বই ছাপার সংস্কৃতি কি হারিয়ে যাবে

‘প্রিন্ট ইজ ডেড।’
ইংরেজিতে মন্তব্য ‘বিজ্ঞানী’ হ্যারল্ড রামিসের, ঘোস্টবাস্টার্স (১৯৮৪) সিনেমায়। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনিও কি (ছাপা হওয়া লেখা) পড়তে পছন্দ করেন, তখন এ উত্তর করেন তিনি। বলেন, ‘ছাপাছাপির দিন শেষ।’

কিন্তু সত্যিই কি মুদ্রিত বইয়ের মৃত্যু ঘটতে চলেছে? 

ঘোস্টবাস্টার্স সিনেমার নামেই একটি অফিসের কেরানি, অ্যানি পটস বিজ্ঞানীকে পাল্টা বললেন, ‘কেউ কেউ মনে করে, আমি বুঝি বেশ বুদ্ধিমান। কিন্তু আমি মনে করি, অবসর কাটানোর জন্য এটা (বইপড়া) চমৎকার উপায়।’

আর কী কী কাজে আসে এই বই? প্রয়োজন মেটাতে কতদিনই বা টিকতে পারবে মানবপ্রজাতির এ উদ্ভাবন?

প্রাযুক্তিক এ বিশ্বে, ডিজিটাল মাধ্যমের যখন জয়জয়কার, তখন অর্ধসহস্র বছরের বেশি পুরনো যোগাযোগের মাধ্যম ছাপা বইয়ের কী ভবিষ্যৎ? 

আমি মনে করি, মুদ্রিত পুস্তকের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে নেই, এই শতকে তো বটেই না। কী কী কারণে সগৌরবে বই টিকে থাকবে, সেসবই মুদ্রণ ও প্রকাশনা এবং যোগাযোগ বিষয়ক কিছু তত্ত্বের, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থাবলিতে বিধৃত যুক্তিতর্কের আলোকে দেখার চেষ্টা করা যাক। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের একটি কোর্সে ‘অদূর ভবিষ্যতে ছাপা বইয়ের অস্তিত্ব কি হুমকির মুখে’ শিরোনামে একটি রচনাকর্ম প্রস্তুত করতে গিয়ে ছাপা বই নিয়ে এ ভাবনাগুলো আমাকে প্রথম এভাবে তাড়িত করে।

বই বলি কাকে
প্রাচীন মিশরীয়, মেসোপটেমীয় বা সুমেরীয় সভ্যতায় কিংবা চীন ও ভারতবর্ষে বইয়ের ধারণা পাওয়া যায়। যিশুখ্রিষ্টের জন্মের হাজার তিনেক বছর আগেই মানুষ মাটির ফলক, পাথরের খণ্ড, প্যাপিরাসে লিখত; বলা ভালো কথা ও বার্তা বিনিময় করত অর্থাৎ যোগাযোগ করত। তবে পার্চমেন্ট, বাঁশের চাটাই, তালপাতা, কাঠ- এসবে লিখলেও, সেসবের সংকলনকে বই বলে বিবেচনা করা হলেও কাগজে প্রথম মুদ্রিত বই পাওয়া গেছে অনেক পরে (নানাদেসিকান, ২০০৯)। 

কাগজ উদ্ভাবন হয়েছে ১০৫ সালে, চীনে। কাগজের প্রথম বইটির নাম হীরকসূত্র। ভগবান গৌতম বুদ্ধের উপদেশাবলি। বইটি আসলে কাঠের ব্লকে তৈরি সাড়ে ১৭ ফুট লম্বা কাগজের রোল। এটা প্রকাশ হয় ৮৬৮ সালের ১১ মে। সন্ধান মেলে ১৯০০ সালে, চীনের তুং হুয়াং শহরে। প্রকাশক ছিলেন ওয়াং জি। এতে ছিল ৬০০০ শব্দ। এটি সংস্কৃত ভাষার চীনা অনুবাদ। সংস্কৃত ভাষায় শিরোনাম ছিল ‘বজ্রছেদিকা প্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র’ (ও’ব্রায়ান, ২০১৯)। তবে ছাপা বইয়ের প্রচলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে পনেরো শতকে গুটেনবার্গের ছাপযন্ত্র মুভেবল টাইপ উদ্ভাবনের পর (ম্যাকলুহান, ১৯৬২)।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বইয়ের সংজ্ঞা দিয়েছে এভাবে: ‘বই হলো অপর্যাবৃত্ত মুদ্রিত কোনো প্রকাশনা যাতে প্রচ্ছদ পৃষ্ঠাগুলো বাদ দিয়ে অন্তত ৪৯টি পৃষ্ঠা থাকবে এবং যা প্রকাশিত হওয়ার পর জনগণের কাছে সহজলভ্য হবে।’ (ইউনেস্কো, ১৯৬৪)

‘মানুষের যুগ যুগ সঞ্চিত অভিজ্ঞতার মণি-মাণিক্য’ বন্দি হয়ে আছে বইয়ে বইয়ে (হক, ২০১৭)। বই হলো মানুষের ‘সমগ্র জীবন, জগৎ ও সভ্যতার অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য দলিল’ (মঈনউদ্দিন, ১৯৯৩)। কম্পিউটারে যে হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়, সেই তুলনায় ছাপা বই ‘হাজার গুণ নির্ভরযোগ্য’ একটি সংরক্ষণযন্ত্র (ইসলাম, ২০১৯)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক খান মাহবুব লিখেছেন: “বই তো বর্ণমালার আলোতে দেখা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বইয়ের আলো সংযোগ তৈরি করে মনে ও মননে। আর বইয়ের মেলা মানুষের ভেতর প্রগাঢ়ভাবে জিজ্ঞাসাকে জাগিয়ে তোলে, চিন্তার ক্যানভাসকে প্রসারিত করে।” (মাহবুব, ২০১৫) 

বই ও যোগাযোগ
বই যোগাযোগের একটা মাধ্যম এবং গণযোগাযোগের মাধ্যম। মানুষ পাঁচটি উদ্দেশ্যে গণমাধ্যম ব্যবহার করে- তথ্য জানা, মিল খোঁজা ও নিজেকে বোঝা, সাহায্য, প্রভাবিত হওয়া ও বিনোদন (ডেভিটো, ২০০৩)। 

ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো কিছু পড়ার একটা সুবিধার কথা অনেকেই বলে থাকে। এখানে পাঠক তাৎক্ষণিকভাবে লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে, পাঠ প্রতিক্রিয়া (ফিডব্যাক) জানাতে পারে। ছাপা বইয়ের বেলায় এটা অন্তত তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়। ফলে গণযোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বইয়ের একটা ব্যর্থতা এখানে ফুটে ওঠে। কিন্তু এই একটা কারণই বই মানুষের কাছে আরও বেশি কাক্সিক্ষত শিল্পকর্ম হয়ে থাকবে। কারণ তাৎক্ষণিক ফিডব্যাক অনেক সময় ভুল হওয়ার শঙ্কা থাকে, পক্ষপাতদুষ্ট ও যা-তা ধাঁচের হতে পারে। অপরদিকে বইয়ের বেলায় পাঠকের প্রতিক্রিয়া যেহেতু দেরিতে পৌঁছায়, এই যে বিলম্বিত ফিডব্যাক এটা বরং অধিকতর সঠিক, যৌক্তিক ও গঠনমূলক হয়। 

বিলম্ব ফিডব্যাক শিক্ষণকে আরও উন্নত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যখন অনির্দেশ্য ও অনিশ্চিত বিরতিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ মেলে, তখন শিক্ষার্থীর স্মৃতির সদ্ব্যবহার হয়, স্মৃতি আরও প্রখর হয় (রদ্রিগেজ, ২০১৫)। ফলে ছাপা বইয়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব প্রতিক্রিয়া বরং একটা বাড়তি বিশেষত্ব।

কদর ফুরাবে না কখনো
বই একটা উদ্ভাবন। ইসলাম (২০১৯) যেমন বলেছেন, ‘আগুন আর চাকা বাদ দিলে পৃথিবীতে আর কোনো প্রযুক্তিই বোধ হয় মানুষের সঙ্গে এত দীর্ঘ সময় বসবাস করেনি।’ 

তো, উদ্ভাবন কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এ নিয়ে একটি তত্ত্ব আছে। মার্কিন যোগাযোগ তাত্ত্বিক এভারেট এম রজার্স ১৯৬২ সালে তত্ত্বটা প্রবর্তন করেন। নাম উদ্ভাবন প্রসারণ তত্ত্ব। এ তত্ত্ব অনুসারে একটা উদ্ভাবনের পাঁচটি গুণ থাকতে হয়- এক. আপেক্ষিক সুবিধা, দুই. বিদ্যমান মূল্যবোধ ও দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, তিন. ব্যবহারে সহজতা, চার. যাচাইযোগ্যতা এবং পাঁচ. দৃশ্যমান ফল (রজার্স, ১৯৮৩)। বই থেকে প্রথম তিনটি গুণের প্রশ্নে ই-বইয়ের চেয়ে ছাপা বই বেশি এগিয়ে থাকবে বলে আমি মনে করি।

এ তত্ত্ব অনুসারে একটা উদ্ভাবন সমানভাবে সবার কাছে একই সময়ে পৌঁছে না। ই-বইকে আমরা যদি নতুন, শক্তিশালী একটা উদ্ভাবন ধরি, তা হলেও রজার্সের মতে, এ উদ্ভাবন সব মানুষের কাছে পৌঁছাতে অনেক বছর দেরি আছে। নতুন উদ্ভাবন গ্রহণের প্রশ্নে পাঁচ ধরনের মানুষ আছে। এদের মধ্যে শতকরা মাত্র ২.৫ ভাগ মানুষ নতুন কিছু উদ্ভাবন করে; মাত্র ১৩.৫ শতাংশ আগেভাগে উদ্ভাবনটি গ্রহণ করে; ৩৪ ভাগ দেখে শুনে তা গ্রহণ করে। বাকি পঞ্চাশ শতাংশ মানুষই নতুন উদ্ভাবন গ্রহণে পিছিয়ে থাকা সারির; এদের মধ্যে ১৬ ভাগ আবার কিছুতেই নতুন প্রযুক্তিকে নিতে চায় না (রজার্স, ১৯৮৩)। 

ফলে এ তত্ত্ব থেকেও বলা যায়, ই-বই সবার কাছে কোনোদিনই পৌঁছাবে না। কিংবা এভাবেও বলা যায়, এ কারণে চলতি শতকজুড়েই ছাপা বইয়ের বাজার ভালো থাকবে এবং মুদ্রিত বইয়ের উৎপাদন কমে গেলেও কদর কখনোই ফুরিয়ে যাবে না। 

বই পড়া ভারি মজা
পড়ার সময় যে সম্মোহন দশার সৃষ্টি হয়, ভিক্টর নেল তার ‘লস্ট ইন আ বুক : দ্য সাইকোলজি অব রিডিং ফর প্লেজার’ গ্রন্থে এটাকে ‘লুডিক রিডিং’ (পঠনাচ্ছন্নতা) বলেছেন। এমন সম্মোহ দশায় কখনোই পাঠককে নিয়ে যেতে পারবে না ডিজিটাল বই (ইসলাম, ২০১৯)। 

তা ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের হাতে কি ডিজিটাল বই তুলে দেওয়া হবে? সম্ভবত না। ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর কোটি কোটি শিশুর পাঠ্যপুস্তক ছাপা হবে, এ ধারা চলতেই থাকবে বলে মনে হয়। ফলে ছাপা বইয়ের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী ঠেকছে না মোটেও।

কাগজের বই ও ‘অরা’
ওয়াল্টার বেঞ্জামিন বলেছেন, ‘একটা শিল্পকর্মের অনন্যতা ঐতিহ্যের সুতোর বন্ধন দ্বারা অবিচ্ছিন্ন। এ প্রথা নিজেই চির জীবন্ত’ (বেঞ্জামিন, ১৯৩৬)। ছাপা বই বিশ^জুড়েই মানুষের প্রামাণ্য প্রথা, অকৃত্রিম ঐতিহ্য। এটা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছে, এই শিল্পকর্মের সৌন্দর্য, নান্দনিকতা ও অনন্যতা অন্য কোনো বিকল্প মাধ্যমে মিলবে না। 

‘বইয়ের মৃত্যু নাকি পুনর্জন্ম?’ শীর্ষক লেখায় মাসরুর আরেফিন বইয়ের এই বিশেষ নান্দনিক ক্ষমতার (অরা) দারুণ একটা চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। বই পড়ার আনন্দ কেমন বোঝাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন: 

‘নাকের কাছে নিয়ে কাগজের গন্ধ শোঁকার আনন্দ, যে গন্ধ শুধু কাগজ থেকে নয়, আসে কালি থেকেও; পাতা ওল্টানোর ‘সাঁৎ’ শব্দ শোনার আনন্দ, যা আবার উল্টানো হয় হাতের আঙুল জিবে ভিজিয়ে...; পৃষ্ঠা থেকে চোখের ভেতরে ছাপা অক্ষরগুলো গেঁথে নেওয়ার আনন্দ; পড়ার শব্দের প্রতিধ্বনি কানে বাজার আমোদ; খসখসে বা নরম কাগজে আঙুলের ছোঁয়া লাগার আনন্দ; আর নাকে বইয়ের পাতার গন্ধের পাশাপাশি কার্ডবোর্ড অথবা লেদারের প্রচ্ছদ বা বাঁধাইয়ের গন্ধ পৌঁছার অবিস্মরণীয় পুলক।’ (মাহবুব, ২০১৮)

ছাপা বই সম্পর্কে হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন : ‘চমৎকার প্রচ্ছদে কাগজে ছাপা একটি বই হাতে নিয়ে যে-সুখ, তা কখনো ইলেকট্রনিক মাধ্যম দিতে পারবে না। বই আমি হাতে নিয়ে উল্টোই, গন্ধ শুঁকি, কয়েক পাতা পড়ি, রেখে দিই, আবার পড়ি- এই সুখ দিতে পারে শুধু সে মুদ্রিত বস্তুটি, যার নাম বই।’ (আজাদ, ২০০৬)

ছাপা বইয়ের সংস্কৃতি
বই দিয়ে যোগাযোগের যে প্রচলন, একদিন তা অচল হয়ে যাবেই। কারণ যোগাযোগের এখনকার মাধ্যমগুলো দ্রুততম, উন্নত এবং আরও সুবিধাজনক। বই সেসব সমাজকে বদলেছে যেসব সমাজে সবচেয়ে ভালো যোগাযোগ মাধ্যম ছিল বই। এখন তো ইন্টারনেট রয়েছে যা দিয়ে দ্রুত বহু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় (গমেজ, ২০০৮)। কিন্তু বইয়ের নিয়তি যদি ‘নিশ্চিত বিদায়’ই হয়, তাহলে ই-বই পড়ার সহায়ক যন্ত্রগুলো কেন মার খেল- এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যায় না। 

নব্বইয়ের দশকে অনেকে ভেবেছিল, কাগজের বইয়ের জায়গা কেড়ে নেবে ই-বই। ১৯৯৩ সালে পিটার জেমস তার উপন্যাস ‘হোস্ট’ প্রকাশ করেছিলেন দুটি ফ্লপি ডিস্কে। উপন্যাসের মৃত্যু হলো বলে রব উঠেছিল তখন। আর এই ক্ষোভে একজন সাংবাদিক প্রতিবাদ জানাতে পিসি (পার্সোনাল কম্পিউটার) ও একটি জেনারেটর নিয়ে চলে গিয়েছিলেন সৈকতে, ‘হোস্ট’ দেখবেন বলে (নুয়ার, ২০১৬)। 

মুদ্রক, প্রকাশক ও বই বিক্রেতা- সবাইকে পাশ কাটিয়ে স্টিভেন কিং তার উপন্যাস ‘দ্য প্ল্যান্ট’ প্রকাশ করেন তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে, ২০০০ সালে। কিন্তু তিনি দেখলেন তার আগের ছাপা হওয়া উপন্যাসগুলো যে হারে বিক্রি হয়েছে, ওয়েবসাইট থেকে সে তুলনায় ই-বইটি নামিয়ে পড়া পাঠকের সংখ্যা অনেক কম (কোভাক, ২০০৮)। 

আমরা আসলে মুদ্রিত বই ব্যবহার করছি সাংস্কৃতিক কারণে। কোভাক যেমন বলেছেন : 

‘প্রাযুক্তিক পরিবর্তন যতই চিত্তাকর্ষক বলে মনে হোক না কেন, তা সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনি কাঠামোয় নির্ধারিত হয়- হয় গৃহীত নয় প্রত্যাখ্যাত হবে। ... যেসব কারণে আমরা এখনও কাগজের বই ব্যবহার করছি, এগুলোর সঙ্গে প্রযুক্তির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং সাংস্কৃতিক বিষয়টাই মুখ্য।’ (কোভাক, ২০০৮)

মানুষের পঠন মস্তিষ্ক 
শিশু যে পড়তে শেখে, অনেকে ধরেই নিয়েছে, এ এমন আর কী, এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু ‘প্রাউস্ট অ্যান্ড দ্য স্কুইড : দ্য স্টোরি অ্যান্ড সায়েন্স অব দ্য রিডিং ব্রেইন’ গ্রন্থে লেখক ম্যারিয়ান ওলফ বলছেন, শেখার সক্ষমতা অর্জন করতে গিয়ে আমাদের মস্তিষ্কের যে বিবর্তন হয়েছে, সেখানে পড়তে পারার ক্ষমতা এমনি এমনি আমরা পাইনি। ভালো ও মন্দ, দু রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে মানুষকে, বিশেষত শিশুদের (ওলফ, ২০০৮)। 

কাগজের বই যতটা মনোযোগ দিয়ে পড়া যায় ডিজিটাল মাধ্যমে তা সম্ভব হয় না। ডিজিটাল মাধ্যমে মনোযোগের দৈর্ঘ্য (অ্যাটেনশন স্প্যান) কমে যায় (আলম, ২০১৯)। মানুষের আবির্ভাব যত আগে, সেই তুলনায় পাঠ্যভ্যাসের ইতিহাস যেন এই সেদিনের। মাত্র ছয়-সাত হাজার বছর আগে পড়তে তথা লেখার অর্থ তৈরি করতে শিখেছে মানুষের মস্তিষ্ক। এমন ‘পঠন মস্তিষ্ক’ (রিডিং ব্রেইন) মানুষের একটা বিশেষত্ব বটে। পড়ার সময় মানুষের মস্তিষ্কে কগনিটিভ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হয়। কিন্তু ছবি দেখা ও শব্দ শোনার বেলায় তা হয় না (আলম, ২০১৯)। পঠন ও ভাষা বিষয়ক মার্কিন গবেষক মেরিয়ান ওলফের গবেষণা মতে, মানব মস্তিষ্ক ছাপা লেখা পড়ার সময় যেভাবে সাড়া দেয়, ডিজিটাল পঠনের বেলায় উল্টোভাবে প্রভাব ফেলতে পারে (নুয়ার, ২০১৬)। 

বিল হিল ‘পঠন যোগ্যতার সাধারণ নিয়ম’ (জেনারেল থিওরি অব রিডেবিলিটি) বলে একটা ধারণা দিয়েছেন। বিবর্তনবাদী জীববিদ্যার দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি মানব মস্তিষ্ককে ব্যাখ্যা করেছেন। গুটেনবার্গের ছাপাখানা উদ্ভাবনের পর সাড়ে পাঁচশ বছর ধরে মানব মস্তিষ্ক ছাপা বইয়ের আকার ও সজ্জার সঙ্গে এমনভাবে উপযোগী করে নিয়েছে যে, পঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে এটা চমৎকারভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। স্বাচ্ছন্দ্যে পড়তে পারাই হলো পঠনক্রিয়ার প্রধান শর্ত। ডিজিটাল বই পঠনক্রিয়ার জন্য ততটা উপযোগী নয় (ইসলাম, ২০১৯)। 

প্রজন্ম জেড ও কাগজের বই
যাদের জন্ম ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে তাদের বলা হয় মিলেনিয়াল বা ‘জেনারেশন ওয়াই’ বা ‘প্রজন্ম ওয়াই’। আর ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের বলা হচ্ছে ‘জেনারেশন জেড’ বা ‘জেড প্রজন্ম’। এই প্রজন্ম অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় এবং তারা রাজনৈতিক দৃশ্যপটের ভবিষ্যৎ কী হবে, এটা তারাই নির্ধারণ করবে (ডিমোক, ২০১৯)।

ডিজিটাল প্রথম বিশ্বেও, বিশেষত, জেড প্রজন্মের কাছে ছাপা বা মুদ্রণ-মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিল, খাবার বিষয়ক স্বল্প পুঁজির সাময়িকীগুলো মুদ্রিত প্রকাশনার ওপর জোর দিচ্ছে। উল্লেখ করার বিষয় হলো, এসব ম্যাগাজিনের যারা প্রতিষ্ঠাতা তাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের কোঠায় (সামির, ২০১৯)।

ডিজিটাল এই যুগে তো যে কেউ ‘প্রকাশক’ হয়ে যাচ্ছে, ছড়াচ্ছে ভুয়া খবর। ফলে এদের সূত্রের সত্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পাঠকমনে প্রশ্ন উঠছে। বিশ^াসযোগ্য তথ্যের সরবরাহকারী হিসেবে জেড প্রজন্ম বরং মুদ্রিত প্রকাশনাকে বিশ্বাস করছে (সামির, ২০১৯)। কানাডীয় সাংবাদিক ডেভিড স্যাক্স ‘দ্য রিভেঞ্জ অব অ্যানালগ : রিয়াল থিংস অ্যান্ড হোয়াই দে ম্যাটার’ নামে একটি বই লিখেছেন। ২০১৬ সালে বইটি প্রকাশ হয়। তিনি লিখেছেন: 

‘ওরা (জেড প্রজন্ম) ডিজিটালকে বিশেষ হিসেবে দেখে না। সবপাশে বাতাস যেমন, ডিজিটাল বিষয়টা ওদের কাছে তেমনি। যখন কেউ অ্যানালগ ফরম্যাটে কোনো কিছু তাদের সামনে উপস্থাপন করে, তারা ওটাকে অনন্য হিসেবে দেখে। তারা এটাকে সেকেলে নয় বরং মূল্যবান হিসেবে বিবেচনা করে।’ (স্যাক্স, ২০১৬)

ডিজিটাল প্রতিষ্ঠানগুলোও মুদ্রণে ঝুঁকছে যে জন্য
এমনকি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ‘গ্রো’ নামে মুদ্রিত ত্রৈমাসিক প্রকাশ করে ২০১৮ সালের জুনে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে যখন তথ্য বেহাতের অভিযোগ উঠেছিল, তখন তারা প্রিন্ট মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিল। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নামি দৈনিক ও সাময়িকীগুলোয় বিজ্ঞাপন দিয়ে তারা প্রচার করেছিল ‘ভুয়া খবর আমাদের বন্ধু নয়’। এ বিষয়ে ব্রিটিশ প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ ফেডারেশনের (বিপিআইএফ) তৎকালীন বিপণন পরিচালক অ্যামি হাচিনসন বলেন, ‘সাধারণের কাছে দুঃখ প্রকাশে ছাপামাধ্যম বেছে নেওয়া মানে, ফেসবুক বলতে চাচ্ছে, ছাপামাধ্যমে সেই বার্তাই প্রকাশিত হয় যা আমলে নিতেই হবে’ (স্টুয়ার্ড-টার্নার, ২০১৮)।

শুধু ফেসবুক নয়, অ্যামাজন, গুগল, এয়ারবিএনবি, উবার- এরকম বহু ব্র্যান্ড মুদ্রিত সাময়িকী প্রকাশ করছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। কেননা অফলাইনে অডিয়েন্সকে আরও বেশি নির্ভরযোগ্য অভিজ্ঞতা উপহার দিতে পারে প্রিন্ট। আর ডিজিটাল বাড়াতে পারে বিক্রি। গুগল ও অ্যামাজনের মতো কোম্পানিগুলো, যাদের ব্যবসাই মূলত ডিজিটাল নির্ভর, যখন প্রিন্ট ও ডাকচিঠির দিকেও নজর দিচ্ছে, এ থেকে এটা স্পষ্ট বোঝা যায় যে, এতে বিনিয়োগের বিনিময় (রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট) বেশ আকর্ষণীয় (সামির, ২০১৯)। 

বই হয়ে উঠবে শিল্পকর্ম, তবু বইশূন্য হবে না পৃথিবী
ভিয়েতনাম যুদ্ধ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের দর্শন ও যুদ্ধযজ্ঞ নিয়ে ‘হার্টস অ্যান্ড মাইন্ডস’ নামে একটা প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ১৯৭৪ সালে প্রকাশ হয়। প্রামাণ্যটির শিরোনাম নেওয়া হয়েছিল ওই যুদ্ধ নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ডেমোক্র্যাট নেতা লিন্ডন জনসনের একটা মন্তব্য থেকে, ‘চূড়ান্ত বিজয় প্রকৃতপক্ষে নির্ভর করছে, সেখানে (ভিয়েতনামে) যারা বাস করে তাদের ওপর।’ (ডিকিনসন, ২০০৯)

জ্যারন লানিয়ার তার ‘হু ওনস দ্য ফিউচার’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘হার্টস অ্যান্ড মাইন্ডস’ প্রামাণ্যটিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একজন সদস্য যুক্তি দেখান যে, একটি গ্রামকে রক্ষা করার জন্যই গ্রামটিকে ধ্বংস করা দরকার ছিল। অস্তিত্বের প্রশ্নে ছাপা বই ও ই-বুকের মধ্যকার কথিত প্রতিযোগিতা নিয়ে তুলনা টানতে লানিয়ার এ প্রসঙ্গ টেনেছেন। তার ধারণা, ছাপা বই মানুষের জীবন ও ভাবনার প্রবাহে যেভাবে জায়গা করে নিয়েছে, ই-বুক সেই প্রতিমান অর্জন করতে নাও পারে। তিনি মনে করেন, বই কেবল একটা শিল্পকর্ম নয়, বই হলো মানুষের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পরম্পরা এবং উপলব্ধ স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্বের এক সংশ্লেষ। সেজন্য ওই সামরিক সদস্যের যুদ্ধ-মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে, লানিয়ার বলছেন, ‘সংরক্ষণ কিংবা ডিজিটাইজড করার লক্ষ্যে ছাপা বইয়ের সংস্কৃতিকে আমরা আদৌ ধ্বংস করব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’ (লানিয়ার, ২০১৩)

টমাস আলভা এডিসন ১৮৭৯ সালে আলোকবাতি উদ্ভাবন করেছিলেন। এর পরের বছরগুলোয় নিশ্চয়ই বলা হতো, ‘মোমবাতির পতন আর বাত্তির উত্থান’। তাদের লেখা ‘দ্য ফল অব অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড দ্য রাইজ অব পিআর’ গ্রন্থের নামের সঙ্গে মিল রেখে এমন মজা করেছেন আল রিজ ও লরা রিজ। তো, বৈদ্যুতিক বাতির উদ্ভাবনে কি মোমবাতির পতন সত্যিই হয়েছে? তারা লিখেছেন : 

‘প্রতি রাতে আমেরিকায় লাখো লাখো মোমবাতি পোড়ে। টেবিলে মোমবাতি ছাড়া কোনো রোমান্টিক ডিনার সম্পূর্ণ হয় না। একেকটা মোমবাতি বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ ডলারে, আলোকবাতির চেয়ে দামে বেশি। বৈদ্যুতিক বাতি যত আলো ছড়ায়, সেই তুলনা টেনে কিন্তু মোমবাতির মূল্য বোঝা যাবে না। আখা আর পালতোলা নৌকার মতো, মোমবাতি আসলে এর কার্যকারিতা হারিয়েছে কিন্তু রূপ নিয়েছে শিল্পে।’ (রিজ ও রিজ, ২০০৪)

একই ঘটনা ঘটবে বইয়ের বেলাতেও। মানুষ এক সময় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের তথ্যভোক্তা হিসেবে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে, এটা ঠিক। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওই তথ্য ছাপা বইয়েও পেতে চাইবে। মার্কিন লেখক জেফ গমেজ তার ‘প্রিন্ট ইজ ডেড’ গ্রন্থে বলেছেন, হতে পারে, পালতোলা নৌকা বা মোমবাতির মতো বইও সেদিন আসল কার্যকারিতা হারাবে, কিন্তু বহু মানুষের জীবনে ছাপা বই তখন শিল্পকর্ম হয়ে উঠবে। গমেজ মনে করেন : 

‘আরও কয়েক দশক এবং পরবর্তী শতাব্দীতেও মানুষ ছাপা বই পড়তে চাইবে এবং পড়বেও। ঠিক যেমন এডিসন আলোকবাতি উদ্ভাবনের পরেও শতবর্ষ ধরে মোমবাতি পরিবারে একটি সাধারণ পণ্য হিসেবেই ব্যবহৃত হয়েছিল। তবে বই ক্রমেই সেকেলে বস্তু, প্রাচীন নিদর্শন হয়ে উঠবে। সুতরাং মুদ্রণের মৃত্যু বা বিলুপ্ত হওয়া নিয়ে যতই ভয়ানক ভবিষ্যদ্বাণী করা হোক না কেন, বই কিন্তু কখনই পুরোপুরি উধাও হয়ে যাবে না।’ (গমেজ, ২০০৮)

১৯৯৭ সালে দার্শনিক জাক দেরিদা কলকাতা বইমেলার উদ্বোধনী ভাষণে বলেছিলেন, ‘কাগজ এবং বইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বস্তুগুলো অন্যান্য প্রকাশমাধ্যমের সঙ্গে সহ-অবস্থানের জন্য লড়লেও এই মডেল আজ দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। সুতরাং বই অদৃশ্য হয়ে যাবে না।’ (মাহবুব, ২০১৮) 

দ্য ফিউচার অব হিস্ট্রি গ্রন্থে ইতিহাসবিদ জন লুকাকস প্রসঙ্গক্রমে মন্তব্য করেছেন, ‘এখন থেকে কয়েক শতাব্দী পরও (ছাপা) বই শতভাগ অদৃশ্য হয়ে যাবে বলে আদৌ মনে হয় না। আমি তো ভাবলে এটাই বুঝতে পারি যে, তখনও বইয়ের পাঠক থাকবে, তা হোক যতই কমসংখ্যক, হাতেগোনা’ (লুকাকস, ২০১১)।

মার্কিন লেখক অ্যাডাম স্টার্নবার্গ খাবার খাওয়ার সঙ্গে বই পড়ার একটা তুলনা করেছেন। তার ভাষায় : 

‘সুন্দর একটা রেস্টুরেন্টে বসে ভারী স্বাদের একটা ভোজ যেমন, ছাপা বই অনেকটা তেমন। আর বেজমেন্টে দাঁড়িয়ে হাতে একটা প্যাকেটে রাখা সেই একই খাবার খেতে যেমন লাগবে, ই-বই তেমনই।’ (স্টার্নবার্গ, ২০১৫) স্টার্নবার্গ মনে করেন, এই একটা কারণে ছাপা বই ৫০০ বছর ধরে টিকে আছে। এবং ‘সম্ভবত বই আরও ৫০০ বছর টিকে থাকবে।’ 

ভাষাবিজ্ঞানী মেরিয়ান ওলফ বলেছেন, ‘বাস্তবতা হলো, চিরচেনা বইয়ের বিলুপ্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। তবে আমার মতো অনেকের আশাবাদী হওয়ার উপযুক্ত কারণ আছে যে, পাঠকদের কল্যাণে অমন আশঙ্কা সত্য হবে না’ (নুয়ার, ২০১৬)। 

আমিও মনে করি, সময় ফুরাবে, ছাপা বইয়ের চাহিদা ফুরাবে না। পাঠক সমাজ থেকে মুছে যাবে না মুদ্রিত পুস্তক। কদর হারাবে না কাগজের বই। মিশরের বিবলিওথিকা আলেকজান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারে ২০০৩ সালে বইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের লেখা একটা প্রবন্ধ পাঠ করেছিলেন ইতালীয় দার্শনিক উমবার্তো একো। তিনি মন্তব্য টানেন, ‘ছাপা বই অপরিহার্য হিসেবেই টিকে থাকবে।’ 

তথ্যঋণ 
সি সামির (২০১৯, অক্টোবর ১৭)। দ্য পাওয়ার অব প্রিন্ট: লেশনস ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড’স বিগেস্ট ব্র্যান্ডস। রয়টার্স কমিউনিটি। https://ww.wreuterscommunity.com/topics/audience-development/the-power-of-print-lessons-from-the-worlds-biggest-brands/| প্রবেশ : ২২ অক্টোবর, ২০১৯। 

সি সামির (২০১৯, সেপ্টেম্বর ২৪)। ইফ মিলেনিয়ালস কিলড প্রিন্ট, উইল জেন জেড রিভাইভ ইট? রয়টার্স কমিউনিটি। https://ww.wreuterscommunity.com/topics/audience-development/millennials-killed-print-will-gen-y-revive-it/। প্রবেশ : ২২ অক্টোবর, ২০১৯। 

এম আলম (২০১৯, সেপ্টেম্বর ৭)। বই না পড়ার অশনিসংকেত। প্রথম আলো, পৃ. ১১।

এম ইসলাম, (২০১৯)। আধুনিক ও ডিজিটাল যুগে পুস্তক প্রকাশনা। পুস্তক প্রকাশনা ও সম্পাদনা প্রসঙ্গ (পৃ. ১১৪-১২০)। ঢাকা : দ্যু প্রকাশন। 

বি ও’ব্রায়ান (২০১৯, জুন ২৫)। দ্য ডায়ামন্ড সূত্র : আ জুয়েল অব মহাজন বুদ্ধইজম। লার্ন রেলিজিওনস। https://ww.wlearnreligions.com/the-diamond-sutra-450100। প্রবেশ : ২৮ অক্টোবর ২০১৯।

এম ডিমোক (২০১৯, জানুয়ারি ১৭)। ডিফাইনিং জেনারেশনন : হোয়ার মিলেনিয়ালস এন্ড অ্যান্ড জেনারেশন জেড বিগিনস। পিউ রিসার্চ সেন্টার। https://ww.wpewresearch.org/fact-tank/2019/01/17/where-millennials-end-and-generation-y-begins/। প্রবেশ : ২২ অক্টোবর, ২০১৯। 

কে মাহবুব (সম্পা.). (২০১৮)। ই-বুক এবং কাগজের বই। গ্রন্থচিন্তন (পৃ. ২৯১-২৯৪)। ঢাকা : কথাপ্রকাশ। 

কে মাহবুব, (সম্পা.). (২০১৮)। বইয়ের মৃত্যু নাকি পুনর্জন্ম? গ্রন্থচিন্তন (পৃ. ৪৮৭-৪৯১)। ঢাকা : কথাপ্রকাশ। 

আর স্টুয়ার্ড-টার্নার (২০১৮, সেপ্টেম্বর ৩)। দ্য পাওয়ার অব প্রিন্ট ইজ নট লস্ট অন দ্য নেট’স বিগেস্ট ব্র্যান্ডস। প্রিন্ট উইক। https://ww.wprintweek.com/print-week/briefing/1165441/the-power-of-print-is-not-lost-on-the-net-s-biggest-brands। প্রবেশ : ২২ অক্টোবর, ২০১৯। 

এস হক (২০১৭)। বই পড়া ভারী মজা। ঢাকা : বাংলা একাডেমি।

আর নুয়ার (২০১৬, জানুয়ারি ২৫)। আর পেপার বুকস রিয়ালি ডিসঅ্যাপিয়ারিং? বিবিসি ফিউচার। https://ww.wbbc.com/future/article/20160124-are-paper-books-really-disappearing। প্রবেশ : ১৬ অক্টোবর, ২০১৯। 

ডি স্যাক্স (২০১৬)। দ্য রিভেঞ্জ অব অ্যানালগ : রিয়াল থিংস অ্যান্ড হোয়াই দে ম্যাটার। নিউইয়র্ক : পাবলিক অ্যাফেয়ার্স।

কে মাহবুব (২০১৫)। বইমেলা ও বই সংস্কৃতি। ঢাকা : জাগৃতি প্রকাশনী। 

এ স্টার্নবার্গ (২০১৫, অক্টোবর ১৪)। হোয়াই দ্য প্রিন্টেড বুক উইল লাস্ট অ্যানাদার ৫০০ ইয়ার্স। লিটারেরি হাব। https://lithub.com/why-the-printed-book-will-last-another-500-years/| প্রবেশ : ১ নভেম্বর ২০১৯। 

টি রদ্রিগেজ (২০১৫, মে ১)। ওয়েট ফর ইট : ডিলেইড ফিডব্যাক ক্যান এনহ্যানস লার্নিং। সায়েন্টিফিক আমেরিকান। https://ww.wscientificamerican.com/article/wait-for-it-delayed-feedback-can-enhance-learning/। প্রবেশ : ২৪ অক্টোবর, ২০১৯। 

জে লানিয়ার (২০১৩)। দ্য ফেট অব বুকস। হু ওনস দ্য ফিউচার (পৃ. ২৭১-২৭৬)। নিউইয়র্ক : সিমন অ্যান্ড সুস্টার। 

জে লুকাকস (২০১১)। দ্য ফিউচার অব হিস্ট্রি। নিউ হ্যাভেন : ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস। 

ই ডিকিনসন (২০০৯, আগস্ট ২২)। আ ব্রাইট শাইনিং স্লোগান। ফরেন পলিসি। https://foreignpolicy.com/2009/08/22/a-bright-shining-slogan/| প্রবেশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯। 

এ ই নানাদেসিকান (২০০৯)। দ্য রাইটিং রিভোলিউশন : কিউনিফর্ম টু দি ইন্টারনেট। ওয়েস্ট সাসেক্স : উইলি-ব্ল্যাকওয়েল। 

এম ওলফ (২০০৮)। প্রাউস্ট অ্যান্ড দ্য স্কুইড : দ্য স্টোরি অ্যান্ড সায়েন্স অব দ্য রিডিং ব্রেইন। লন্ডন : আইকন। 

এম কোভাক (২০০৮)। নেভার মাইন্ড দি ওয়েব: হেয়ার কামস দ্য বুক। অক্সফোর্ড : শানডোস পাবলিশিং। 

জে গমেজ (২০০৮)। প্রিন্ট ইজ ডেড : বুকস ইন আওয়ার ডিজিটাল এইজ। নিউইয়র্ক : ম্যাকমিলান।

এইচ আজাদ (২০০৬)। আমাদের বইমেলা। ঢাকা : আগামী প্রকাশনী।

এ রিজ ও এল রিজ (২০০৪)। দ্য ফল অব অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড দ্য রাইজ অফপিআর। নিউইয়র্ক : হার্পার বিজনেস। 

ইউ একো (২০০৩, নভেম্বর ১)। ভেজিটাল অ্যান্ড মিনারেল মেমোরি : দ্য ফিউচার অব বুকস। বিবলিওথিকা আলেকজান্দ্রিয়া। https://ww.wbibalex.org/attachments/english/Vegetal_and_Mineral_Memory.pdf। প্রবেশ : ৩০ অক্টোবর, ২০১৯।

জে এ ডেভিটো (২০০৩)। হিউম্যান কমিউনিকেশন : দ্য বেসিক কোর্স। বস্টন : অ্যালিন অ্যান্ড বেকন। 

জি মঈনউদ্দিন (১৯৯৩)। বই। ঢাকা : বাংলা একাডেমি।

ই এ রজার্স (১৯৮৩)। ডিফিউশন অব ইনোভেশনস। নিউইয়র্ক : দ্য ফ্রি প্রেস। 

ইউনেস্কো (১৯৬৪, নভেম্বর ১৯)। রিমকেন্ডেশন কনসার্নিং দি ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অফস্ট্যাটিস্টিক্স রিলেটিং টু বুক প্রোডাকশন অ্যান্ড পেরিওডিকালস। ইউনেস্কো। http://portal.unesco.org/en/ev.php-URL_ID=13068&URL_DO=DO_TOPIC&URL_SECTION=201.html। প্রবেশ : ১৯ অক্টোবর ২০১৯। 

এম ম্যাকলুহান (১৯৬২)। দ্য গুটেনবার্গ গ্যালাক্সি। টরন্টো : ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো প্রেস। 

ডব্লিউ বেঞ্জামিন (১৯৩৬)। দ্য ওয়ার্ক অব আর্ট ইন দি এইজ অব মেকানিকাল রিপ্রোডাকশন। মার্ক্সিস্ট। https://ww.wmarxists.org/reference/subject/philosophy/works/ge/benjamin.htm। প্রবেশ : ২৯ অক্টোবর, ২০১৯। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //