আজ ১০ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ এখনই’। মানববন্ধন ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাণীতে তিনি বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মানবাধিকার দিবস উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
তিনি বলেন, মানুষের সর্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য ও অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। মানবাধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার ও চাহিদা নিশ্চিতের পাশাপাশি, সবার নিরাপত্তা বিধান এবং স্বাধীনতা ও মর্যাদা সমুন্নত রাখে। ১৯৪৮ সালের এই দিনে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। একটি মানবিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে প্রণীত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানেও মৌলিক মানবাধিকার, স্বাধীনতা, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির যুগেও ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও রক্ষায় প্রতিনিয়ত আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। দেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি জনসাধারণের সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তৃণমূল পর্যায়ে কমিশনের কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে। সমাজে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি, সহমর্মিতা, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশ্বের সব নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার রক্ষায় সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
বাণীতে আরো তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি গণমুখী ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে নিয়মিত গণশুনানি আয়োজন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও প্রতিবেদন দাখিল, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানবাধিকার বিষয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ প্রেরণ, মানবাধিকার বিষয়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধিকল্পে বিভিন্ন জেলা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন, শিশু ও নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বন্ধে কার্যক্রম গ্রহণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে হবে। মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের প্রতিকার পাওয়ার পথ সুগম করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিরপেক্ষভাবে কার্যকর অবদান রাখবে- এটিই সবার প্রত্যাশা।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃত হয় মানবাধিকার সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। জন্মস্থান, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বিশ্বাস, অর্থনৈতিক অবস্থা কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে মানবাধিকার সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান। প্রতিটি মানুষ জন্মগতভাবেই এসব অধিকার লাভ করে।
ঘোষণাপত্রের ৩০ অনুচ্ছেদে প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার ও রাষ্ট্রের দায়-দায়িত্বের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘোষণাপত্র গ্রহণের দিনটি প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh