যে কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশ

করোনা মহামারি পরবর্তী সংকট ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের সাথে লড়াই করে বাংলাদেশের অর্থনীতি ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চ্যালেঞ্জের মুখেও রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে ঢাকা অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠবে বলে খবর প্রকাশ করেছে প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো জাপানি পত্রিকা নিক্কেই এশিয়া।

গতকাল সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ‘বাংলাদেশ সিজ ইকোনোমিক রে অব লাইট অ্যাজ এক্সপোর্টস, রেমিট্যান্সেস রাইজ’ শিরোনামে সংবাদপত্রটিতে ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর দক্ষিণ-এশিয়ার দেশগুলো সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খেলেও ইতিবাচকভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, পণ্য রপ্তানি খাতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে। গত নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ৫০৯ কোটি ডলার। এটি গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ২৬.০১ শতাংশ বেশি। আগের মাসেই তথা অক্টোবরেই যা ছিল ৪৩৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

একইসাথে বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার আরেক গুরুত্বপূর্ণ উৎস রেমিট্যান্স প্রবাহও বেড়েছে। নভেম্বর মাসে ১৫৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত বছর নভেম্বরে ছিল ১৫৫ কোটি ডলার।

আগের মাসে অর্থাৎ অক্টোবরে এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ আগের মাসের তুলনায় নভেম্বরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যখন নিম্নমুখীর দিকে ঠিক তখন গুরুত্বপূর্ণ দুই খাত রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বেশ আশাবাদী করে তুলেছে। 

গত বছর ২০২১ সালের আগস্ট মাসেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন তথা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। কিন্তু চলতি বছরের নভেম্বরের শেষ নাগাদ তা ৩৩.৭৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কঠোর হিসাব পদ্ধতিতে রিজার্ভ আরও কিছুটা কমেছে। এখন প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ ২৫.৭৮ বিলিয়ন ডলার। যা আগামী ছয় মাসের জন্য আমদানি ব্যয় মেটাতে যথেষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফের পক্ষ থেকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের প্রথম কিস্তি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম-বৃদ্ধির কারণে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। যার ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও দ্রুত কমে যায়।

ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের (বিসিজি) এক সমীক্ষা মতে, আগামী এক-দুই দশকে এক ট্রিলিয়ন তথা এক লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে বাংলাদেশ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //