‘এনএপি বাস্তবায়নে ২৩০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন’

আন্তর্জাতিক অংশীদারদের আগামী ২০২৩-২০৫০ মেয়াদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (এনএপি) বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থান থেকে প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন থেকে অভিযোজন এবং প্রশমনের জন্য ৫০-৫০ বণ্টনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আজ রবিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ফরেন সার্ভিস একাডেমির ‘গ্লোবাল হাব অন লোকালি লেড অ্যাডাপটেশন’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সরকার এখন জিডিপির ছয় বা সাত শতাংশ জলবায়ু অভিযোজনে ব্যয় করে এবং সম্প্রতি ২০২৩-২০৫০ মেয়াদে এনএপি হাতে নিয়েছে।

কপ-১৫ এর পর বাংলাদেশ তার নিজস্ব সম্পদ দিয়ে ২০০৯ সালে একটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তহবিলটি জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রেই এ পর্যন্ত ৮০০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে বসবাস করে আসছে এবং বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য বিপদের বিরুদ্ধে এক ধরনের স্থিতিস্থাপকতা অর্জন করেছে। তারা প্রাকৃতিক পরিবর্তনশীল গতিপথের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছে এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে একটি জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

এ সময় বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে স্থানীয় নেতৃত্বাধীন অভিযোজন বিষয়ে গ্লোবাল হাবকে সব ধরনের সহায়তা দেবেন বলেও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের (জিসিএ) আঞ্চলিক কার্যালয়কে এই অঞ্চল এবং এর বাইরেও শ্রেষ্ঠত্বের কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপকূলীয় অঞ্চলকে ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষার করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন শুরু করেছিলেন, যা স্থানীয়ভাবে ‘মুজিব কিল্লা’ নামে পরিচিত। তিনি গাছ লাগানোর পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিও (সিপিপি) চালু করেছিলেন। সিপিপি এখন ৭৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে গঠিত।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখনো জলবায়ু কর্মের পরিকল্পনা করার জন্য তার (বঙ্গবন্ধু) নির্দেশনা অনুসরণ করছি।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ লবণাক্ত, খরা ও বন্যা-সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে। ভাসমান কৃষি এখন সবজি উৎপাদনের জন্য ব্যাপকভাবে চর্চা করা হচ্ছে। জলবায়ু-স্মার্ট মৎস্য ও পশুপালনের জন্য অনেক উদ্ভাবনী পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। আমরা খাদ্য উৎপাদন ও তাপ কমানোর জন্য ছাদে চাষাবাদকে উৎসাহিত করছি।

জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম বহুতল আবাসন প্রকল্পটি কক্সবাজারের খুরুশকুলে নির্মিত হচ্ছে। সেখানে ১৩৯টি বহুতল ভবনে ৫ হাজার জলবায়ু-শরণার্থী পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জিসিএ চেয়ারম্যান সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, জিসিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. প্যাট্রিক ভারকুইজেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //