ বছর সারে ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন ধরনের সারের দাম বৃদ্ধি কারণে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি লাগবে। এ কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় ভর্তুকি কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, এত বিশাল অংকের ভর্তুকি কোথা থেকে আসবে, এ বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। একদিকে এত ভর্তুকি দিলে অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে, অন্যদিকে সারের দাম বাড়ালে কৃষকের কষ্ট বৃদ্ধি পাবে, উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে এবং খাদ্যপণ্যের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। এ কারণেই সরকার উভয় সংকটে আছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বে সারের দাম এক বছরে বেড়েছে তিন গুণ। বাংলাদেশে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে ভর্তুকি দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ইউরিয়ায় ৮২ টাকা, টিএসপিতে ৫০ টাকা, এমওপিতে ৪১ টাকা এবং ডিএপিতে ৭৯ টাকা। এতে ৯৬ টাকা কেজির ইউরিয়া কৃষক পাচ্ছে ১৬ টাকায়। ৭০ টাকার টিএসপি ২২ টাকা, ৫৪ টাকার এমওপি ১৫ টাকা এবং ৯৩ টাকার ডিএপি ১৬ টাকা কেজিতে পাচ্ছে কৃষকরা।

এসময় মন্ত্রী বলেন, গত ১৩ বছরে সারসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের কোনও সংকট হয়নি। ফলে কৃষি উৎপাদনে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দানাদার শস্যের উৎপাদন হয়েছে ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //