ছাগলকাণ্ড: মাকে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন ইফাত, আত্মগোপনে মতিউর

ছাগলকাণ্ডে দেশব্যাপী আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী তার দুই সন্তান নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। এর মধ্যে মুশফিকুর রহমান ইফাতও রয়েছেন। আর গা-ঢাকা দিয়েছেন মতিউর ও তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি। 

মতিউরের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, দুই ছেলে ইফাত ও ইরফানকে নিয়ে গত বুধবার মধ্যরাতে মালয়েশিয়া গেছেন শিবলী। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে রওনা হন তারা। 

জানা গেছে, মতিউর রহমান ছেলে হিসেবে অস্বীকার করায় ইফাত দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এর পর পারিবারিক সিদ্ধান্তে তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মতিউরের এক আত্মীয় বলেন, মতিউরের প্রথম স্ত্রীর পরিবারের সঙ্গে দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের দ্বন্দ্ব ছিল। ছাগলকাণ্ডের সুযোগ কাজে লাগান প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ। তিনি স্বামীকে বোঝাতে সক্ষম হন, ইফাতের পরিচয় অস্বীকার করলেই আপাতত ঝামেলা থেকে রক্ষা পাবেন মতিউর। কানিজের কথাতেই গণমাধ্যমের কাছে তিনি দাবি করেন, ইফাত তার সন্তান নয়। 

শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির ৮ নম্বর রোডে ৪১/২ নম্বর ইম্পেরিয়াল সুলতানা ভবনে গিয়ে জানা যায়, ইফাতের পরিবার সেখানে নেই। অন্যদিকে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৭/এ নম্বর রোডের ৩৮৪ নম্বর বাড়িতে গিয়েও মতিউর ও তর প্রথম স্ত্রী লাকির সন্ধান মেলেনি। বাসার নিরাপত্তাকর্মীরা বলছেন, দু’দিন ধরে এ বাসায় কেউ নেই। এ সময় মোবাইল ফোনে মতিউরকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে, মতিউরের প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লাকিও সেখানকার বাসায় নেই বলে জানান ওই বাসার নিরাপত্তাকর্মীরা। বাসার প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। আশপাশের বাসিন্দার বলছেন, তিন দিন ধরে তিনি এলাকায় আসেননি। তাঁর মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। 

ইফাতের ১৫ লাখ টাকার ছাগল কেনা ইস্যুতে তোপের মুখে পড়েছেন তার বাবা মতিউর। ইফাতের ছাগল কেনার বিষয়টি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর পরই ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়। 

অনুসন্ধানে মতিউর রহমানের অঢেল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। নরসিংদী, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ছাড়াও গাজীপুরের পূবাইলে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো, জমিসহ নামে-বেনামে রয়েছে অনেক জমি ও স্থাপনা। ঢাকায়ও আছে একাধিক প্লট ও দামি গাড়ি। স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ গড়েছেন মতিউর। ঢাকায় তার স্ত্রী-সন্তান ও ঘনিষ্ঠদের নামে দুই ডজন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে।

মতিউরের একের পর এক দুর্নীতি, অনিয়ম ও কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের মতো বহু কাহিনি বেরিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্প্রতি জমা পড়া একটি অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের পর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। শিগগিরই এ বিষয়ে অনুসন্ধান টিম গঠন করা হবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //