ড. ইউনূস ইস্যুতে পাল্টা বিবৃতি দিলো ৫০ বুদ্ধিজীবী

গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নোবেল বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ‘ভালো থাকা’ নিয়ে উদ্বেগ জানানো ৪০ জন বিদেশি নাগরিকের বক্তব্যকে বাস্তবতাবর্জিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন দেশের ৫০ জন বুদ্ধিজীবী।

আজ শনিবার (১১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক সই করা এক যুক্ত বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনের এক বছরের কম সময় বাকি থাকতে হঠাৎ করেই আলোচ্য ৪০ জন বিদেশি নাগরিকের ড. মোহাম্মদ ইউনূসের ‘মহান’ অবদানকে সমর্থন ও স্বীকৃতি দানের আহ্বানের নেপথ্যে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এর আগেও দেখা গেছে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সুপরিকল্লিতভাবে এই ব্যক্তিসহ একটি স্বার্থান্বেষী মহল পদ্মা সেতু প্রকল্পে কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদেশি খণ বাতিলে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ যাতে ক্ষমতাসীন হতে না পারে। কিন্তু তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও ষড়যন্ত্র থেমে নেই বলেই মনে হচ্ছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর খণ বিতরণসহ অন্যান্য ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো বাধা আছে বলে মনে হয় না। তিনি যদি ভালো কাজ করে থাকেন তা মূল্যায়ন করবে দেশের মানুষ৷ কিন্তু তার ‘মহান’ অবদানকে সমর্থন ও স্বীকৃতিদানের জন্য ৪০ জন নাগরিকের আহ্বান জানানো এবং তা ওয়াশিংটন পোস্টের মতো পত্রিকার পৃষ্ঠাজুড়ে বিজ্ঞাপন আকারে প্রচারের বিষয়টি বোধগম্য নয়। 

এতে আরও বলা হয়, বিদেশি নাগরিকদের এ তৎপরতার নেপথ্যে সরকারের ওপর প্রচ্ছন্ন চাপ ও বিশেষ ধরনের রাজনীতি রয়েছে বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য সম্বলিত তৎপরতায় দেশের জনগণ বিভ্রান্ত হবেন না বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

বঙ্গবন্ধু পরিষদেরর বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব বান বি মুন জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উন্নয়নশীল দেশসমূহের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে এ ধরনের প্রশংসাবাক্য আরও অনেক রয়েছে। কিন্তু আমাদের ধারণা অনেকেই ড. ইউনূসের দেশবিরোধী ও জনস্বার্থবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে পুরোপুরি অবহিত নন বলেই এ ধরনের বিতর্কিত বিজ্ঞাপন ওয়াশিংটন পোস্টের মতো একটি পত্রিকায় প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে।

বিবৃতিতে সাক্ষরকারী বুদ্ধিজীবীরা হলেন-ে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, মো. আবুল কালাম আজাদ (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাসস), অজিত কুমার সরকার (সাংবাদিক), অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক (প্রাক্তন উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), কবি ও স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান খান (প্রাক্তন উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত (অর্থনীতিবিদ), অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী (কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. মাহাবুবুর রহমান (প্রাক্তন উপাচার্য, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ (প্রাক্তন উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), মাহবুব উদ্দিন আহমদ, বীর বিক্রম ( মুক্তিযোদ্ধা), শফিকুর রহমান এমপি (সাংবাদিক), অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান (উপাচার্য, ডুয়েট), অধ্যাপক ড. ফায়েক উজ্জামান (প্রাক্তন উপাচার্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম (ইতিহাসবিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন (উপাচার্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. ডালেম চন্দ্র বর্মন (প্রাক্তন উপাচার্য, আশা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া  (টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক নিসার হোসেন (ডিন, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. মো. মিজান উদ্দিন (প্রাক্তন উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, (হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার (উপাচার্য, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক কাজী ওমর সিদ্দিকী ((ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়) প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //