বিজিপির ফিরে যাওয়া নিয়ে জটিলতা

বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা তিন শতাধিক বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি, সেনা কর্মকর্তা এবং ইমিগ্রেশন সদস্যদের নিয়ে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

তবে, মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত ‘সুরক্ষিত আছে’ দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রতিবেশী দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পালিয়ে আসা সদস্যদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করছে সরকার।

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানো হবে বলে গণমাধ্যমকে জনিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। গতকাল (৭ ফেব্রুয়ারি) এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, মিয়ানমার প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করেছিল যে সীমান্তরক্ষীদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানো হোক। কিন্তু আমরা ভেবেছি এটি নিরাপদ হবে না। তবে, এখন আমরা ভাবছি যে, তারা যেভাবে চায় সেভাবেই তাদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানো যেতে পারে।

এর আগে, গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে এবং মিয়ানমারের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের যে রাষ্ট্রদূত আছে, তার সঙ্গে কথাও বলেছেন। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। অর্থাৎ, তাদের বিজিপি বা বর্ডার গার্ড পুলিশের যারা এসেছে, তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। এখন কোন প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সে নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। তাদেরকে কি আকাশপথে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, নাকি পোর্টের মাধ্যমে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আমরা একটা পথ বের করব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশার কথা শোনালেও রোহিঙ্গাদের মতোই মিয়ানমার সরকারের এসব কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা স্থায়ী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে- এমনটি আশংকা নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের। বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের বিশাল অংশ আরাকান আর্মি দখল করে নেওয়ায় এখন তাদের ফিরিয়ে নেওয়া অনেকটা অনিশ্চিত।

এ বিষয়ে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী জানান, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব যেতে তাদের যেতে হবে। তাদেরটা সে দেশের ব্যাপার। বাংলাদেশ কখনোই অন্য দেশের কোনো কিছুর মধ্যে নাক গলায়নি। তারা সে দেশে যাওয়ার পর তাদের কঠিন বিচার হবে কি হবে না সেটা মিয়ানমার সরকারের নিজস্ব বিবেচনার বিষয়। তবে মিয়ানমার সরকার তাদের নৌপথে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে আরাকান আর্মির শক্ত অবস্থানের কারণে তা সম্ভব নয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ এখনও কোনো পক্ষ অবলম্বন করেনি; না আরাকান আর্মিকে; না মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে। এ অবস্থায় যতোটুক সম্ভব নিরাপত্তা বজায় রেখে বর্ডারকে সিল করার দরকার।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //