মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান

‘গুম ও নিখোঁজের ঘটনা সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত’

জোরপূর্বক গুম ও নিখোঁজদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তা সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ৫ম মানবাধিকার কমিশনের মেয়াদ পূর্তিতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সচিব নারায়ণ চন্দ্র সরকার প্রমুখ।

সভায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১১৯টি গুমের অভিযোগ এসেছে। ৬২ জন সরাসরি অভিযোগ দাখিল করেছেন, বিভিন্ন সংস্থা অভিযোগ করেছে ৪৮টি। আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ৯টি অভিযোগ করেছি। এর মধ্যে ফেরত এসেছে ২৮ জন, ৩৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরবর্তীতে অভিযোগ দাখিলকারীরা কমিশনকে সহযোগিতা করেনি। '

তিনি আরো বলেন, আইনে গুম শব্দটি নেই, নিখোঁজ শব্দটি রয়েছে। আমরা বলব কোনো ব্যক্তি নিখোঁজ হলে সরকারের দায়িত্ব তাদের খুঁজে বের করা। আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। নিখোঁজের ঘটনার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে সরকারকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান বলেন, আমলা হওয়া যে এত অপরাধ জানতাম না, আমলারা যে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না, আমলা হলে আর কিছু করতে পারে না, মানুষের জনসেবা করতে পারবে না, এটা বুঝতে পারছি না।

বিএনপির চলমান আন্দোলন ও পুলিশের হামলা এবং বিএনপির নেতাদেরই সেই মামলায় আসামি করার বিষয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নাছিমা বেগম বলেন, যদি ভুক্তভোগীদের মামলা আদালত না নেয়, তাহলে লঙ্ঘন হবে। আপনার বিচার চাওয়া ও পাওয়ার অধিকার আছে। আদালত তো মামলা নিয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলার বিষয়ে নাছিমা বলেন, দুই পক্ষ দুই রকম বক্তব্য দিচ্ছে। আমরা প্রতিবেদন চেয়েছি। পাওয়ার পরে সিদ্ধান্ত দেব।

বিদায়ী বক্তব্যে কমিশনকে আরো শক্তিশালী করার দাবি জানান নাছিমা বেগম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারা গুমের ঘটনায় কমিশনকে সুয়োমোটো তদন্ত ক্ষমতার দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি আইনের সীমাবদ্ধতা, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতিবেদন না পাওয়াকে নিজেদের কাজের বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরই করোনা মহামারি শুরু হয়। ইবোলা ভাইরাসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনাকালে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। তখনকার সময় বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের শ্রমিকদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। করোনা ছড়াবে এ কথা বলে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছিল। তখন তাদের করোনা পরীক্ষা করে পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

সভায় মানবাধিকারকর্মী, বিভিন্ন সংস্থার সদস্য, মানবাধিকার কমিশনের সদস্যসহ কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //