যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাপ অনুভব করছি না: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

‘শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করছে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চাপ অনুভব করছি না। যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাপ রয়েছে, এ রকম কোনো বক্তব্য আমাদের কোনো সদস্য দেননি। আমরা এটিকে চাপ বলব না। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে দ্বিপাক্ষিক সংযোগ রেখেছি, তাদের দিক থেকে যে সাড়া পেয়েছি, সেটা নিয়ে কমিটিতে আলোচনা হয়েছে।

সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকের পর গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে।

গণমাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়, সংসদীয় কমিটিকে মন্ত্রণালয় আরও জানায়, র‌্যাব এবং বাহিনীটির বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা যাতে তুলে নেওয়া হয়, সেই চেষ্টা শুরু করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আইনজীবী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

র‌্যাবের বিরুদ্ধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কাজ চলছে বলে জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, এখন আমাদের কাজ হলো, র‌্যাব নিয়ে যে নিষেধাজ্ঞা সেটি সামনের দিনগুলোতে প্রত্যাহার করা যায় কীভাবে। সেই সঙ্গে আমরা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছি যে, এই নিষেধাজ্ঞা যেন এক্সপেন্ড না করে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা উইথড্র করার জন্য যে লিগ্যাল প্রসেস আছে আমরা সেই অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের হয়ে এই কাজগুলো করবে যুক্তরাষ্ট্রে এ রকম বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা একটা ডিসিশন প্রসেস মেকিংয়ের মধ্যে আছি।

আগামী মার্চ ও এপ্রিলে ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের উচ্চ পর্যায়ের সফর ও ডায়লগ রয়েছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, মার্চ এবং এপ্রিলে অনেক হাই-প্রোফাইল ভিজিট এবং ডায়লগ আছে, এটা আমরা সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের এনগেজমেন্টের যে ভিত্তিগুলো পার্টনারশিপ ডায়লগ, সিকিউরিটি ডায়লগ এগুলো সামনের কয়েক সপ্তাহের পর থেকে শুরু হবে। সেটাও কিন্তু একটা আবহ তৈরি করবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) বাতিল করার পর সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়নি। এ কারণ জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, জিএসপি প্রত্যাহারের পরে বাংলাদেশ বরং পৃথিবীর অন্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের গাইডলাইন মেনে বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি কোটা এক্সসেস দিয়েছে। বাংলাদেশের জিএসপি প্রত্যাহারের পর ট্রেড কয়েক গুণ বেড়েছে।  যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ট্রেড বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের সফর কেন হয় না? জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জন কেরি ঢাকা সফর করেছেন। বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির (বাংলাদেশের) সঙ্গে দেখা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে  অগ্রগতি হয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে। এখন বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ শুরু করেছি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //