ফ্ল্যাটের শিশুরা ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

শিশুদের খেলাধুলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরে খেলাধুলার জায়গা কম। আমাদের শিশুরা এখন তো সবাই ফ্ল্যাটে বাস করে, ফ্ল্যাটে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে, ফ্ল্যাটে বাস করে করে সেই ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তাই তাদের মা-বাবার উচিত এমন ব্যবস্থা করা, যাতে তাদের ছেলেমেয়েরা হাত-পা ছুড়ে খেলতে পারে। ইতোমধ্যে আমরা কিছুটা উদ্যোগ নিয়েছি, প্রতিটি এলাকায় যেন খেলার মাঠ থাকে। 

প্রতিটি এলাকায় খেলার মাঠ থাকা ‘একান্তভাবে প্রয়োজন’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, যেখানে খালি জায়গা পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই মাঠ করে দেয়া হচ্ছে।

ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ বুধবার (১২ মে) সকালে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮৫ সংগঠক ও ক্রীড়াবিদের মাঝে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, শিশুরা এখন তো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাড- এগুলো ব্যবহার করে, সারাক্ষণ ওর মধ্যে পড়ে থাকা, এটা আসলে মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে সুস্থতার লক্ষণ না। সেজন্যই মা-বাবা, যারা গার্ডিয়ান, অভিভাবক- তাদেরকে আমি অনুরোধ করব কিছু সময়ের জন্য হলেও ছেলেমেয়েরা যাতে হাত-পা ছুড়ে খেলতে পারে সেটা আপনাদের উদ্যোগ নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমাদের যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন তাদের প্রশিক্ষণের জন্য সংসদ ভবনের পাশের মাঠে আমরা নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। তাদের জন্য একটা একাডেমিও আমরা তৈরি করে দিচ্ছি। প্রত্যেকটা অভিভাবক যদি একটু আন্তরিক হন, ছেলে-মেয়েদের দৌড়-ঝাঁপের মধ্য দিয়ে শারীরিক-মানসিক বিকাশ হয়। তারা অন্য দিকে যাবে না। 

গ্রামীণ খেলাগুলো চালুর ব্যবস্থা নিতে হবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, জেলা-উপজেলা ফুটবল, হকি, সাঁতার সেই সাথে সাথে আমাদের দেশীয় খেলাগুলো ডাঙ্গুলী থেকে শুরু করে হাডুডু সব খেলাই তো আমাদের দেশে ছিল। স্কুলে স্কুলে খেলা হতো। সেই খেলাগুলো ও আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে সহায়তা করছি। আমরা চাই, আমাদের এ খেলাগুলো আরো এগিয়ে যাক।

তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সাথে ক্রীড়া অঙ্গনের সম্পর্ক সবসময় রয়েছে। আমার বাবা খেলতেন। আমার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলও খেলতেন। এমনকি কামাল-জামালের স্ত্রীরাও খেলাধুলার সাথে যুক্ত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের বন্দিখানা থেকে দেশে ফিরে এসে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। তখন তিনি বাংলাদেশকে একটি প্রদেশ থেকে একটি রাষ্ট্রে উন্নীত করা শুরু করেন। স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য তিনি একে একে সব প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। সেইসাথে ক্রীড়ার দিকে থেকে বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়, বঙ্গবন্ধু সেই ব্যবস্থাও করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে খেলাধুলার উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকে পাবেন একটি আঠারো ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, এক লাখ টাকার চেক এবং একটি সনদপত্র।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //