সড়কে প্রতিদিন ঝরে ৬৪ প্রাণ, কর্তৃপক্ষ উদাসীন

দেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ, আহত রোগীকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান। এসময় ই-ট্রাফিকিং সিস্টেম চালু করা গেলে সড়কে দুর্ঘটনা ৮০ শতাংশ কমে আসবে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার থাকলেও সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে রোড সেফটি ইউনিট গঠিত হলেও মূলত গণমাধ্যমে কথা বলা ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের কোনো গবেষণা কার্যক্রম নেই। সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়ে নানান ইউনিট ও প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও সড়ক দুর্ঘটনা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় কোনো বাজেট নেই।

‘এ মন্ত্রণালয়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনো গবেষক নেই, গবেষণা নেই, কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। ফলে প্রতি বছর সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছেই।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ হাজার মানুষের প্রাণহানির তথ্য মিলেছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। এ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ৩৬০ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছেন। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছে। এরমধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়।

অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্য মতে, হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি।

সংস্থাটি দাবি করছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এ নেতা বলেন, দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, কেন্দ্রীয়  নেতা মো. মহসিন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্য রাহিলা, আনজুম খুশব, আয়েশা খাতুন, পান্না আক্তার প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //