রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে: পিআরআই

চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেশের অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)। 

আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীর কার্যালয়ে ‘আইএমএফ এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেন। 

আহসান মনসুর বলেন, রাজনীতি ঠিক না থাকলে অর্থনীতি ঠিক থাকবে না। গত দুবার জাতীয় নির্বাচনের সময় বিদেশি সম্পৃক্ততা তেমন ছিল না। এবার আছে। এ বছর অন্য দুবারের মতো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। নির্বাচনের পরও যে শান্তিতে থাকব, সে কথাও বলা যাচ্ছে না। 

সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ ও শর্ত; সংস্কার- এসব বিষয় উঠে আসে। এসময় পিআরআইয়ের গবেষণা পরিচালক ড. এম এ রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন। 

আহসান এইচ মনসুর বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, রিজার্ভ কমে যাওয়া, বিনিময় হার- এসব নিয়ে চাপে আছে অর্থনীতি। আইএমএফ এসব বিষয়ে সংস্কার করতে বলেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে এসব সংস্কার করা সম্ভব নয়। তাই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশেই থাকবে।

ডলারের বাজারে অস্থিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিনিময় হার কোথায় ঠেকবে, বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনের পরেও যে এসব সংস্কার হবে, সেই দিকনির্দেশনাও রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বড় ধরনের সংস্কার করতেই হবে। 

এ সময় পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ আইএমএফের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত। শিগগিরই এ বিষয়ে জানা যাবে যে, বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে থেকে ৬৮১ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে। দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে বড় কোনো সমস্যা হবে না; যদি বৃহৎ শক্তিধর দেশ বাধা না দেয়।

সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আইএমএফের ঋণের অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তিনটি বিষয়ে সরকারকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পিআরআই। সংস্থাটি বলছে, ব্যক্তিগত আয়কর থেকে আরও রাজস্ব বাড়াতে হবে। এটি মধ্য মেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াবে এবং দারিদ্র্য কমাবে। 

কর অব্যাহতি আরও কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সংস্থাটি। কিছু করছাড় বা অব্যাহতি সরকার এরই মধ্যে তুলে নিয়েছে, তবে আরও অগ্রগতি প্রয়োজন মনে করছে তারা। 

এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে পিআরআই জানিয়েছে, শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ করে যে ছাড় দেওয়া হয় তা জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। 

এ ছাড়াও ভ্যাট আইন ২০১২ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়ে পিআরআই বলছে, বর্তমান সংশোধিত ভ্যাট আইন ও ব্যবস্থায় অসংখ্য বিকৃতি হয়েছে, মূল আইনে ফিরে গেলে বছরে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশীয় পয়েন্ট রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং পরিচালনা করা সহজ হবে। 

ডলারের বিনিময় হার হঠাৎ করে বাজারের হাতে ছেড়ে দিলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, যা অর্থনীতির জন্য ক্ষতির। এ জন্য ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন ড. মনসুর। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //