বাংলাদেশে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহত্তর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে- দেশে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশ ক্যান্সারের রোগী। প্রতিবছর দেশে নতুন করে ক্যান্সার রোগী যুক্ত হয় প্রতি লাখে ৫৩ জন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের গবেষকদের করা জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের দুই লক্ষাধিক অংশগ্রহণকারীকে এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৮.৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১.৬ শতাংশ নারী।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মোট ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ছিল ২১৪ জন। ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় প্রতি লাখে ১০৬ জন (পুরুষের ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ১১৮ জন এবং নারীর ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ৯৬ জন)। গবেষণায় ৩৮টি ভিন্ন ধরণের শনাক্তকৃত ক্যান্সার পাওয়া গেছে।
ক্যান্সার রোগীদের ৯২.৫ শতাংশই ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী। এছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ২.৪ শতাংশ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ৫.১ শতাংশ। শনাক্তকৃত শীর্ষ ৫টি ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে স্তন (১৬.৮ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (৮.৪ শতাংশ), পাকস্থলী (৭.০ শতাংশ), স্বরযন্ত্র (৭.০ শতাংশ) এবং জরায়ু মুখ (৫.১শতাংশ)।
পুরুষদের ক্ষেত্রে স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার ছিল সবচেয়ে বেশি (১৩.০ শতাংশ)। অন্যান্য প্রধান ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে পাকস্থলী (১০.৪ শতাংশ), ফুসফুস (৮.৭ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (৭.০ শতাংশ) এবং খাদ্যনালীর (৬.১ শতাংশ) ক্যান্সার।
নারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছিল স্তন ক্যান্সার (৩৬.৪ শতাংশ)। এছাড়া জরায়ু মুখের ক্যান্সার (১১.১ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহবর (১০.১ শতাংশ), থাইরয়েড (৭.১ শতাংশ) এবং ডিম্বাশয় (ওভারি) (৫.১ শতাংশ) ছিল অন্যান্য সর্বাধিক শনাক্ত হওয়া ক্যান্সার।
১৯ শতাংশ নারী ক্যান্সার রোগী নারী-প্রজননতন্ত্রের ক্যান্সারে ভুগছিলেন (জরায়ুমুখ ১১ শতাংশ, ডিম্বাশয় ৫ শতাংশ এবং জরায়ু ৩ শতাংশ)।
ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ১৭ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ১১ শতাংশ ডায়াবেটিস, ৬ শতাংশ হৃদরোগ, ৩ শতাংশ কিডনি জটিলতা এবং ২ শতাংশ স্ট্রোকে ভোগার তথ্য পাওয়া গেছে।
শনাক্তকৃত সকল ক্যান্সারের ৪৬ শতাংশই তামাক (ধোঁয়াযুক্ত ও ধোঁয়াবিহীন) সেবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। ৬০ শতাংশ ক্যান্সার রোগী সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির মধ্যে একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। রোগ নির্ণয়ের পর ৭.৪ শতাংশ রোগী কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করেননি।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : বাংলাদেশ জনসংখ্যা ক্যান্সার বিএসএমএমইউ
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh