বাংলাদেশে জ্বালানি-সার সরবরাহ কমে যেতে পারে

চলতি বছর ২০২৩ সাল কেমন হবে অর্থনীতির জন্য, এ কৌতূহল সবার রয়েছে। বিশেষ করে যারা অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করেন তারা তো বটেই, বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে কল্পনা-জল্পনা শুরু হয়ে যায়। করোনাকাল কাটিয়ে সারা বিশ্ব পড়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কবলে। ফলে মন্দার কালো ছায়ার আঁচ পেয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। তবে সম্প্রতি এই মন্দা নিয়ে কপালে তেমন ভাঁজ না পড়লেও, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রলম্বিত সময় নিয়ে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে অর্থনীতির হিসাব-নিকাশ। 

লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে চলতি বছরটা অর্থনীতির জন্য কেমন কাটবে তার একটি পূর্বাভাস দিয়েছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ ৭টি বৃহৎ দেশের অর্থনীতির জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ও মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে আভাস পাওয়া যায়। এ ছাড়াও সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে যেসব দেশে তারও একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। 

এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক চলতি বছরের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে খুব শিগগির প্রতিবেদন তৈরি করবে বলে আভাস পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের জন্য চলতি বছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এই বছরে মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ কিছুটা কষ্টের মধ্যে দিন অতিবাহিত করতে পারে। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির গড় হতে পারে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। জ্বালানি আর সারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কমে যেতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। 

বড় দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ১২ মাসের হিসাব ধরে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির বিভাজনে দেখা যায় বিমান ভাড়ায় মূল্যস্ফীতি ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ভাড়ায় ১১ দশমিক ৯ শতাংশ, হাউজিং ৮ দশমিক ২ শতাংশ, নতুন গাড়িতে ৬ দশমিক ২ শতাংশ, বিনোদনে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, শিক্ষায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, মেডিকেল কেয়ার ৩ দশমিক ১ শতাংশ, কলেজ ফি ২ দশমিক ৩ শতাংশ, ফার্নিচার ২ দশমিক ২ দশমিক ২ শতাংশ, খেলনা ১ দশমিক ৪ শতাংশ। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে গায়ানায়। সেখানে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩০ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে লিবিয়ায়। যেখানে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৫ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলন করা হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। জার্মানিতে প্রবৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি হার ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। জাপানের প্রবৃদ্ধির হার  শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি একই হার ধরা হয়েছে।

চীন বৃহৎ দেশ হওয়া সত্ত্বেও চীনের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির হার ২ দশমিক ৯ শতাংশ। ভারতের জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ। 

তবে আশ্চর্যের বিষয় গায়ানা ছাড়াও ভেনেজুয়েলা, মালদ্বীপ, আইভরি কোস্ট, সেনেগাল ও ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধির হার রেকর্ড পরিমাণ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে। 


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //