করোনা বেড়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন : প্রধানমন্ত্রী

দেশের বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা বেড়েছে। আমরা সবাই যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলি। 

তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেতে হয়েছে। পরিস্থিতি আবার কিছুটা খারাপের দিকে; এজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আহবান জানানো হচ্ছে। 

আজ রবিবার (২৬ জুন) সকালে ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২২’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এবার জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত ১৫ জনকে বছরের সেরা মেধাবী পুরস্কার দেওয়া হয়।

নতুন প্রজন্মকে ভবিষ্যত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তুত হতে বলে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সোনার ছেলে-মেয়েরা, আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিতে তোমরা তৈরি হও। তোমরা তোমাদের মেধা বিকাশ করবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশ যেন আর পিছিয়ে না থাকে, এগিয়ে যায়।

তিনি বলেন, বিজ্ঞান চর্চা ও প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। মেধা অন্বেষণ একটি চমৎকার ব্যবস্থা। এর মধ্য থেকে অনেক সুপ্ত জ্ঞান বেরিয়ে আসবে, যা আমাদের দেশের আগামী দিনের উন্নয়নে কাজে লাগবে।

করোনার কারণে গত দুই বছর এই পুরস্কার দেওয়া সম্ভব হয়নি জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, শিক্ষার্থীসহ করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদেরও করোনার টিকা দেওয়া যায়।

শিক্ষার্থীদের বৃত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ২৬ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মায়েদের মোবাইলে উপবৃত্তি টাকা দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী এ সুবিধা পাচ্ছে। এ সময় শিক্ষার উন্নতির জন্য তার সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে দেশ এখানেই থেমে থাকবে না। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করে দিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর প্রায় ২১ বছর কোনো অগ্রগতি সাধিত হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষের অগ্রগতি সাধিত হয়।

তিনি বলেন, ড. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে বঙ্গবন্ধু একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। সেই কমিশন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছিল। সেটা জাতির পিতার হাতেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যার পর সেই কমিশনের নীতিমালা আর কখনো আলোর মুখ দেখেনি। আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ, তখন ‘মার্শাল ল’ জারি করা হয়। 

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে মিলিটারি ডিকটেটররা মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র-অর্থ-মাদক তুলে দিয়ে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করে। এই বাহিনীর মাধ্যমে তারা ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার চেষ্টা করে। এ কারণে বছরের পর বছর সেশন জট হয়। ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ অনেকটা সীমিত হয়ে পড়ে।

শিক্ষা নীতিমালার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, সাফল্য অর্জন করতে হলে নীতিমালা বা লক্ষ্য থাকা প্রয়োজন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করলে সাফল্য পাওয়া যায়। আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে সেটাই করেছি।

তিনি বলেন, আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে চাই। আমাদের শিশুরা এগুলো নিয়ে কাজ করবে। তারাই বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে কাজ করবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব বক্তব্য রাখেন। এসময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //