নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ এএম
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ এএম
দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।
তিনি জানিয়েছেন, ধর্মীয় পরিচয়–নির্বিশেষে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা ও মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যসহ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দিনব্যাপী জাতিসংঘের সংখ্যালঘুবিষয়ক ফোরামের ১৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার এই অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এসব কথা তুলে ধরেন। গতকাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফোরামে বক্তব্যে কয়েকজন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার নিয়েও অভিযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তারেক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশের মানুষ যখন ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবজনক উদাহরণ তৈরি করেছে, তখন আমরা দেখতে পেলাম সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল ভুয়া, মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। দুঃখজনকভাবে এই ফোরামেও আমরা সেটি হতে দেখেছি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের অনেক অপপ্রচার উন্মোচিত হয়েছে। বাস্তবে কী ঘটছে, তা পর্যবেক্ষণে বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সরকার। তিনি বলেন, এই ফোরামের কিছু বক্তা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়টি ভুলভাবে তুলে ধরেছেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রামে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আদালতে নেওয়ার সময় তার অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তারেক মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, একজন মুসলিম আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর সরকার দ্রুত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। সব ধর্মের নেতাদের সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এর মধ্য দিয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো গেছে।
বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশে সংঘটিত সহিংসতার পেছনে ধর্মীয় নয়; বরং রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বিষয় কাজ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের প্রায় সবাই মুসলিম। অল্প কিছু মানুষ আছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘু। দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর পদ্ধতিগত কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি; বরং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর বিশ্ব দেখেছে, দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনুসরণ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে রক্ষায় পুরো বাংলাদেশ কীভাবে এগিয়ে এসেছে।
যেকোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার ব্যাপারে সরকার সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে ত্বরিত পদক্ষেপ নেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণের কোনো অপচেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : সংখ্যালঘু নির্যাতন জাতিসংঘ হিন্দুত্ববাদ
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh