আমি না হয় শ্রী-হীন হইলাম...

প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় শিল্পী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বিশাল সাহিত্য ভাণ্ডারের মধ্য থেকে কম করে হলেও ১০টি উপন্যাস এবং বেশ কিছু ছোটগল্পের জন্য স্বকালের সীমা ছাড়িয়ে উত্তরকালের অগণিত পাঠককে স্পন্দিত করতে সমর্থ হয়েছেন। ১৯৭১ সালে প্রায় নোবেল জয়ের কাছাকাছিও চলে গিয়েছিলেন; কিন্তু লাতিন আমেরিকা তথা বিশ্ব কবিতার বরপুত্র পাবলো নেরুদা সেবার নোবেল বাগিয়ে নিয়েছিলেন। বরেণ্য এই শিল্পীর জীবনের অদ্ভুত কাহিনি নিয়ে লিখেছেন শোয়াইব আহম্মেদ...

কবিতা লেখার মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যে আবির্ভাব ঘটেছিল তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপর লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাসসহ বহু বিষয়ে। তারাশঙ্করের প্রথম গল্প ‘রসকলি’ সেকালের বিখ্যাত পত্রিকা কল্লোলে প্রকাশিত হয়। এছাড়াও কালিকলম, বঙ্গশ্রী, শনিবারের চিঠি, প্রবাসী, পরিচয় প্রভৃতি প্রথম শ্রেণির পত্র-পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশ হতে থাকে। ঠিক সেসময় আবির্ভাব ঘটে আরেকজন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি পাঠকপ্রিয় ও সুবিখ্যাত উপন্যাস ‘শ্রীময়ী’র রচয়িতা শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।

একই নামে দুজন তারাশঙ্করের আবির্ভাব ঘটার ফলে সমস্যায় পড়েছিলেন গদ্যকার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্যা থেকে মুক্তি লাভের আশায় তিনি নামকরা এক পত্রিকায় নিজ ছবি সহযোগে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমি আপনাদের পরিচিত শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে অপর একজন শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে লেখকের আবির্ভাব হয়েছে, ‘শ্রীময়ী’ তাহারই অমর সৃষ্টি। পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে ‘শ্রীময়ী’ গ্রন্থের লেখক শ্রী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রী-যুক্তই থাকুন, আমি না হয় শ্রী-হীন হইলাম।” সেই থেকে তিনি নিজের নাম থেকে ‘শ্রী’ সম্বোধন বাদ দিয়ে দেন। এরপর থেকে সকলেই তার ‘শ্রী’হীন নামযুক্ত স্বাক্ষর দেখে বই কিনতেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //