সারাদেশে একদিনে এক কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে আজ শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি)। আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দেশের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে শুরুর আগেই দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
করোনার টিকার প্রথম ডোজ আজ থেকে দেওয়া শেষ হচ্ছে এমন খবরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা মানুষের ঢল নেমেছে। টিকাপ্রত্যাশী অসংখ্য নারী-পুরুষ গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকার জন্য অপেক্ষা করছে। কোনও ধরনের নিবন্ধন কিংবা কাগজপত্র ছাড়াই নির্ধারিত বুথে আজ টিকা দেওয়া যাচ্ছে।
করোনা মহামারি প্রতিরোধে মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষকে প্রথম ডোজের আওতায় আনতে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে ‘একদিনে এক কোটি কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম’।
রাজধানীর মুগদা ৫০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সকাল ৯টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, জন্মনিবন্ধন সনদ কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ। কেউ কেউ টিকা কার্ডও নিয়ে এসেছেন। টিকা গ্রহীতাদের লাইন হাসপাতালের বাইরে পর্যন্ত চলে এসেছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক জামাল উদ্দিন বাড়ি রংপুরের পিরগাছার পার্বতীপুরে। তিনি বলেন,‘শুনতেছি টিকা আর দেওয়া হবে না। এজন্য নিয়ে নিচ্ছি।’
রাজধানীর বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। বাসাবো খেলার মাঠে অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রে টিকা দিতে এসেছেন স্থানীয় গৃহিণী ঝর্ণা বেগম। তিনি বলেন, ভোটার আইডি নেই, জন্মনিবন্ধন অনলাইন করা নেই। তাই এতদিন টিকা নিতে পারিনি। এখন জন্মনিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ড লাগবে না, তাই টিকা নিতে এসেছি।
টিকার জন্য লাইনে দাঁড়ানো সোলেমান বলেন, আজকে পর প্রথম ডোজ আর দেবে না। গতকাল নিবন্ধন করেছি। আজকে সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখানে যে লাইন দেখছি দুই ঘণ্টা লেগে যাবে। টিকা দেওয়া শুরু করেছে দেরি করে। যদি সময়মত শুরু হতো এতো সময় লাগতো না।
কোনো কার্ড ছাড়াই কাজীপাড়া নিবাসী আলামিন নামের একজন টিকা পেয়ে উৎফুল্ল। তিনি বলেন, টিকা নিতে বেশি সময় লাগেনি।
বাংলাদেশে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি করোনার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হয়। দুই মাস পর ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম। আর গত বছরের (২০২১ সালের) ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর মধ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ৭৬ লাখ ডোজের বেশি টিকা দেওয়া হয়েছিল একদিনে। এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একদিনে ১ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওইদিন জানানো হয় ২৬ ফেব্রুয়ারির পর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, শুক্রবার পর্যন্ত সারাদেশে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ৮১ হাজারের বেশি মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৮ কোটি ১৯ লাখ ও বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৩৫ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি মানুষ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh