২৩ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণের দাবিতে গাজীপুর, সাভার—আশুলিয়া, মিরপুরসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলন চলছে। আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর নির্বিচার গুলি চালিয়ে রাসেল হাওলাদার নামে এক শ্রমিককে হত্যা এবং অসংখ্য শ্রমিককে গুলিবিদ্ধ করে আহত করার তীব্র নিন্দা এবং ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন ৫ দলীয় বাম জোট নেতৃবৃন্দ।
৫ দলীয় বাম জোট এর সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্টের (মার্কসবাদী) সভাপতি কমরেড ডা. এম এ সামাদ বাংলাদেশের সোশ্যালিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড শাহীন আহমেদ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মার্কসবাদী) সভাপতি কমরেড আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মাওবাদী) সভাপতি কমরেড মোস্তফা আল খালিদ বিন মাহমুদ ও বাংলাদেশের সমতা পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড সামছুল হক সরকার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্ব মূল্যে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে গার্মেন্টস শ্রমিকরা নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ভাবে মজুরি পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছিলো। সরকার, গার্মেন্টস মালিকদের চাপে শ্রমিকদের যন্ত্রণাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রায় এক বছর পরে এসে মজুরি বোর্ড গঠন করে। কিন্তু মজুরি বোর্ড গঠনের পর থেকেই গার্মেন্টস মালিক পক্ষের প্রতিনিধি রাজনৈতিক সংঘাতের আড়ালে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির আন্দোলনকে চাপা দিতে সময়ক্ষেপনের অপকৌশল গ্রহণ করে। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিকে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে দমন করার কুটকৌশল থেকে গার্মেন্টস মালিক পক্ষের প্রতিনিধি রাজনৈতিক উত্তেজনার চরম মুহূর্তে মাত্র ১০ হাজার ৪০০ টাকার তামাশা মূলক মজুরি প্রস্তাবনা উপস্থাপন এবং শ্রমিকরা ভালো আছে তাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি নেই এ জাতীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছেন।
দেশের ৮৪ শতাংশ রপ্তানি আয় যাদের রক্ত—ঘামের বিনিময়ে অর্জিত হয় সেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর নির্বিচার গুলি চালিয়ে তাদের হত্যা—আহত করার মত বর্বরোচিত কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এবং বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রশাসন গার্মেন্টস মালিকদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে শ্রমিকদের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে।
৫ দলীয় বাম জোট নেতৃবৃন্দ শ্রমিক অসন্তোষের দায় শ্রমিক নেতাদের কাঁধে চাপানোর অপচেষ্টা এবং তাদের হয়রানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গুলি করে, গ্রেপ্তার করে, নির্যাতন করে শ্রমিকদের ক্ষুধার আগুনের ক্ষোভ নেভানো যাবেনা তা বিস্ফোরিত হবেই। গার্মেন্টস মালিকদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অংশীদার হয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিকে দমন করা রাষ্ট্রকে উন্নত করা নয় বরং আধুনিক দাস ব্যবস্থা চালু রাখার প্রচেষ্টা।
নেতৃবৃন্দ দমন—পীড়নের পথ পরিহার করে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান, নইলে যে কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এর দায় মালিকপক্ষ ও সরকারকে নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : গুলি শ্রমিক হত্যা নিন্দা ৫ দলীয় বাম জোট
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh